ঢাকাশনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

মেহেরপুরে আদম ব্যাপারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

মেহেরপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১১:৪৬ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

লিবিয়ার মানব পাচারের দায়ে মাসুদ রানা নামে এক আদম ব্যাপারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন মেহেরপুর মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুাল। 

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুালের বিজ্ঞ বিচারক মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. তহিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। দীর্ঘদিন আত্মগোপনে রয়েছে দণ্ডিত মাসুদ রানা।

রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১৪ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। মেহেরপুর জেলায় মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের এটি প্রথম রায়। 

বিজ্ঞাপন

দণ্ডিত মাসুদ রানা যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী নতুন বাজারের নজরুল ইসলামের ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের আকবর আলী মীরের ছেলে সইবুর রহমানকে লিবিয়ায় ভালো বেতনে কাজের লোভ দেখায় দণ্ডিত মাসুদ রানাসহ তার সঙ্গীয় কয়েকজন কথিত দালাল। ছেলে ও পরিবারের উন্নত ভবিষ্যৎ চিন্তা করে নজরুল ইসলাম ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা দেয় মাসুদ রানাকে। ২০১৪ সালের ১ জুলাই সইবুরকে তার বাড়ি থেকে লিবিয়ায় পাঠানোর উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে যায় মাসুদ রানা। এর পর থেকেই ছেলের সঙ্গে আর কোন যোগাযোগ করতে পারেনি আকবর আলী মীর। নানাভাবে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এবং মাসুদ রানার কাছ থেকে কোনো সদুত্তোর না পেয়ে ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মেহেরপুর মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা আর্জি করেন আকবর আলী। 

বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মুজিবনগর থানাকে মামলা দায়ের পূর্বক তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, পুলিশের তদন্তে উঠে আসে মাসুদ রানার মানব পাচার চক্রের সম্পৃক্ততা। লিবিয়ার পাচারের কিছুদিন পর মারা যায়। অবৈধভাবে লিবিয়ায় পাঠানোর কারণে তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনাও সম্ভব হয়না।

বিজ্ঞ আদালতে মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে মাসুদ রানা দোষী হিসেবে সাব্যস্ত হয়। মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ এর ৬(২) ধারার অপরাধে মাসুদ রানাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। একই সাথে ১৪ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও দুই বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। আত্মগোপনে থাকা আসামি মাসুদ রানার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুযায়ী গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দের জন্যও আদেশ হয়।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন একেএম আসাদুজ্জামান।

এদিকে মেহেরপুর জেলায় মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাদি আকবর আলীর পরিবারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পরিবার ও স্বজনদের ভালো রাখতে গিয়ে অনেকেই ভিটেমাটি বিক্রি করে যাচ্ছেন বিদেশে। এদের বেশির ভাগ মানুষ প্রতিনিয়তই কথিত আদম ব্যাপারী বা দালালদের খপ্পরে পড়ে পাচার হলেও তা পূর্বে অনুমান করতে পারেন না। ফলে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন গরিব মানুষের একটি অংশ। তাই এই রায় যুগান্তকারী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ রায়ের মাধ্যমে আদম ব্যাপারী ও কথিত দালালদের দৌরাত্ম কমবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা। 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |