প্রতিদিন রসুন খেলে উপকার কী?
একদিকে বর্ষাকাল অন্যদিকে করোনার আতঙ্ক। এই সময় সব কিছু থেকে সুরক্ষা থাকা চাই। এই সময় রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে নিয়মিত শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এমন একটি বিশেষ সবজি আছে, যা সহজেই আপনি প্রতিদিন খেতে পারেন। তাও আবার রান্না না করলেও চলে, দিব্যি কাঁচা চিবিয়ে খেতে পারেন এটি।
হ্যাঁ, ঠিকই ধরছেন, রসুনের কথাই বলা হচ্ছে। রসুনের মধ্যে রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। শরীর ভালো রাখা ছাড়াও বিশেষ কিছু রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে রসুন প্রায় বিকল্পহীন।
রসুনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে ভারতীয় পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী বলেন, রসুনে রয়েছে অ্যালিন নামক একটি পদার্থ, তাই রসুন চিবিয়ে খাওয়ার সময় সেটি সক্রিয় পদার্থ অ্যালিসিনে পরিণত হয়। অ্যালিসিনে সালফারের উপস্থিতিই রসুনের নির্দিষ্ট স্বাদ-গন্ধের কারণ। অ্যালিসিন সক্রিয় হওয়ার কারণেই এটি সালফারযুক্ত নানা সক্রিয় যৌগে পরিণত হয়। এগুলো শ্বেত রক্তকণিকার শক্তি বাড়িয়ে দেয়, ফলে সাধারণ সর্দি-কাশি যে ভাইরাসের জন্য হয়, সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে শ্বেত রক্তকণিকায়। তাই প্রতিদিন রসুন খেলে সর্দি-কাশির সম্ভাবনা কমে।
মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, রসুন যেহেতু একটা সবজি, তাই সবজি হিসেবে প্রতিদিন খাওয়া যেতেই পারে। কারণ যে কোনও সবজিই পরিমিত পরিমাণে খেলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। তবে রসুন খেলেই যে সব রোগ সেরে যায়, এ জাতীয় তথ্যের কোনও ভিত্তি নেই বলেও জানান তিনি।
যেভাবে রসুন খাবেন-
পূর্ণবয়স্কদের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩টি রসুনের কোয়া খেতে বলছেন পুষ্টিবিদরা। প্রতিদিন সকালে এক কোয়া রসুন কাঁচা চিবিয়ে খেলে তা সবচেয়ে বেশি উপকারে আসে। রান্না করার সময় রসুন কুচি কুচি কেটে বা থেঁতো করে দিলে তা সক্রিয় উপাদান অ্যালিসিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তবে সে ক্ষেত্রে রসুন ধুয়ে কেটে মিনিট দশেক রেখে তবেই রান্নায় ব্যবহার করতে পারলে ভালো। যদিও বেশি রান্না করলে রসুনে থাকা অ্যালিসিন নষ্ট হয়ে যায়। বেটে দেওয়া রসুনে খাবারের স্বাদ বাড়লেও কাঁচা রসুন খাওয়াই বেশি উপকারী বলে জানান পুষ্টিবিদ।
রসুনের মধ্যে নানা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকায়, প্রতিদিন অল্প রসুন খাওয়াই যায়। কোলেস্টেরল ছাড়াও এটি নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তে সুগারের মাত্রা। খালি পেটে, অর্থাৎ অনেকটা সময় পেট খালি থাকার পর এটি খেলে এর রস সহজে শরীরকে ডি-টক্সিফাই করতে পারে বেশি পরিমাণে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ানো ও মাস্ক-সাবান-স্যানিটাইজার ব্যবহার করে অসুখের সঙ্গে লড়াই করা ছাড়া এই মুহূর্তে কোনও বিকল্প পথও খোলা নেই।
সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা।
জিএ
মন্তব্য করুন