রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) এখতিয়ার নিয়ে করা আবেদনে মিয়ানমারের শুনানি শেষ। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি শুনানি করবে গাম্বিয়া।
আদালতে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রতিনিধি দল জানায়, রোহিঙ্গা সমস্যা জটিল। শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের পিস প্যালেসে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় গ্রেট হল অব জাস্টিসে কিছু সদস্য উপস্থিত থাকলেও বাকিরা ভার্চ্যুয়ালি বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেন।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি আইসিজে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ২১, ২৩, ২৫ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
মিয়ানমারের রাখাইনে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজে আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া।
সে সময় প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ অভিযান চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছেন জাতিসংঘের তদন্তকারীরা।
বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশের সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি), কানাডা ও নেদারল্যান্ডস গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় সমর্থন দিয়েছে।
এর আগে এ মামলায় হেগের আদালতে মিয়ানমারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন দেশটির তৎকালীন নেতা অং সান সু চি।
তিনি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আনা রোহিঙ্গাদের ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। বর্তমানে তিনি সেনাবাহিনীর কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত হয়ে কারাবন্দি রয়েছেন। এবার অবশ্য জান্তা সরকারের প্রতিনিধিদল জাতিসংঘের আদালতে প্রতিনিধিত্ব করে।
এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও আইনজীবীরা। মিয়ানমার অ্যাকাউন্টিবিলিটি প্রজেক্ট বলেছে, জাতিসংঘের আইসিজে বা কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থায় মিয়ানমারকে প্রতিনিধিত্ব করার ভিত্তি জান্তা সরকারের নেই।
এ ছাড়া মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী সু চির আইনপ্রণেতাদের সংগঠন ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ বলছে, এ মামলায় মিয়ানমারের প্রতিনিধি জান্তা হতে পারে না। জান্তার প্রাথমিক অভিযোগ খারিজ করে দ্রুত মূল শুনানি শুরু করার দাবি জানায় তারা।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে গাম্বিয়া। তবে মিয়ানমার বলছে, যেহেতু গাম্বিয়া অভিযোগকৃত নিপীড়নে কোনোভাবে আক্রান্ত হয়নি, তাই তাদের মামলা করার অধিকার নেই। এ ছাড়া মিয়ানমার সরকার এ মামলায় বেশ কয়েকটি আপত্তি তোলে। এই সপ্তাহে অবশ্য এসব প্রাথমিক আপত্তির বিষয়ে শুনানি হবে।
সূত্র: গার্ডিয়ান