কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) অভিযানে বাদশা মিয়া নামে এক ইউপি সদস্যকে আটকের জেরে সন্ধ্যায় সাড়ে ৬ টা থেকে সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখে তার অনুসারীরা। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা করে তারা। হামলায় দু’জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এদিকে, অবরোধকারীরা পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে হোয়াইক্যংয়ের নয়াবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটলেও রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত কক্সবাজার টেকনাফের মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিল ইউপি সদস্যের অনুসারীরা। এসময় ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত যানবাহন আটকে পড়েছিল। দীর্ঘ যানজটে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছিল।
মো. মনির ও সৈয়দ হোসেন, সেন্টমার্টিন পরিবহন ও হেরিটেজ পরিবহনের যাত্রী। তারা বলেন, সৌদি আরব যাওয়ার জন্য সকালে ঢাকা থেকে তাদের ফ্লাইট। তারা ৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলে হেঁটে ৫/৬ কিলোমিটার পার হয়ে সিএনজি করে কক্সবাজারে উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। বাকি যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে ওঠে।
জানা গেছে, আটক বাদশা মিয়া হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। তিনি ও তার তিন ভাই মাদকের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
ডিএনসি জানায়, বাদশার কাছ থেকে প্রায় ৩০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান শেষে ফেরার পথে তাদের ওপর ও পাশের সড়ক দিয়ে যাবার পথে র্যাবের একটি টহল দলের ওপর হামলা চালান বাদশা মিয়ার অনুসারীরা। এরপর থেকে সড়কে আগুন দিয়ে ও কাভার্ড ভ্যান দ্বারা সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন তারা। তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হোয়াইক্যং ফাঁড়ির একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুঁড়ে সড়ক অবরোধকারীরা। এতে দুইজন পুলিশের সদস্য আহত হন।
হোয়াইক্যং ফাঁড়ি পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিদর্শক (এস আই) জায়েদ হাসান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে র্যাব-পুলিশ। এসময় দু’জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) জানায়, সন্ধ্যায় মেম্বারের বাড়ি থেকে আনুমানিক ৩০ হাজার ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয়। ফেরার পথে হামলার শিকার হয় অভিযানিক দল। মাদক কারবারিরা ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে র্যাবের টহল গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। ইতোমধ্যে ওই মেম্বারকে নিয়ে তাদের টিম টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজার র্যাব-১৫’র এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনার দু'ঘন্টা পরে প্রতিদিনের মতো টহলে থাকাকালীন তার গাড়ীর ওপর হামলা করে অবরোধকারীরা। কিন্তু অভিযানটি ছিল ডিএনসির। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলের দিকে অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে রওনা হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য বাদশাহকে ডিএনসির লোকজন ইয়াবাসহ আটক করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অনুসারীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। এসময় দু’জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
