বিদ্যুতের বাণিজ্যিক সংযোগ নিয়ে চলছে শিল্পকারখানা। এসব সংযোগ পেতেও তেমন বেগ পেতে হয় না গ্রাহকদের। রাজধানীজুড়ে অনিয়ম চললেও দেখেও না দেখার ভান করে কর্তৃপক্ষ। এতে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
পোশাকশিল্পের ডায়িং কারখানার বড় বড় সব যন্ত্রই বিদ্যুৎনির্ভর। এ কারখানায় শিল্প বিদ্যুৎ সংযোগ থাকার কথা। অথচ, রাজধানীর মিরপুরের বক্সনগর এলাকার মর্ডান ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ওয়াশিং হাউজ চলছে বাণিজ্যিক সংযোগে।
প্রথমে দাবি করা হয়, বাণিজ্যিক লাইন নয়। তবে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি কারখানার মালিক। ছবি নিতেও বাধা দেওয়া হয়।
কারখানার মালিক বলেন, আমরা অনুমতি নিয়েই করতেছি। অনুমতি আছে। এটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্লট।
একই গলিতে আরেকটি ডায়িং কারখানা, সেটিও চলছে বাণিজ্যিক সংযোগে।
এই কারখানার মালিক প্রথমে বলেন, হ্যাঁ, বিজনেস লাইন। পরে আবার তিনি বলেন, এটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইন।
মিরপুরের মতো বাসাবোতেও একই চিত্র। বাণিজ্যিক সংযোগ নিয়েই চলছে ওয়েলডিংয়ের মতো ভারী বৈদ্যুতিক কাজ।
কারখানা মালিক বলেন, আমাদের এটা ইন্ডস্ট্রিয়াল লাইন না। আমাদের এখান শিল্প কারখানা ছোট, এত বড় না। এখানে টুকটাক কাজ করি।
কে কোন সংযোগে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন, তার তালিকা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রিতিনিধি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চিত্তরঞ্জন দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একটু গাফলতি আছে। তারা যদি বিষয়টি একটু তদারকির আওতায় আনে, পাশাপাশা জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব আছে। কিছু কিছু বাড়ির সামনে যে দোকান আছে, তারা বাণিজ্যিকভাবে বিল দিচ্ছে না, আবাসিকভাবে দিচ্ছে। আবার কোনো কোনো জায়গায় অবৈধ লাইন আছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, এ ধরনের অনিয়ম বেড়ে যাওয়ায় আবেদন দেখে অভিযানে নামার প্রস্তুতি চলছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের (পাওয়ার সেল) মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, আমাদের কাছ থেকে সংযোগ নিয়ে অনেকে তাদের কার্যক্রম পরিবর্তন করে। সেটা যদি আমাদের নজরে আসে, তখন আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে লোডশেডিংই একমাত্র সমাধান নয়। বরং এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ করতে পারলে একদিকে যেমন এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরবে, তেমনি সরকারের রাজস্ব আদায় কয়েক গুণ বাড়বে।