নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার কাচঁপুর বিসিক শিল্পনগরী থেকে রপ্তানিমুখী পোশাক চুরি ও পাচারকারী চক্রের আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রিমিয়াম বেভারেজ ফুড অ্যান্ড ড্রিংকিং ওয়াটার লিমিটেড কারখানায় অভিযান চালিয়ে পোশাক পাচারের চেষ্টার সময় তাদেরকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় কোটি টাকা মূল্যের রপ্তানিযোগ্য চোরাই পোশাক ভর্তি একটি কাভার্ডভ্যান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, লিটন, দুলাল, লোকমান চৌকিদার, আলাউদ্দিন, শাকিল, মোস্তফা, মিনহাজ আহম্মেদ ও রুবেল। তাদের অধিকাংশ সদস্যের বাড়ি ভোলা জেলায়।
দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে র্যাব-১১ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক (সিও) লেফটেনেন্ট কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম সংবাদ সম্মেলনে জানান, একটি সংঘবদ্ধ চক্র প্রায় সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ আশপাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানার মালামাল ভর্তি গাড়ি ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে এগুলো অবৈধভাবে পাচার করে থাকে। বিভিন্নজনের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে র্যা বের গোয়েন্দা দল গত এক মাস যাবত চক্রটির উপর নজরদারি করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোরে র্যা ব জানতে পারে কাঁচপুর বিসিক থেকে বিপুল পরিমান রপ্তানিযোগ্য তৈরি পোশাকের একটি কাভার্ডভ্যান লুট ও পাচারের কাজ চলছে।
পরে র্যা ব সেখানে অভিযান চালিয়ে চক্রটির আট সদস্যকে গ্রেপ্তারকৃত কোটি টাকার পোশাকভর্তি কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করে। তবে র্যাবের অভিযানের সময় এই চক্রের আরও সাত-আটজন সদস্য পালিয়ে যায়।
র্যাব-১১ অধিনায়ক আরও জানান, সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার অপটিমাম ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড কারখানায় উৎপাদিত পোশাকভর্তি কাভার্ডভ্যানটি বিদেশে শিপমেন্টের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। যাত্রাপথে কাভার্ডভ্যানের চালক ও হেলপারের যোগসাজশে কাঁচপুর বিসিক এলাকায় প্রিমিয়াম বেভারেজ ফুড অ্যান্ড ড্রিংকিং ওয়াটার লিমিটেড কারখানার ভেতর কাভার্ডভ্যানটি ঢুকিয়ে সেখানকার কিছু অসাধু কর্মচারীসহ সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র চুরির চেষ্টা করেছিল বলে র্যা বের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে। চোরচক্রটি রপ্তানিজাত পোশাকভর্তি কাভার্ডভ্যান তাদের সুবিধামত স্থানে নিয়ে শিপমেন্টের জন্য প্রস্তুত করা পোশাকভর্তি কার্টুন খুলে অভিনব কায়দায় প্রতিটি কার্টুন হতে ১০ থেকে ২০টি করে পোশাক চুরি করে আত্মসাৎ করে আসছে। তাদের এ সকল চুরির ফলে গার্মেন্টস মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো এবং চাহিদা ও অর্ডার অনুযায়ী শিপমেন্ট দিতে না পারায় বিদেশি ক্রেতাদের কাছে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতো। চক্রটির সঙ্গে প্রিমিয়াম বেভারেজ ফুড অ্যান্ড ড্রিংকিং ওয়াটার লিমিটেড নামের কারখানার কিছু অসৎ কর্মচারী ও পরিবহন চালক হেলপার জড়িত রয়েছে।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীনসহ জড়িত অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
জেবি