ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। আর এই ঈদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলতে প্রতিবারই নতুন নাটক থেকে শুরু করে বিশেষ আয়োজন করে থাকে আরটিভি। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ঈদেও আট দিনব্যাপী নতুন নাটক, সিনেমা, সঙ্গীতানুষ্ঠানসহ বিশেষ আয়োজন করেছে আরটিভি। ঈদকে ঘিরে চাঁদ রাতে প্রচারিত হয়ে বিশেষ নাটক ‘টাইটানিকে ঈদ যাত্রা’।
জুয়েল এলিনের রচনায় নাটকটি পরিচালনা করেছেন জাকিউল ইসলাম রিপন। বিশেষ নাটক এই নাটকটির গল্পে দেখা যাবে সদরঘাটরে লঞ্চঘাটে যাত্রীদরে বাটে ফেলতে টিকেটে মাস্টার সুবহানের জুড়ি নাই। তারপর আবার চাঁন রাইত তাই সে যাত্রীদরে মাঝে চিৎ, কাইত অফার নিয়ে ঘাটে দাঁড়িয়ে হাকডাক শুরু করে গানও গায় সুবহান, আইতে নদী যাইতে খাল আমগো বাড়ি বরশিাল।
যাত্রীদরে গালাগাল আর হুড়োহুড়ি চিৎকারের মাঝে নবরুপে এমপি টাইটানকি সাজে সেই লঞ্চে মালামাল নিয়ে উঠে পড়ে যাত্রীরা। খুশিতে সুবহানের পানের চিপিতে মুখ লাল হয় কন্তিু সে তখনো বুঝে উঠতে পারেনি লঞ্চ ছাড়ার পর তার যে কী বেহাল অবস্থা হবে। ঘটনা শুরু কেবিন নাম্বার ১ থেকে যেখানে দুই বন্ধু প্রবাসী সৌদি সেলিম আর কাতার রফিক অবস্থান করছিল। দেশে ঈদ করতে আসা এরাবয়িান বেশে তাদের বাড়ির যাত্রা। খুশির মাত্রাটা আরো বাড়িয়ে নিতেই ঢাকার এক বন্ধুর মারফত এক ছিলিম গাজা এনে মনকে রঙ্গিন করতে কবেনিরে বাথরুমে ঠেসে গাজায় দম নেয়।
একটু আগেই লঞ্চে দেখে এক হিজাব পড়া যাত্রীকে কল্পনায় তার বউ ভেবে রফিক লঞ্চের নেচে কুদে গান গায়, বরিশালের লঞ্চে উইঠ্যা লইমু কবেনি রুম বন্ধুরে মোর বুকে লইয়া দিমু একটা ঘুম। কিন্তু কিন্তু নেশা যে কাতার রফিককে এমন বেদিক করবে তা যেন ঘুন্নাক্ষরেও বুঝতে পারেনি সৌদি সেলিম।
দীর্ঘদিনের অনভ্যাস্ততার কারনে গাজায় দম দিয়ে হঠাৎ যেন কাতার রফিক চোখের সামনে সাক্ষাৎ মরন যমকে দেখে। কারণ তখন কেবিনের টিভিতে চলছিলো টাইটানিক ছবির দূর্ঘটনার দৃশ্যটি। ডুইবা গেলো ডুইবা গেলো, তার এই চিৎকারে শত বুঝিয়েও না পেরে শেষে মানসম্মান বাচাতে সেলিম তাকে টাংনী যাত্রীদের থামাতে ব্যস্ত থাকে সরহান মিয়া। সেলিম কেবিনে আটকে রাখে। চিৎকারের উৎসে কৌতহলী যাত্রীদের থামাতে ব্যস্ত থাকে সুবহান মিয়া। সেলিম মিথ্যে বলে যে, বন্ধুটির পানির ভয় তা ও আবার জীবনের প্রথম লঞ্চ যাত্রা তাই নার্ভাস হয়ে কান্নাকাটি করছে। নেশা কাটাতে একটু তেতুল হলেই চলে তাই
সেলিম তেতুলের খোজে বের হয়। এদিকে তেতুলের চাটনি হাতে ক্যাটরিনা কাপড়বেগম যার গায়ের কাপড় নিয়ে সারাক্ষন দারুন ফাপড়ে থাকে তার বাবা হা রুন মিয়া। দুই মেয়ে নিয়ে তার বাড়ি যাত্রা। গরুর হাটের মত বেচা-বিক্রি করার মত দুই/তিন মাস পরপরই পাত্র দেখানোর জন্য ঢাকায় তার এক আত্মীয়র বাসায় আসতে হয়। হারুন মিয়ার বউ ছিলো ভিসিআর এর যুগে নায়িকা রেখার ভক্ত সে চেয়েছিলো মেয়ে বড় হয়ে রেখার মত হবে। কিন্তু ভাগ্যে যে এই লেখা ছিলো হারুন মিয়া কোনোদিন বুঝতে পারেনি। আর হারুন মিয়া চেয়েছিলো তার আরেক মেয়ে হবে পরহেজগারি তাই ছোট মেয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত সবসময় হিজাব পড়ে থাকে। তার সাথে কথা বলতে হলে মানুষকে হিসাব করে বলতে হয়।দুই বোনের মধ্যে সারাক্ষণ গ্যাঞ্জাম লেগে থাকে। কি কারনে বার বার বিয়ে ভেঙ্গে যায় হারুন মিয়া নিজেও জানে না। সারাব ছর তার আসতে যেতে তার কত টাকা লস। যাইহোক চাটনি চাইতে কাটরিনার কাছে আসে সেলিম। সে চাওয়া পাওয়ার মাঝে একটা ভাব বিনিময়ও হয়। ঐদিকে হিজাবী বেগমের সাথে কোনো কারনে বাকবিত ন্ডায় হারুন মিয়ার মাথায় যখন খুন চাপে তখন সে লঞ্চ থেকে ঝাপ দিতে যায়। একেক ক্যারফা সামলাতে ব্যস্ত সুবহান এসে হাত জোড় করে মাফ চায়। কিন্তু কেমন করে যেন কেবিনের দরজা খুলে বাইরে আসা কাতারি রফিক নেশার ঘোড়ে বলে, ঝাপ দেন কাকা লঞ্চ তো ডুববই এমনেও মরবেন অমনেও মরবেন। হারুন মিয়া এসে ঠাস করে চড় লাগায় রফিকের গা লে আর সেই চড়েই যেন রফিকের নেশা ছুটে যায়। আর নেশা ছুটতেই সামনে দাঁড়ানো হিজাবী বেগমের রুপের নেশায় পড়ে যায় সে। দুইদিকেই যেন তখন আজম খানের গানের মত অবস্থা তৈরি হয়। চুপ চুপ চুপ অনামিকা চুপ কথা
বলোনা, তুমি আমি এখানে কেউ জানে না।
ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙ্গে তাই সিজনাল ফকির আলম মিয়া ঢাকার ভিআইপি এরিয়ায় এক মাসের খ্যাপ মেরে বেশ ভালো কামিয়ে এখন লঞ্চে উঠেও হাত পাতে। মেজাজ খারাপ হয় সুবহানের সে স্পষ্ট বলে দেয় যেন নিচের ডেক ছাড়া উপরে না উঠে। এই নিয়ে শুরু হয় আরেক কেরফা। আলম ফকির নিচে ডেকের যাত্রীদের নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ঈদযাত্রা আন্দোলন শুরু করে। সুবহান যখন এই ঝামেলা সামলাতে ব্যস্ত তখন কন্যা পাত্রস্ত করতে না পারা হতাশ হারুন মিয়ার কথা শুনে ঘটক ফরমান আলী তাকে চ্যালেঞ্জ দেয় এই লঞ্চে এই ঈদ যাত্রায় যদি তার মেয়ের পাত্র ঠিক করে না দিতে পারে তাহলে হারুন মিয়ার জুতা আর তার গাল।
ঘটক ফরমান আলীর পাত্র সন্ধানে লঞ্চের মধ্যে হুলুস্তুল লেগে যায়। ফকির আলম মিয়াও ক্যান্ডিডেড হিসেবে নাম লেখায়। ফিরিস্তি দেয় তার ঘর গেরস্তি তার কয় কানি জমি আছে, কয়টা গরু আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। টিকেট মাস্টার সুবহান ও অফার নিয়ে হাজির হয় তাকে জামাই করলে সারাজীবন লঞ্চ যাত্রা ফ্রি।
সর্বশেষ ডাইনে কাতার আর বায়ে সৌদি নিয়ে হাজির হয় ফরমান মিয়া। সবার সাথেই ক্যা টরিনা কাপড় আর হিজাবি বেগম আলাদা ভাবে কথা বলে জেনে নেয় কার কাছে কি আছে। চূড়ান্ত হয় সৌদি আর কাতার। এরা দুজনেই যখন কল্পনার সাগরে ডুব সাতার খেলতে থাকে তখনই শুরু হয় আসল খেলা। যখন দেখে কালো কাপড় পড়া আর বন্দুক হাতে ডাকাত বেশে হারুন মিয়া ও তার দুই মেয়ে আর ঘটককে পুরো লঞ্চটাকে জিম্মি করে সবার কাছ থেকে সবকিছু ছিনিয়ে নিতে চাইলে বাধা হয়ে দাঁড়ায় কাতারি রফিক। ঘৃণায় থুথু ছুড়ে হিজাবি বেগমের দিকে। গুলি করে হারুন মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রফিক ততক্ষনে লঞ্চ ভিড়েছে ঘাটে। আর এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকের গল্প।
বিশেষ এই নাটকটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শামীম হাসান সরকার, তানিয়া বৃষ্টি, সামান্তা পারভেজ প্রমুখ। চাঁদ রাতে ৮ টায় আরটিভিতে এই নাটকটি প্রচারিত হবে।
এদিকে একই দিন রাত ১১টা ৩০ মিনিটে জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও সাবিলা নূর অভিনীত নাটক প্রিয় খেয়ালে প্রচারিত হবে। মেজবাহ উদ্দিন সুমনের রচনায় নাটকটি পরিচালনা করেছেন রুবেল হাসান।
আরটিভি/এএ