বোনের ষড়যন্ত্রে নির্যাতনের শিকার নির্মাতা, অতঃপর...

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ , ০৫:৪২ পিএম


সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নির্মাতা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মিনহাজ। বানিয়েছেন নাটক, মিউজিক ভিডিও ও বিজ্ঞাপন। এরপর ২০১৮ সালে জার্মান চলে যান চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর মাস্টার্স করতে। সম্প্রতি দেশে এসে বিয়ে করেছেন। গেল বছরের ৩০ আগস্ট পারিবারিকভাবে আকদ হয় এবং অনুষ্ঠান করে বউ ঘরে তোলেন ২৭ সেপ্টেম্বর। বিয়ের পর থেকে শুরু হয় যৌতুকের জন্য স্ত্রী তাহামিদার ওপর শ্বাশুড়ি ও ননদের অকথ্য গালাগাল আর নির্যাতন। যার জেরে মিনহাজ আজ মায়ের মামলার আসামি।

বিজ্ঞাপন

মিনহাজের অভিযোগ, নানা ঘটনার জের ধরে ৬ ডিসেম্বর রাতে তাহামিদার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত চ্যাট পড়া শুরু করেন মা নাসিমা আক্তার ও বোন আফিয়া আঞ্জুম মালিহা। তখনই প্রতিবাদ করেন তিনি। আর এতে খেপে গিয়ে মিনহাজকে গালাগাল করে শারীরিক আক্রমণ চালান তার মা ও বোন। দুজনের আক্রমণ থেকে স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাহামিদাও লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হন। ঘটনার রাতেই মিনহাজ ও তাহামিদা ফেনী সদর হাসপাতালে গিয়ে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে ফেনী থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন, যার নম্বর ৪৮৫। সাধারণ ডায়েরির কথা শুনে পরদিন তার বোন সকালে ঢাকায় পালিয়ে যান। আর মিনহাজের মা নাসিমা আক্তার সমঝোতা স্বাক্ষর করে জিডি তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তারা নিজেরাই সমঝোতার জন্য নিজেদের সুবিধামতো শর্ত লিখে সবাইকে বলতে থাকেন, ছেলে আর ছেলের বউ সম্পদের লোভে এসব কাণ্ড করছে।

বিজ্ঞাপন

মিনহাজ জানান, তার বোন-জামাই স্বল্প বেতনভুক্ত সরকারি চাকরিজীবী। স্বামীর অর্থ সংকটে বোন মালিহা হতাশ। পাশাপাশি দীর্ঘদিনের দাম্পত্য জীবনে কোনো সন্তান না হওয়াতেও সেই সংসার টেকানোর দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন মালিহা। এইসব হতাশার প্রভাবে ক্রনিক সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত মাকে ব্যবহার করে নববিবাহিত ভাইয়ের সংসারে ঝামেলা সৃষ্টি করে বাবার সব সম্পত্তি ভোগ-দখল করার পাঁয়তারা করছেন মালিহা ও তার স্বামী। এ উদ্দেশ্যেই ৬ ডিসেম্বর রাতে স্বামী সজিব মাহমুদের প্ররোচনায় মাকে সঙ্গে নিয়ে ভাই ও ভাবির ওপর হামলার কাণ্ড ঘটায় মালিহা।

 

এতকিছুর পরও শুধুমাত্র সংসারের শান্তির কথা ভেবে বিষয়টির সমাধানে রাজি হন মিনহাজ। কথা ছিল ১০ ডিসেম্বর সকলে মিলে ফেনী থেকে ঢাকা এসে সমঝোতা স্বাক্ষর করে জিডি তুলে নেওয়া হবে। অথচ ৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে যে ঘটনায় মিনহাজ আগেই জিডি করে রেখেছে তারই উল্টো বিবৃতি দিয়ে ৯ ডিসেম্বর সমঝোতার আলাপের ভেতরই গোপনে ফেনী থানায় মামলা করতে যান নাসিমা আক্তার। আগে থেকে একই ঘটনার জিডি থাকায় ফেনী থানা মামলা নিতে না চাইলে আদালতে ২ দিন আগে করা জিডির কথা গোপন করে একমাত্র ছেলে মিনহাজের বিরুদ্ধে তার মা নাসিমা আক্তার একটি চাঁদাবাজী, স্বর্ণালংকার লুট ও হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করে বসেন। তাই সঙ্গত কারণেই সমঝোতার বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হয়। আর কোনো অপরাধ না করেও বোনের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মায়ের সাজানো মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে ঘুরছেন মিনহাজ। ঘটনাটি স্থানীয় জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

বিজ্ঞাপন

মা ও বোনের সম্মানের কথা চিন্তা করে এবং পারিবারিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে মনে কষ্ট চেপে রেখে বিষয়টি ভুলে যাবার চেষ্টা করেন মিনহাজ। কিন্তু সম্প্রতি তার নববধূর সঙ্গে তাদের আচরণ ও নির্যাতন-মামলায় সার্বিকভাবে বিপর্যস্ত মিনহাজ। সদ্যবিবাহিত হয়েও নিজ পরিবারের অত্যাচারে একসঙ্গে এই দম্পতি থাকতে পারছেন না।

সম্প্রতি বাধ্য হয়ে বোন মালিহা ও তার স্বামীর নামে মামলা করেছেন তিনি। তবে আত্মরক্ষায় জিডি করে রাখলেও মানবিক কারণে মায়ের নামে মামলা করেননি তিনি। 

মিনহাজের প্রত্যাশা, আজ কিংবা কাল তার মা ভুল বুঝতে পারবেন। তাই মায়ের বিরুদ্ধে কোনো আইনি লড়াইয়ে যেতে চান না তিনি। তবে স্ত্রী তাহামিদা এই অত্যাচারের বিচার চান। তাই তিনি নিজে বাদী হয়ে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা দায়ের করেছেন যারা তার ওেপর এই অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে।

আরটিভি/এএ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission