অভিনেতা আলী যাকেরের প্রয়াণ দিবস আজ
অভিনেতা আলী যাকেরকে হারানোর তিন বছর পূর্ণ হলো বুধবার (২৭ নভেম্বর)। ২০২০ সালে আজকের দিনেই সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকে সমান তালে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। দেশীয় বিজ্ঞাপন শিল্পেও তার অবদান ছিল অনেক।
মঞ্চের ‘নূরলদীন’ কিংবা টেলিভিশনের ‘বড় চাচা’ চরিত্রে অভিনয় করে মানুষের হৃদয় জায়গা করে নিয়েছিলেন আলী যাকের। ‘বহুব্রীহি’, ‘আজ রবিবার’র মতো নাটক ও ‘নদীর নাম মধুমতী’, ‘লালসালু’ চলচ্চিত্রেও ছিল তার সফল পদচারণা। বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তিনি।
১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার (বর্তমানে জেলা) রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। তার বাবা মাহমুদ তাহের ও মা রেজিয়া তাহের। চার সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।
১৯৬০ সালে সেন্ট গ্রেগরিজ উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন আলী যাকের। পরবর্তীতে ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এ সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হন।
ব্যক্তিগত জীবনে মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেত্রী সারা যাকেরকে বিয়ে করেন তিনি। এই তারকা দম্পতির দুই সন্তান, পুত্র অভিনেতা ইরেশ যাকের ও কন্যা শ্রেয়া সর্বজয়া।
মঞ্চ ও টেলিভিশনের পাশাপাশি অসংখ্য বেতার নাটকেও অভিনয় করেছেন আলী যাকের। অভিনেতা হিসেবে যেমন সফল, তেমনি নির্দেশক হিসেবেও সফল এই অভিনেতা। মঞ্চে অনেক নাটক নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ‘অচলায়তন’, ‘বাকী ইতিহাস’, ‘বিদগ্ধ রমণীকুল’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘কাঁঠালবাগান’, ‘তৈল সংকট’, ‘এই নিষিদ্ধ পল্লীতে’, ‘কোপেনিকের ক্যাপ্টেন’ এবং ‘নূরলদীনের সারাজীবন’।
১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে ‘কবর’নাটকে অভিনয়ের মাধথ্যমে পথচলা শুরু আলী যাকেরের। তারপর ধারাবাহিকভাবে কাজ করে গেছেন তিনি। ১৯৭৩ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন অভিনেতা। সবশেষ নিজ নাট্যদলের হয়ে ২০১৭ সালে মঞ্চে অভিনয় করেন তিনি।
আলী যাকের কেবল মঞ্চ নাটকের সফল অভিনেতা কিংবা সফল নির্দেশকই নন। মঞ্চ নাটকের অন্যতম সফল সংগঠকও তিনি। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেণ বিশ্বাস পদক ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার।
আরটিভি/এইচএসকে-টি
মন্তব্য করুন