প্রতি বছর ৮ মার্চ সারাবিশ্বে পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিবসটির মূল লক্ষ্য নারীর অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা। প্রতিবছর নারী দিবসের একটি প্রতিপাদ্য বিষয় থাকে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো "ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন"।
বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয়। নারীদের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে গ্রহণ করা হয় নানা পদক্ষেপ। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে, নারী হিসেবে ঠিক কতটা সমধিকার পাচ্ছি? এ সমাজে আমরা কতটা নিরাপদ? এটা বলছি না যে, কোনো পরিবর্তন হয়নি। কিছুটা পরিবর্তন তো অবশ্যই হয়েছে।
অধিকারের দিক দিয়ে হয়তো আমরা খানিকটা এগিয়েছি কিন্তু নারীর নিরাপত্তা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। এ পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা আদ্য কি কোনো সম্মান পায়? যদি পেত তবে কী আজো বাংলার ঘরে ঘরে যৌতুকের জন্য নববধূকে জীবন দিতে হতো? যে দেশে পাঁচ বছরের বাচ্চাকে পঁয়তাল্লিশ বছরের ব্যক্তি ধর্ষণ করে সে দেশে নারীর নিরাপত্তা ঠিক কতটা?
একজন পুরুষ একজন নারীকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে কিন্তু নারী যদি সেই একই কাজ করে, তাকে কুপিয়ে ফেলে রাখা হয় রাস্তায় আর জন্ম হয় খাদিজা, রিসার মত নারীদের। একজন নারী কতটা নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে বাসার বাইরে বের হয়, তা শুধু সে নারীই জানেন। আতঙ্কে থাকেন, সম্মানটুকু নিয়ে বাসায় ফিরবেন তো?
জাতি হিসেবে আমরা আজো এত পিছিয়ে। যেদিন থেকে সামাজিকভাবে নারীকে শুধু নারী না ভেবে, মানুষভেবে তাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান করতে পারবে সেদিনই নারী তার সমধিকার পাবে। একটি জাতি পূর্বেও নারীর অবদান ছাড়া এগিয়ে যেতে পারেনি আর ভবিষ্যৎও পারবে না। এক্ষেত্রে পুরুষদের মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। নারীদেরও নিজ অধিকার সর্ম্পকে সচেতন হতে হবে।
এবারের নারী দিবসে একটাই চাওয়া, নতুন করে যেনো আর কোনো তনু, খাদিজা বা রিসাকে হত্যার মুখোমুখো হতে না হয়। নারী তার প্রাপ্য অধিকার নিয়ে পুরুষের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে পথ চলতে পারে। এটিই চাওয়া।