• ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
logo

রাসেলস ভাইপার কাণ্ডে বিব্রত আ.লীগ নেতা, পুরস্কার ঘোষণা প্রত্যাহার

আরটিভি নিউজ

  ২৩ জুন ২০২৪, ১৮:৫৫
রাসেলস ভাইপার কাণ্ডে বিব্রত আ.লীগ নেতা, পুরস্কার ঘোষণা প্রত্যাহার
ফাইল ছবি

জীবিত হোক বা মৃত, কোনো প্রকার রাসেলস ভাইপার ধরে আনার জন্য পুরস্কার দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক।

রোববার (২৩ জুন) দুপুরে নিজের ফেসবুক থেকে এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট দিয়ে এমনটি জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক।

পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহারের বিষয়টি জানিয়ে সকলকে রাসেলস ভাইপার সাপ মারা বা ধরার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান এ আওয়ামী লীগ নেতা।

শামীম হক তার ফেসবুক পোস্টে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, জীবিত বা মৃত কোনো প্রকার রাসেলস ভাইপারের জন্য কোনো পুরস্কার নেই। বর্তমানে রাসেল ভাইপার একটি আলোচিত বিষয়, পাশাপাশি জনগণের জন্য হুমকিস্বরূপ। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক বিধায় যেকোনো পুরস্কার বা কৌতূহলবশত এ সাপ নিয়ে অতি উৎসাহী হবেন না। জীবিত বা মৃত কোনো প্রকার রাসেলস ভাইপারের জন্য কোনো পুরস্কার নেই।

তিনি আরও বলেন, সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করুন অথবা নিকটস্থ বন বিভাগের অফিসকে অবহিত করুন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকেলে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি সভার আলোচনায় শামীম হক ফরিদপুরে রাসেল ভাইপার সাপ মারতে পারলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন।

এরপর পরই প্রথমে রাসেলস ভাইপার সাপ মারতে পারলে এবং পরে জীবিত ধরতে পারলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে; এমন ঘোষণার পর বিষয়টি নিয়ে হুলস্থুল কাণ্ড বেধে যায়। পুরস্কার পেতে বিভিন্ন জায়গায় সাপ মারার উৎসাহ ছড়িয়ে পড়ে। সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের দুর্গম চরের ৩৮ দাগ এলাকায় শুক্রবার (২১ জুন) সকাল ১১টার দিকে জমিতে ঘাস কাটার সময় একটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পেয়ে সেটি লাঠি দিয়ে বাড়ি মেরে মেরে ফেলেন ওই গ্রামের মুরাদ মোল্লা (৪৩) নামে একজন কৃষক। এরপর তিনি সাপটি পদ্মা পাড়ি দিয়ে সিএন্ডবি ঘাটে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন আবু ফকিরের অফিসে নিয়ে আসেন। আবু ফকির তখন সাংবাদিকদের জানান, মুরাদ মোল্লাকে সভাপতি ঘোষিত পুরস্কার দেওয়া হবে।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের এ পুরস্কারের ঘোষণার পরে বন বিভাগের পক্ষ থেকে এটি আইনসিদ্ধ নয় বলে সমালোচনা করা হয়। এরপর অবশ্য রাসেল ভাইপার সাপ মেরে ফেললে পুরস্কার দেওয়ার পূর্ব ঘোষণা থেকে সরে এসে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, মেরে ফেললে নয়, জীবিত অবস্থায় রাসেলস ভাইপার ধরতে পারলে পুরস্কার দেওয়া হবে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ আলী আশরাফ পিয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফরিদপুর সদর উপজেলাধীন কেউ যদি নিজেকে রক্ষাকারী পোশাক সম্বলিত হয়ে এবং সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বনপূর্বক জনস্বার্থে রাসেলস ভাইপার সাপটি জীবিত অবস্থায় ধরতে পারেন, তবে তাকে ৫০ হাজার টাকায় পুরস্কৃত করা হবে। এরপর আবার জীবিত সাপ ধরার উৎসাহ সৃষ্টি হয়।

পরদিন শনিবার (২২ জুন) সকালে পদ্মার চর থেকে একটি জীবিত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরেন রেজাউল নামে এক যুবক। শনিবার সন্ধ্যায় পাতিলের মধ্যে একটি জীবিত সাপ নিয়ে পুরস্কারের আশায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে হাজির হন সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের কাদেরের বাজার এলাকার ওই যুবক। তবে রোববার দুপুরে ফরিদপুরের বনবিভাগের অফিসে সাপটি নিয়ে গেলে তাকে সাপসহ ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া বলেন, ‘এ ধরনের পুরস্কার ঘোষণা করাটাইতো অবৈধ। মানুষকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা। ওই কৃষকের উচিত হবে যেখান থেকে সাপটি ধরেছে ওই স্থানে ছেড়ে দেওয়া।’

এরপর পরই রোববার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহারের বিষয়টি জানিয়ে সকলকে রাসেলস ভাইপার সাপ মারা বা ধরার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গৃহবধূকে কামড় দিলো রাসেলস ভাইপার, অতঃপর...  
ছয় মাসে সাপের দংশনে ৩৮ জনের মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
হাইমচরে দুটি রাসেলস ভাইপার মারল এলাকাবাসী
রাসেলস ভাইপার ভেবে অজগর আটক