বান্দরবানে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলে দুইজন নিহতের ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী ও আশপাশের এলাকার লোকজন গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জলপাইতলী গ্রামসহ আশপাশের আরও দুটি গ্রাম থেকে অন্তত ৫০টি পরিবার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।
ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে দুজন নিহত হওয়ার পর সবার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই অনেকেই বাড়িতে থাকতে চাইছেন না। এ জন্য অনেকেই আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল হোসনে আরা নামের এক বাসিন্দার রান্নাঘরে এসে পড়েছে। এতে দুজন নিহত হন। এরপর গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ভয় কাজ করছে। অনেকে নিরাপদে থাকতে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।
এর আগে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বান্দরবানে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা নিহত হন। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নারীর নাম হুসনে আরা (৫০)। তিনি জলপাইতলি এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। এ ছাড়া নিহত রোহিঙ্গা তাদের বাড়ির কাজের লোক। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
জানা গেছে, মিয়ানমার জান্তার ছোড়া মর্টারশেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে বাদশা মিয়ার বসতবাড়িতে এসে পড়ে বিস্ফোরণ ঘটে। এতেই ওই নারীসহ তাদের বাড়ির কাজের লোক নিহত হন।
বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গত সপ্তাহ থেকে আরাকান আর্মি ও দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সংঘর্ষ ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। দু’পক্ষের ছোড়া গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়ছে বাংলাদেশের ভেতরে।
সংঘর্ষ থেকে প্রাণ বাঁচাতে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের বিজিপির ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছেন। গত রোববার ভোর থেকে বিজিপির সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া শুরু করেন। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত এলাকা দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।