বাগেরহাট সদরের দেওয়ানবাটি গ্রামে গত সাত দিন ধরে নিখোঁজ থাকা এক গৃহবধূর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে ওই গ্রামে নিহতের বাবার বাড়ির বাথরুমের সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ব্যক্তি ওই গ্রামের গফুর মোল্লার মেয়ে ফিরোজা বেগম রুমা (৩৮)। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি বাগেরহাট শহরের নাগেরহাট বাজার এলাকার আজিজ মোল্লার ছেলে আলী হোসেন মোল্লা (২৯)।
নিহতের স্বজন সূত্রে গেছে, গত ২৯ জুলাই কোনো একসময় পারিবারিক কলহের জেরে পরিকল্পিতভাবে স্ত্রীকে হত্যা করে। পরে মরদেহ বাথরুমের সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে ফেলে গুম করে মোল্লা। কিন্তু হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা দিতে গত ৩ আগস্ট থানায় গিয়ে স্ত্রী ফিরোজাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি করে ঘাতক নিজে। এরপর আত্মীয়দের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন নাটকীয় ঘটনার মাধ্যমে স্ত্রীকে খোঁজার নাটক করতে থাকে।
এদিকে শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে নিহত ফিরোজা বেগমের খোঁজে তার প্রথম-পক্ষের মেয়ে পূর্ণিমা ও তার স্বামী রায়হান ব্যাপারীসহ বাগেরহাটে যান ও এক পর্যায়ে বাথরুমের পাশে পচা কিছুর গন্ধ পায়। এ সময় পূর্ণিমা ও তার স্বামী সেপটিক ট্যাংকের স্ল্যাব খুললে তার ভেতরে একটি বস্তার মধ্যে তার মায়ের মুখ দেখতে পেয়ে ৯৯৯ ফোন দেন। তখন অভিযুক্ত ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পূর্ণিমার স্বামী রায়হান আলী মোল্লাকে ধরে ফেলেন। পরে পুলিশ এসে মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে।
নিহতের বাবা গফুর মোল্লা জানান, আমার মেয়েকে হত্যা ও মরদেহ গুম করার পরও মোল্লা প্রতিদিন এই বাড়িতে এসে রাতে থাকতো। সে নিজ হাতে রান্না করেও খেয়েছে এখানে।
নিহত ফিরোজার প্রথম-পক্ষের মেয়ে পূর্ণিমা জানান, মা নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে আজকে বাড়িতে এসে সেপটিক ট্যাংকের পাশে নতুন মাটি দেখি। সেখান থেকে পচা গন্ধ বের হচ্ছে দেখে আমার সন্দেহ হলে ঢাকনা তুলে মায়ের মরদেহ দেখতে পাই। তখনই ৯৯৯ ফোন করি।
বাগেরহাট সদর মডেল থানার ওসি কে.এম. আজিজুল ইসলাম জানান, পারিবারিক কলহের জেরে ফিরোজাকে হত্যা করে তার স্বামী। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে। গত ৩ আগস্ট থানায় এসে স্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জিডি করে গিয়েছিল ঘাতক।