লঙ্কান দর্শকদের এ কেমন আচরণ!
প্রেমাদাসায় গতকাল রোববার নিদাহাস কাপের ফাইনাল ম্যাচে কার বিপক্ষে খেলেছে বাংলাদেশ? গ্যালারী ভর্তি ৯০ ভাগ মানুষ যে শ্রীলঙ্কার ছিল সেটি অন্তত নিশ্চিত। বাকি ১০ ভাগ ভারত আর বাংলাদেশের বলা যায়।
গ্যালারিতে থাকা শ্রীলঙ্কার দর্শকেরা যেসব করলো সেটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশি ক্রিকেটার এবং সমর্থকদের মর্মাহত করেছে। ম্যাচ শেষে যখন সৌম্য-রুবেলরা চোখ মুছতে মুছতে মাঠ ছাড়ছে তখন প্রতিপক্ষ দল বিজয়ের হাসি নিয়ে মাঠ চক্কর দিচ্ছে।
ঠিক তখনই দেখা যায় অদ্ভুত এক কান্ড। এক শ্রীলঙ্কান তাদেরই পতাকা হাতে সমর্থন দিচ্ছে ভারতকে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। গোটা ম্যাচ জুড়ে ছিল বাংলাদেশ দলকে দুয়োধ্বনি।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: ছবি নয়, আজ খেলা হবে জোনাকিতে
--------------------------------------------------------
হঠাৎ এমন বদলে যাওয়া কেন লঙ্কানদের। যে শ্রীলঙ্কাকে বাংলাদেশ বন্ধু ভাবতো। তারাই কিনা শত্রুর মত আচরণ করলো। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীর সময়ও গ্যালারী থেকে যেসব কথা শোনা যাচ্ছিল সেসব বলার মত না। এরপর সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকেও তারা বাজে মন্তব্য ছুড়েন। পানির বোতল ছুড়ে মারে মাঠের ভেতর।
সাকিব অবশ্য এসবে কান দেননি তবে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আগেও তাদের দুজন মাঠে আমাদের সাথে এমন করতো। যতবারই শ্রীলঙ্কায় খেলতে এসেছি তবারই মাঠে এসবের শিকার হয়েছি। এ আর নতুন কি। এই দুজনের নাম শুনলে অবাক না হয়ে উপায় নেই। এরা হচ্ছেন দুই লঙ্কান গ্রেট কুমার সাঙ্গাকার আর মাহেলা জয়াবর্ধনে।
ব্যতিক্রম থাকলেন না টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনও। লঙ্কানদের আচরণে তার মনে হয়েছে, ১৬ মার্চের ম্যাচে তাদের সাথে মাঠে সাকিবের আবেগপ্রবন হয়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে মাহমুদুল্লাহর ছক্কায় ফাইনালে ওঠায় লঙ্কানরা এমন আচরণ দেখিয়েছেন।
সুজন বলেন, দর্শকতো আমাদের বিপক্ষে থাকবে এটা খুবই স্বাভাবিক। কালকে স্বাগতিক দেশ ছিল না। কিন্তু আমাদের বিপক্ষে এতো সমর্থন ছিলো মানে বাংলাদেশের হয়ে পুরো হতাশই আমি। যদিও আমাদের বাংলাদেশি সমর্থকও ছিল বেশ কিছু। সবার মাঝে তাদের আওয়াজটা খুবই কম হয়েছে। তবে এটা খেলারই অংশ। হয়তো আমরা শ্রীলঙ্কার শত্রু ছিলাম, আমাদের কারণে তারা ফাইনালে উঠতে পারেনি। এই আক্রোশ থেকে তারা বাংলাদেশের বিপক্ষে সমর্থন দিয়েছে।
সুজন আরো বলেন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬ মার্চের ওই ম্যাচে ‘নো’ বল ইস্যুতে সাকিবের আবেগপ্রবণ হওয়া নিয়েও, আমি একদমই বলবো না যে প্রতিবাদ করাটা ওইভাবে ঠিক ছিল। কারণ দিন শেষে এটা খেলা। ক্রিকেট খেলা। সাকিব যেটা করেছে পুরো আবেগি হয়ে করেছে হয়তো। আর আমরা নিজেরাও দেখছিলাম ‘নো’ বল ডাকা হয়েছে তারপরও ‘নো’ বল কেন দেয়া হবে না। আম্পায়াররাও জানেন। আম্পায়াররা যে ভুল করেছে সেটা আপনারাও জানেন।
২২ গজের লড়াইয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে এমনটি হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের গণমাধ্যম গত কয়েকদিন ধরে যেসব করছে তা রীতিমত শত্রুর মতো আচরণ। যা অন্তত শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে কাম্য নয়।
লঙ্কানদের স্বাধীনতার ৭০ বছর উপলক্ষ্যে নিদাহাস ত্রিদেশীয় সিরিজে ভারতের সাথে আমন্ত্রণ পেয়েছিল বাংলাদেশও। সিরিজে বাংলাদেশের সাথে পরপর দু’ম্যাচ হেরে ফাইনাল খেলতে না পারায় এমন আচরণ সেটি বলাই যায়।
শুধু হার নয়, লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে সাকিব-নুরুল হাসানদের আচরণেও শ্রীলঙ্কানরা খেপেছে বাংলাদেশের উপর।
আরও পড়ুন:
এমআর/এএ
মন্তব্য করুন