‘বিশ্বকাপে দেখা যাবে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ’
ছয়টি ওয়ানডে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠলেও, প্রতিবারই বাংলাদেশ দলকে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। এর মধ্যে দুবার এশিয়া কাপে আর গেলো বছর নিদাহাস ট্রফি জিততে জিততে হেরে গেছেন টাইগাররা। সেই ক্ষতের দাগ এখন দগদগে ভক্তদের হৃদয়ে। তাই আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়টা মরুর বুকে পানি সিঞ্চনের মতো। টুর্নামেন্ট জয়ের খরা কাটানোর পাশাপাশি জয়ের অভ্যাস গড়তেও এই জয়টা ভিত্তি মূল হয়ে সাহস যোগাবে সাকিব-তামিমসহ আগত প্রজন্মকে।
এ জয়ের মাহাত্মটা আরও বড় হয়ে উঠেছে অন্য কারণে। যতটা টুর্নামেন্ট জয়ের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ দলের, তারচেয়ে বেশি তাগিদ ছিল বিশ্বকাপের জন্য দলকে গুছিয়ে নেয়া। আর এ জয়ের মাধ্যমে সেই গুছিয়ে নেবার কাজটা কী দারুণভাবেই না করলো মাশরাফি বাহিনী।
টানা চারটি ওয়ানডে জয়ে অপরাজিত থেকে টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ! জয়টা সবসময় আনন্দের উপলক্ষ্য হলেও, ক্রিকেটীয় মানদণ্ড নির্ধারিত হয় জয়ের ধরণে।
আর সেখানেই তৃপ্তি খুঁজে পাচ্ছেন সাবেক টাইগার ওপেনার জাভেদ ওমর বেলিম।
‘আয়ারল্যান্ডে যাবার আগে সবার একটা চিন্তা ছিল হাই-স্কোরিং পিচে কেমন করে বাংলাদেশ সেটা নিয়ে। কিন্তু এই জয়গুলো সে চিন্তা দূর করে দিয়েছে। ২৯০, ৩০০ রান সহজেই চেজ করতে পেরেছে দল। এতে বিশ্বকাপের আগে যে আত্মবিশ্বাস পেলো খেলোয়াড়রা, সেটা অনেক বড় সম্বল হবে ইংল্যান্ডে’।
টপ অর্ডার নিয়মিত রান পেয়েছে। প্রতিটা ম্যাচেই ভাল শুরু এনে দিয়েছে তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের উদ্বোধনী জুটি। এমনকি একম্যাচে সুযোগ পেয়ে নিজের প্রস্তুতির জানান দিয়েছেন লিটন কুমার দাসও।
মিডল অর্ডারে মুশফিক, সাকিব ও রিয়াদও ছিলেন ধারাবাহিক। এটা যে কোন দলের জন্য বড় পাওয়া মনে করেন বেলিম।
তবে স্লগ ওভারে রান তুলতে লোয়ার মিডল অর্ডারের ভূমিকা বেশি। এ সিরিজে সেটা হয়নি। মূলত টপ অর্ডার পারফর্ম করায়, সুযোগই আসেনি লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যান-অলরাউন্ডারদের।
এতে চিন্তিত না বাংলাদেশ দলের হয়ে ৪০ টেস্ট ও ৫৯ ওয়ানডে খেলা এই ওপেনার। তার মতে, ‘টপ অর্ডার রান করলে, নীচের ব্যাটসম্যানরাও রান পান। ক্রিকেটের সৌন্দর্যটাই এখানে। তাই আয়ারল্যান্ডে লোয়ার মিডল অর্ডার সুযোগ না পেলেও, চিন্তার কিছু নেই। সাব্বিরসহ যারা আছেন তারা পরীক্ষিত’।
আয়ারল্যান্ডের মৃত উইকেট বড় চ্যালেঞ্জ ছিল টাইগার বোলারদের জন্য। সেখানে মিশ্র অবস্থাকেই একম্যাচে ভাল করেছেন তো পরের ম্যাচে খারাপ।
কোনো ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে অলআউট করতে পারেননি মুস্তাফিজ-সাইফউদ্দিনরা। এখানেও বোলারদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন জাভেদ ওমর বেলিম। তিনি বলেন, ‘সেখানকার উইকেটে যেকোনো দলকে অলআউট করা কঠিন। সেখানে আমাদের বোলিং শক্তি অনুযায়ী আরও কঠিন হয়ে যায় ব্যাপারটি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তিনশ’র নীচে আটকে ফেলাটাও কম না। এখানে বোলারদের কৃতিত্ব স্বীকার করতেই হবে’।
একই সঙ্গে ইংল্যান্ডে ভাল করতে হলে বোলারদের আরও উন্নতি করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। বেলিম বলেন, ‘পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সিরিজে প্রতিটি ম্যাচে সাড়ে তিনশ’র কাছাকাছি রান হচ্ছে। সেটা আবার চেজও হয়ে যাচ্ছে। তাই ম্যাচ জিততে সেখানে শুধু ব্যাটসম্যানদের রান করলেই হবে না। বোলারদের ভূমিকার রাখতে হবে। রান নিয়ন্ত্রণ ও ব্রেক-থ্রু আনতে লাইন, লেন্থ ও পেসকে ভালভাবে কাজে লাগাতে হবে বাংলাদেশি বোলারদের’।
বিশ্বকাপে উচ্চাশা রাখতে টাইগার ভক্তদের সাবধানী হবার পরামর্শ জাবেদ ওমর বেলিম। বললেন, ইংল্যান্ডের চঞ্চল কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে, বুদ্ধিদীপ্ত ও পরিশ্রমই প্রধান হাতিয়ার হবে স্টিভ রোডসের শিষ্যদের।
ওয়াই
মন্তব্য করুন