রাসুল (সা.) যেভাবে কোরবানি করতেন
কোরবানি শব্দের অর্থ ত্যাগ, আত্মোৎসর্গ; নৈকট্য লাভ এবং জবাই করা ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায় কোরবানির অর্থ হলো, জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা।
এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘সব সম্প্রদায়ের জন্য আমি কোরবানির বিধান দিয়েছি, তিনি (আল্লাহ) তাদের জীবন উপকরণস্বরূপ যেসব চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছেন, সেগুলোর ওপর যেন তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ, আয়াত: ৩৪)।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) মদিনায় ১০ বছর অবস্থান করেছেন। প্রতিবছরই তিনি কোরবানি করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস: ১৪৪৯)
রাসুল (সা.) ঈদের নামাজের পর কোরবানি করতেন
জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, নবি করিম (সা.) কোরবানির দিন (প্রথমেই) নামাজ আদায় করেন। তারপর তিনি খুতবা দেন। এরপর (কোরবানির পশু) জবেহ করেন।
তিনি ঘোষণা দেন, নামাজের আগে যে ব্যক্তি পশু জবেহ করবে, তাকে নামাজের পর আরেকটি পশু জবেহ করতে হবে। (বুখারি, হাদিস: ৯২৮, ৬৮৮৪)
রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম নিজ হাতে কোরবানি করতেন
আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে তার কোরবানির পশুর ওপর পা দিয়ে চেপে ধরে নিজ হাতে কোরবানি করতে দেখেছি। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১৫৫)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) (কোরবানির আগে) ছুরি ধারালো করতে এবং তা পশুর দৃষ্টির অগোচরে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তোমাদের কেউ জবেহ করার সময় যেন তা দ্রুত সম্পন্ন করে (যাতে পশু অধিক পরিমাণে কষ্ট না পায়)। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১৭২)
হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবি করিম (সা.) দুটি ভেড়া কোরবানি দিতেন। আর আমিও দুটি ভেড়া কোরবানি দিতাম। (বুখারি, হাদিস : ৫৫৫৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোরবানি করতে ইচ্ছা করতেন, তিনি চিত্রবিচিত্র, শিংবিশিষ্ট, মোটাতাজা দুটি খাসি-ভেড়া কোরবানি দিতেন।
এর একটি তিনি ওইসব উম্মতের জন্য কোরবানি করতেন, যারা আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেবে ও তার দায়িত্ব পালনের কথা স্বীকার করবে। অন্যটি তিনি নিজের ও তার পরিবারের নামে জবেহ করতেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২২)
মন্তব্য করুন