প্রার্থী-সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতা এড়াতে, সংসদ নির্বাচন ছাড়া সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পুরোপুরিভাবে অনলাইনে মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন। এমনটা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব খান। কমিশনের এই ভাবনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কারিগরি বিষয় ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ তার।
ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে বরাবরই মনোনয়নপত্র তুলতে এবং জমা দিতে প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের বহর সঙ্গে নিয়ে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনি এলাকায় নিজেদের অবস্থান জানান দিতে এবং ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ব্যাপক শোডাউনও করেন। অনেক সময় এসব ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও তৈরি হয়। দেশের নির্বাচনের এই চিরচেনা রূপে পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব খান বলেন, সংসদ নির্বাচন বাদে বাকি নির্বাচনগুলোতে মনোনয়নপত্র দাখিল সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করার কথা চিন্তা করছে কমিশন।
তিনি বলেন, আমরা চাই একটি ঝামেলাহীন নির্বাচন এবং মনোনয়নপত্র জমাদান প্রক্রিয়া। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনই দেখা আচরণবিধি ভঙ্গ করা হয়েছে। একটি বহর নিয়ে শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মাধ্যমে শুরুটাই হয় আচরণবিধি ভঙ্গ করে। আমরা এটা অনলাইনে বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি চিন্তা করেছি, যেন কোনো ধরনের সহিংসতা জটিলতা ও গণ্ডগোল সৃষ্টি না হয়।
মনোনয়নপত্র তোলা নিয়ে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা হয় এবং অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানো হয়। এ সব ঘটনা বন্ধ করতে অনলাইন পদ্ধতির দিকে যেতে চাচ্ছে কমিশন।
আহসান হাবীব খান বলেন, যখন মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসে, তখন প্রার্থী কিন্তু বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এবার যেহেতু কখনও কখনও বলপূর্বক প্রত্যাহার করানো হয়। সেজন্য এটা অনলাইনে করলে স্বচ্ছতা বাড়বে।
তিনি বলেন, পাসপোর্ট, আইডি কার্ড করছি এবং স্কুল-কলেজে পরীক্ষা নিচ্ছি অনলাইনে। সুতরাং আমাদের দেশ একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে। এটা অনলাইনে যাওয়াটাই আরও ভালো হবে। তবে এ ব্যাপারে আমাদের কমিশনে আলোচনা হবে। এখন বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে যে, এটি কতটুকু ফলপ্রসূ হবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, আধুনিক ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে যাওয়া ভালো। এতে প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয় কমবে।
তিনি বলেন, পুরো ব্যাপারটি যদি অনলাইনে সম্পন্ন করা যায়, তাহলে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে এড়ানো যাবে। পাশাপাশি স্বচ্ছ পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রেও এটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। আমরা চাই, নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সহিংসতা মুক্ত।
তবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দিলেন এই নির্বাচন বিশ্লেষকের।
