এক নজরে ক্রিকেটারদের ১৩ দফা
খেলোয়াড়দের এই আন্দোলন কারও বিরুদ্ধে নয়, ক্রিকেটের স্বার্থেই বলে উল্লেখ করেছেন। পেশাদার ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ক্রিকেটারদের পক্ষে ১৩টি দাবি তুলে ধরেন তিনি।
বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত হন জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেটাররা।
এসময় ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, বিকেলে বিসিবির কাছে ডাক ও মেইল যোগে ক্রিকেটারদের দাবিগুলো চিঠির মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ১৩টা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে।
এর আগে এই হোটেলেই বৈঠকে বসেন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েস নাঈম ইসলাম, ফরহাদ রেজাসহ আন্দোলনরত ক্রিকেটাররা। সংবাদ সম্মলনেও উপস্থিত ছিলেন তারা।
এর আগে গেল সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) ১১ দফা দাবির কথা জানিয়ে ধর্মঘটের ডাক দেন জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেটাররা।
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব জানিয়েদেন, দাবি মানা না পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম থেকে দূরে থাকবেন তারা।
মঙ্গলবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আন্দোলনকে ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করলে, বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
এরপর সব দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয় বিসিবির পক্ষ থেকে। এরপর সন্ধ্যায় ক্রিকেটাররা জড়ো হন গুলশানে।
দেখে নিন ক্রিকেটারদের ১৩ দফা দাবি
প্রথম দাবি, ক্রিকেটার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) দায়িত্বে থাকাদের পদত্যাগ করতে হবে। ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে জড়িত তাই পদত্যাগ করতে হবে। কোনও ব্যক্তিগত কারণ নেই। তাদের অবস্থান গত কারণে পদত্যাগ করবে। প্রতিবছর পেশাদার ক্রিকেটাররা নির্বাচন করবে।
১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডে প্রথমবারের মতো প্রফেশনাল ক্রিকেটারস অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশেও ক্রিকেটারদের স্বার্থে এমন প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে। সংঘঠনে শুধু খেলোয়াড়রাই থাকতে পারবে।
দ্বিতীয় দাবি, ঢাকা প্রিমিয়ারসহ অন্যান্য লিগ আগের মতো ফিরিয়ে নিতে হবে। বর্তমানে ডাফ্রট প্রথা রয়েছে তা বিলুপ্ত করতে হবে।
তৃতীয় দাবি, সময় হাতে নেই তাই এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) পরিবর্তন সম্ভব না। তবে ক্রিকেটাররা চায় আগামী বছর আগের মতো ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্টে ফিরে যাক বিপিএল। জনপ্রিয় এই লিগে বিদেশি খেলেয়াড়দের সঙ্গে বেতন বৈষ্যম্য কমাতে হবে। গেল তিন আসরে সবচেয়ে সেরা খেলোয়াড় বাংলাদেশেই হয়েছে।
চতুর্থ দাবি, প্রথম শ্রেণীর প্রতি ম্যাচের খরচ ১ লাখ টাকা দিতে হবে।
---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: খুব দ্রুত সময়ে বিসিবি যাচ্ছি: সাকিব
---------------------------------------------------------------
পঞ্চম দাবি, ৩০ জন খেলোয়াড়কে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রাখতে হবে।
সপ্তম দাবি, কোচ ও মাঠ কর্মীদের বেতন বাড়াতে হবে। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মতো কাঠামো করতে হবে।
অষ্টম দাবি, বিপিএল ছাড়াও দেশে টি-টোয়েন্টি লিগ চালু করতে হবে।
নবম দাবি, ঘরোয়া ক্রিকেটের ক্যালেন্ডার তৈরি করতে হবে। সেটা একইরকমভাবে থাকতে হবে। কোনরকম ভঙ্গ করা যাবেনা।
দশম দাবি, খেলোয়াড়দের পাওয়ান সময় মতো দিতে হবে। শুধু বিপিএলই নয়, সব ক্লাবের ক্ষেত্রেই।
একাদশ, দুইটার বেশি ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতে যে বাধা রয়েছে, তা শিথিল করতে হবে।
১২তম দাবি, কয়েক বছরের মধ্যে ভারতের পর ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হবে বাংলাদেশে। ক্রিকেট থেকে অর্জনকৃত লভ্যাংস্য ক্রিকেটারদের দিতে হবে।
১৩তম দাবি, বাংলাদেশ ক্রিকেটের নারী ক্রিকেটারদেরও একই রকম নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো নারীদের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
ওয়াই
মন্তব্য করুন