সম্প্রতি স্বাস্থ্য সচেতনদের মধ্যে কফির সঙ্গে ঘি মিশিয়ে পান করার প্রবণতা বেড়েছে। এই বিশেষ পানীয়টি "বুলেটপ্রুফ কফি" নামে পরিচিত, যার প্রধান উপাদান হলো কফি ও ঘি (বা বাটার)। এটি বিশেষ করে কেটোজেনিক (লো-কার্ব, হাই-ফ্যাট) ডায়েট অনুসরণকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়।
ঘি ও কফির পুষ্টিগুণ
ঘি
ঘি হলো পরিষ্কার করা মাখন, যা উচ্চমাত্রার ক্যালরি ও চর্বি সরবরাহ করে। এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, এবং ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে থাকে।
প্রতি ১ টেবিল চামচ ঘিতে থাকে—
- ক্যালরি: ১২০ কিলোক্যালরি
- মোট ফ্যাট: ১৪ গ্রাম
- স্যাচুরেটেড ফ্যাট: ৯ গ্রাম
কফি
কফি একটি প্রাকৃতিক উদ্দীপক, যা মানসিক সতর্কতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি ক্যাফেইন সমৃদ্ধ, যা ক্লান্তি দূর করতে এবং বিপাকক্রিয়া বাড়াতে সহায়ক।
১ কাপ কালো কফিতে (২৫০ মি.লি.) থাকে—
- ক্যাফেইন: ৮০-১০০ মিলিগ্রাম
কফির সঙ্গে ঘি মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- শক্তি বৃদ্ধি ও মনযোগ উন্নতি: বুলেটপ্রুফ কফিতে থাকা ক্যাফেইন মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে, এবং ঘিতে থাকা মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইড (এমসিটি) দ্রুত হজম হয়ে শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। ফলে এটি দীর্ঘ সময় ধরে এনার্জি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- ক্ষুধা কমানো ও ওজন নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ চর্বির কারণে এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা অনুভূতি দেয় এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়। ধীরে হজম হওয়া স্যাচুরেটেড ফ্যাট ক্ষুধা দমনেও কার্যকর।
- কেটোজেনিক ডায়েটে সহায়ক: ঘি উচ্চ-ফ্যাট ও কম-কার্বোহাইড্রেটযুক্ত হওয়ায় এটি কেটোজেনিক ডায়েট অনুসরণকারীদের জন্য উপকারী। এটি কিটোন উৎপাদন বাড়িয়ে ফ্যাট বার্নিং প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুবিধা: কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
- রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখা: কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়া বা কমার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
- কোলেস্টেরল বৃদ্ধি: ঘিতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকায় এটি এলডিএল (খারাপ) কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে, যা কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত অতিরিক্ত বুলেটপ্রুফ কফি পান করলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
- ওজন বৃদ্ধি: অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণের ফলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। ঘি-কফি নিয়ন্ত্রিতভাবে খাওয়া না হলে এটি স্থূলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
কফির সঙ্গে ঘি মিশিয়ে খাওয়া নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে, বিশেষ করে যারা কেটোজেনিক ডায়েট অনুসরণ করছেন। তবে অতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই এটি পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
আরটিভি/জেএম