ঢাকাশনিবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ২২ চৈত্র ১৪৩১

ছাত্রী-শিক্ষকের ফোনালাপ ফাঁস, বিদ্যালয়ে তালা দিলেন এলাকাবাসী

রংপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩ , ০৯:৫৬ পিএম


loading/img
ছবি : আরটিভি

রংপুরের বদরগঞ্জে চম্পাতলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর বিদ্যালয়ে তালা দিয়েছে এলাকাবাসী। এ কারণে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে একের পর এক নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০১১ সালে তাকে প্রথমবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর আরও কয়েকবার তিনি নারী কেলেঙ্কারির কারণে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। প্রভাব খাটিয়ে তিনি চাকরিতে পুনর্বহাল হন।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক তার প্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে আপত্তিকর কথা বলেন। ৩ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ফোনালাপে তিনি ওই ছাত্রীকে বলেন, ‘তুমি কি একাই আছ। আমি তোমাকে খুব লাইক করি। আমি যতদিন বেঁচে আছি, তোমার সবকিছু দেখব। তুমি জামাকাপড় নেবে না। আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে তুমি জামাকাপড় কিনিও। আগামীকাল তোমার পরীক্ষা শুরু হবে, সকাল ১০টায়। তুমি সকাল ৯টায় সরাসরি আমার অফিসে আসিও। এসব কথা আবার কাউকে বলিও না।’

বুধবার রাতে প্রধান শিক্ষকের ওই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর এলাকার লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বৃহস্পতিবার সকালে কয়েকশ’ নারী-পুরুষ বিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ করেন। এ সময় প্রত্যেক নারীর হাতে ঝাড়ু ছিল। তারা প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবির পাশাপাশি বিদ্যালয়ে তালা ঝুঁলিয়ে দেন। এ কারণে বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবারের সদস্য তাপস চন্দ্র রায় বলেন, প্রধান শিক্ষকের এ ধরণের অসামাজিক আচরণ ও কার্যকলাপে বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে এমন অনেক অভিযোগ উঠেছিল। আমরা চাই ওই শিক্ষককে অপসারণ করা হোক। নইলে একের পর এক এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে।  

ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন, বারবার এসব ঘটনায় স্কুলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। পরের বার আমরা ছাত্রছাত্রী ভর্তি করাতে পারব কিনা সন্দেহ। এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে কোনো অভিভাবক ছেলে-মেয়েদের এ বিদ্যালয়ে পাঠাতে চাইবেন না।

বিক্ষোভের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) কাশপিয়া তাশরিন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম শহিদুল ইসলাম ও বদরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান। এসিল্যান্ড বিক্ষুব্ধ লোকজনকে শান্ত হয়ে বিদ্যালয়ের তালা খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান। তবে এতে এলাকার কেউ সায় দেয়নি।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়কে রক্ষার জন্য ওই প্রধান শিক্ষককে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার বিরুদ্ধে যা হচ্ছে তা সবই ষড়যন্ত্রমূলক। আমি প্রধান শিক্ষক হিসেবে গরীব মেধাবী অসহায় ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়তা করতে পারি। অথচ আমাকে হেনস্তা করার জন্যই এটি করা হচ্ছে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |