গ্রীষ্মকাল মানেই পাকা ফলের মেলা। আম, কাঁঠাল, জাম আর লিচুর স্বাদে মন ভরে যায় সবার। এর মধ্যে লিচু শুধু সুস্বাদু নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এতে থাকে ভিটামিন সি, বি-৬, রিবোফ্লাভিন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়ামসহ নানা প্রয়োজনীয় উপাদান।
তবে এই উপকারী ফলটি কিছু মানুষের জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে। চলুন জেনে নিই, কারা লিচু খাওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করবেন—
নিম্ন রক্তচাপের রোগী হলে
লিচু রক্তচাপ হঠাৎ করে কমিয়ে দিতে পারে। যার ফলে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি ও অলসতা দেখা দিতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত নিম্ন রক্তচাপের ওষুধ খান, তবে লিচু খাওয়ার আগে সতর্ক থাকুন।
অ্যালার্জি প্রবণ হলে
লিচু কারও কারও শরীরে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। যেমন: ত্বকে চুলকানি, ফুসকুড়ি, ঠোঁট ফুলে যাওয়া কিংবা শ্বাসকষ্ট। যদি আপনি অ্যালার্জিতে ভোগেন, তাহলে লিচু এড়িয়ে চলাই ভালো।
ডায়াবেটিস থাকলে
লিচু রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমিয়ে দিতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ডায়াবেটিস থাকলে কম পরিমাণে লিচু খান এবং সুগার লেভেল পর্যবেক্ষণে রাখুন।
গর্ভাবস্থা বা স্তন্যদানকালীন সময়
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের জন্য লিচু খাওয়া নিরাপদ নাও হতে পারে। যদিও বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা চলছে, তবে ঝুঁকি এড়াতে এ সময় লিচু না খাওয়াই ভালো।
অস্ত্রোপচারের আগে-পরে
লিচু রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে। অস্ত্রোপচারের সময় বা পরবর্তী সময়ে এটি খেলে রক্তে শর্করার ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে।
অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার বিপদ
- অতিরিক্ত লিচু ওজন বাড়াতে পারে।
- এতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড নেই, তাই বেশি খেলে শরীরের পুষ্টিগত ভারসাম্য নষ্ট হয়।
- খালি পেটে লিচু খেলে বিষক্রিয়ার আশঙ্কা থাকে।
কতটুকু খাওয়া নিরাপদ?
দিনে ১০–১২টি লিচু খাওয়া যেতে পারে। তবে বয়স, শারীরিক অবস্থা ও রোগের ধরন অনুযায়ী এই পরিমাণে পার্থক্য হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিচি ফেলে দিয়ে লিচু খাওয়াবেন।
লিচু যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিকর। কিন্তু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এটি বিপদজনকও হতে পারে। তাই স্বাস্থ্য বুঝে পরিমিত পরিমাণে লিচু খান।
আরটিভি/জেএম