দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় ধানের খেত থেকে মাছ চুরির অভিযোগে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবককে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে ঘোড়াঘাট থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে সুমনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম। এর আগে শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার ভাতছালা গ্রামে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবককে মারধরের একটি কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ২৫ বছর বয়সী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবক সুমন মিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি ছয়ঘট্টি বেলওয়া গ্রামের লতিফ মিয়ার ছেলে।
নির্যাতনের শিকার সুমনের পরিবারের দেওয়া তথ্য এবং ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলার ভাতছালা গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে শাহারুল ইসলাম (৪৫) ও একই গ্রামের ইজ্জত আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর (৩২) এবং তাঁতিপাড়া-বেলওয়া গ্রামের মৃত নুরু মিয়ার ছেলে ফারাজ আলী (৫৫) বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সুমনকে একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে লাঠি ও হাত দিয়ে পর্যায়ক্রমে নির্যাতন করছে।
সাইফুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছোট মাছ ধরার জাল নিয়ে জমিতে টাঙ্গিয়ে দিয়ে আসে আমার ছোট ভাই সুমন। শুক্রবার ভোরে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে সে জমিতে যায় জাল থেকে মাছ নিয়ে আসতে। সেই সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জমি থেকে তাদের মাছ ধরার খোলসানী (বাঁশ দিয়ে তৈরি মাছ ধরার বিশেষ ফাঁদ) থেকে মাছ চুরি করার মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার ভাইকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন। আমরা খুবই গরীব। দিন এনে দিন খাই। আমার ছোট ভাই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং ছোট বেলায় প্যারালাইসিস হওয়ায় বর্তমানে সে বাম পায়ে শক্তি পায় না। পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য নির্যাতন করা হয়েছে।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির জানান, শনিবার রাতে সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পালশা ইউনিয়ন বিটের বিট কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) দুলু মিয়াকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।