ঢাকাসোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

এসএসসি পরীক্ষার আগেই বিয়ের পিঁড়িতে ২১৩ কিশোরী

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫ , ১০:১৪ এএম


loading/img
প্রতীকী ছবি

এসএসসি পরীক্ষার আগেই ঝিনাইদহে ২১৩ জন কিশোরী বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে। ফলে ফরম পূরণ করেও তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিস থেকে পাঠানো জেলার এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষার এক জরিপ তথ্যে বাল্য বিয়ের এ চিত্র উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

জেলা শিক্ষা অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় বালকের অনুপস্থিতি ছিল ৬৬ জন ও বালিকা রয়েছে ২০৪ জন। এই পরীক্ষায় ২০৪ জন বালিকার মধ্যে অনুপস্থিত ১৭৪ জন কিশোরীর বিয়ে হয়ে গেছে। এছাড়া দাখিল পরীক্ষায় ৩৩ জন ও ভোকেশনাল পরীক্ষায় ৬ জন ছাত্রীর বিয়ের তথ্য পেয়েছে শিক্ষা বিভাগ।

বাল্য বিয়ে নিয়ে কাজ করা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বলছেন, ঝিনাইদহে বাল্য বিয়ে ঠেকানো দুরুহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে গোপনে কিশোরীদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে সমাজে তালাক ও বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবছর এসএসসি পরীক্ষার আগেই ঝিনাইদহে ২১৩ ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। এসএসসির ফরম পূরণ করেও তারা পরীক্ষার হলে ছিল গরহাজির। এ নিয়ে প্রশাসনের তোলপাড় শুরু হয়। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির তৎপরতা থাকলেও বিয়ে ঠেকাতে তারা হিমশিম খাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা রুরাল ডেভলপমেন্ট সেন্টারের নির্বাহী প্রধান আব্দুর রহমান জানান, এসএসসি পরীক্ষার পর বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ কমিটির এক সভায় নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কমে যাওয়ার বিষয়টি তিনি তুলেছিলেন। ওই সভায় জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিস ৬ উপজেলায় জরিপ চালিয়ে বাল্য বিয়ের এই সত্যতা পান। তিনি বলেন বাল্য বিয়ে রোধ করতে না পারা আমাদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়।

ঝিনাইদহ জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সি ফিরোজা সুলতানা বলেন, এই বিয়ের বিষয়ে প্রশাসনের বিন্দুমাত্র গাফিলতি নেই। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটিতে যারা আছেন সবাই খুবই আন্তরিক। কিন্তু গোপনে ও স্থান পরিবর্তন করে বিয়ে দেওয়ার কারণে এ সব খবর আমরা জানতে পারিনি। 

তিনি বলেন, তরপরও এই ব্যর্থতা তো আমাদেরই।

বিজ্ঞাপন

ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান বলেন, বালিকাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে গরহাজিরের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা গেছে জেলায় ২১৩ জন শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়ে গেছে। যা খুবই উদ্বেগজনক। 

বিজ্ঞাপন

জেলা শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা মোছা. আফরোজা পারভীন বলেন, জন্মনিবন্ধনে বয়স বাড়িয়ে গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর তখন আমরা জানতে পারি। 

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও কিশোরীকে গোপনে স্বামীর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ২৫৭ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী বিয়ের পিঁড়িতে বসে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কিছুটা কমেছে।

আরটিভি/এমকে/এআর

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |