মেহেরপুরে ইউনিয়ন কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. কামরুল হাসানসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে সদস্য সচিবের গাড়ি ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল।
এ ঘটনায় আহত কামরুল হাসান গ্রুপের ৬ নেতাকর্মী। আহতরা হলেন, মিজান মেনন, চঞ্চল, মুকুল, শাকিল, শহিদুল, মিন্টু, সানোয়ার হোসেন। হামলার ব্যাপারে বিএনপির এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. কামরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার (২৩ মে) বেলা ১১টার দিকে আমঝুপি গ্রামের গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমঝুপি ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সাড়ে ১১টার দিকে সদস্য সচিবের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা সম্মেলনে অংশ নিতে মেহেরপুর শহর থেকে রওনা দেন।
আমঝুপি বাজারের সড়ক দিয়ে গন্ধরাজপুরে যেতে চাইলে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামের নেতাকর্মীরা গাড়িবহরে বাধা দেন। ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনীর ও পুলিশের বেশ কয়েকটি দল। এক পর্যায়য় তাদের ভিন্ন পথে যাওয়ার কথা বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে ওই গাড়িবহরটি আমঝুপি সামিউল টাওয়ারের সামনের গলি দিয়ে গন্ধরাজপুরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাইফুল ইসলামপক্ষের নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় কয়েকটি মোটরসাইকেল জেলা বিএনপির সদস্য সবিচ অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানের মাইক্রোবাস।
পরে সেখানে যায় সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। পরে ওই গাড়িবহরটি গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছায়। আহত ৬ জনকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
আহতদের মধ্যে মুকুল ও তোহিদুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার সময় সাইফুল ইসলাম পক্ষের ৩ নেতা কর্মীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ তাদের ছাড়িয়ে নিতে সাইফুল ইসমাম পক্ষের নেতাকর্মীরা আমঝুপি বাজারে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়ক সড়ক অবরোধ করে। এতে বন্ধ হয়ে পড়ে যানবাহন চলাচল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই তিন নেতাকর্মীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এসময় তাদের সড়ক থেকে তুলে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সদস্য সচিব অ্যাড. কামরুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই সাইফুল ইসলামের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা সম্মেলন বানচাল করার চেষ্টা করে। বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত মেহেরপুরের আহ্বায়ক কমিটিকে মেনে নিতে চাননি। তাই সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
পাল্টা অভিযোগ করে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বেআইনিভাবে তারা আমঝুপি ইউনিয়নের সম্মেলন করছে। আমরা বাধা দিয়েছি। তবে সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেজবাহ উদ্দীন বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে এখনও কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
আরটিভি/এএএ/এআর