করোনায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের করণীয়
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছেন ডায়াবেটিস রোগিরা। চিকিৎসকরা বলছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় ডায়াবেটিস রোগিরা সহজেই আক্রান্ত হতে পারেন। আবার আক্রান্ত হলে যেমন জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা তেমনি থাকে মৃত্যু ঝুঁকিও। এ অবস্থায় যতটা সম্ভব বিচ্ছিন্ন থেকে নিয়মিত ওষুধ সেবন, বাড়তি যত্ন নেয়ার পাশাপাশি সুষম, প্রোটিন ও ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্যমতে, বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি মানুষ ডয়াবেটিসে আক্রান্ত। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় দেশে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে আছেন ডায়াবেটিস রোগিরা। প্রতিষেধক আবিষ্কার না হলেও, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি তাদের কাছে পরাস্ত হয় ভাইরাসটি। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বলে প্রবীণ ও ডায়াবেটিস রোগিরা থাকেন সহজেই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে। ডায়বেটিসের কারণে শরীরে ইনসুলিন কমে যাওয়ায় তাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। নিয়মিত চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনের মাধ্যমে শরীরের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ল্যাবএইড হাসপাতালের ডায়াবেটিস ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার প্রণব চৌধুরী। আতঙ্কিত না হয়ে আরো সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডাক্তার কামরুল হাসান খান। তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই তারা বাইরে বের হবেন না এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের তাদের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের করণীয়
১. আতঙ্কিত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়া যাবে না। সবসময় হাসি-খুশি থাকা।
২. জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত ব্যক্তিগত চিকিৎসক অথবা সরকারের নির্দেশিত করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কেন্দ্রে যোগাযোগ।
৩. রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা অর্থাৎ ৭ মিলিমোলের নিচে রাখা, প্রয়োজনে ইনসুলিন বা ওষুধ সেবন অথবা উভয় চিকিৎসা সেবা চালু রাখা।
৪. করোনা উপসর্গ দেখা দিলে, নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে আলাদা রাখা। শরীর বেশি খারাপ না হলে হাসপাতালে না যাওয়া।
৫. ডায়াবেটিস রোগীদের ঘরে থাকা এবং অন্যের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
৬. ঘরের ভিতরে, বারান্দায় হাঁটাচলা এবং হালকা ব্যায়াম করা।
৭. ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে একটু পরপর হাত ধোয়া।
৮. অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা। হাঁচি-কাশিতে রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং তা নির্দিষ্টস্থানে ফেলা।
৯. গলা শুকনো না রেখে তরল পানীয়, ফলের জুস, সুপ, লেবু পানি ও অন্যান্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা।
১০. ঘরের দরজা-জানালা খুলে দিয়ে ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা।
১১. ঠাণ্ডা পানি, আইসক্রিম, কোমল পানীয়, এনার্জি ড্রিংকস পরিহার করা।
১২. ধূমপান, ক্রনিক এলকোহলিক সম্পূর্ণ বর্জন করা।
১৩. বাইরের খাবার পরিহার করা।
জে/পি
মন্তব্য করুন