মোস্তাফিজের ফেরার ম্যাচেও পরাজয় এড়াতে পারল না দিল্লি
প্রথম তিন ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাননি মোস্তাফিজুর রহমান। তাকে ছাড়া জয়ের দেখাও পায়নি দিল্লি ক্যাপিটালস। তবে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন বাঁহাতি এই পেসার। তবে মোস্তাফিজের ফেরার ম্যাচেও পরাজয় এড়াতে পারল না দিল্লির ফ্রাঞ্চাইজিটি।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) আইপিএলে চলতি আসরের ১৬তম ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মুখোমুখি হয় দিল্লি ক্যাপিটালস। তবে ঘরের মাঠ অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সফরকারীদের কাছে ৬ উইকেটে হেরেছে দিল্লি।
এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ও অক্ষর প্যাটেলের ফিফটির পরও ১৯.৪ ওভারে ১৭২ রানে অলআউট হয়ে যায় দিল্লি। জবাব দিতে নেমে রোহিত শর্মার ফিফটির পর ম্যাচের শেষ বলে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নেয় মুম্বাই।
এই পরাজয়ে হারের বৃত্তেই আটকে রইল দিল্লি ক্যাপিটালস। চার ম্যাচের সবকটিতে হেরে সবার শেষে অবস্থান করছে তারা। অন্যদিকে টানা দুই ম্যাচ হেরে এই ম্যাচ দিয়ে জয়ে ফেরা মুম্বাই ৩ ম্যাচে ১ জয়ে অবস্থান করছে তালিকার আটে।
এদিন ম্যাচে দিল্লি তাদের একাদশে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে। ইনজুরিতে পড়া খলিল আহমেদের জায়গা ইয়াশ ধুল এবং রাইলি রুশোর পরিবর্তে সুযোগ পান মোস্তাফিজ। তবে একাদশে পরিবর্তন এনেও কাঙ্খিত জয় তুলে নিতে পারেনি তারা।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলেন দিল্লির দুই ওপেনার ওয়ার্নার ও পৃথিবী শ। তবে চতুর্থ ওভারে ১০ বলে ১৫ রান করে আউট হয়ে যান শ। এতে দুজনের ৩৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায়। ক্যামেরুন গ্রিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে তাকে ফেরান শোখিন।
এরপর মনীষ পান্ডেকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ওয়ার্নার। তবে দলীয় ৭৬ রানে পীযুষ চাওলার বলে বিদায় নেন পান্ডে। ১৮ বলে ব্যক্তিগত ২৬ করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এরপর রোভমান পাওয়েল ও ললিত যাদবের উইকেট তুলে নেন এই লেগ স্পিনার।
৯৮ রানে ৫ উইকেট হারানো দিল্লিকে শেষ পর্যন্ত ১৭২ রান পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান ওয়ার্নার-অক্ষর জুটি। ৪৭ বলে ৬ চারে করেন ৫১ রান দিল্লি অধিনায়ক। অপর পাশে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে মাত্র ২৫ বলে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ৫৪ রান করেন অক্ষর।
ব্যাট হাতে এক বল মোকাবিলায় ১ রানে অপরাজিত থাকেন দ্য ফিজ। মুম্বাইয়ের হয়ে বল হাতে চাওলা ও জেসন বেহেন্ড্রফ ৩ টি করে উইকেট পান। এছাড়া রিলে মেরিডিথ ২টি ও শোখিন পান ১ উইকেট।
জবাব দিতে নেমে দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও ঈশান কিষাণের জুটিতে দারুণ শুরু পায় মুম্বাই। দুজন মিলে তুলে ফেলেন ৭১ রান। তবে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন ঈশান। ফেরার আগে ২৬ বলে ৩১ রানের ইনিংস আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর তরুণ তিলক ভার্মাকে নিয়ে আরও পঞ্চাশের বেশি রান যোগ করেন মুম্বাই অধিনায়ক। এর মাঝে ২৩ ইনিংস পর আইপিএলে ফিফটি তুলে নেন রোহিত। ফলে দিল্লির কোনো বোলারই সেভাবে চাপ বাড়াতে পারছিলেন না।
তবে ১৫তম ওভারে বোলিংয়ে এসে মুম্বাইকে প্রথম চাপে ফেলেন মোস্তাফিজ। নিজের প্রথম ওভারে ১৩ রান খরচ করা ফিজ ওই ওভারে দেন মাত্র ২ রান। আর এতে মুম্বাইয়ের সামনে শেষ ৩০ বলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫০ রানের।
কিন্তু পরের ওভারে মুকেশ কুমার আক্রমণে এসেই প্রথম তিন বলে ১৬ রান খরচ করে বসেন। যদিও শেষ দুই বলে ৪১ রানে ব্যাট করা তিলক ভার্মা ও সূর্যকুমার যাদবকে ফেরান তিনি। এ নিয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে শেষ ছয় ম্যাচে চতুর্থবাড় গোল্ডেন ডাক মারেন সূর্য।
১৭তম ওভারে আবারও বল হাতে নেন মোস্তাফিজ। সে ওভারে ৮ রান খরচে গুরুত্বপূর্ণ ১টি উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ। ৪৫ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলা রোহিতকে বিদায় করেন টাইগার পেসার। পরের বলে বাউন্ডারি হাঁকান ক্রিজে নতুন আসা ক্যামেরন গ্রিন।
১৮তম ওভারে এনরিখ নরকিয়া মাত্র ৬ রান খরচ করলে খেলা জমে ওঠে। শেষ দুই ওভারে তখন ২০ রান দরকার মুম্বাইয়ের। তবে বোলিংয়ে এসে প্রত্যাশা মেটাতে ব্যর্থ হন মোস্তাফিজ। ওই ওভারে দুই ছক্কাসহ ১৫ রান দিয়ে বসেন তিনি।
শেষ ওভারে মুম্বাইয়ের লক্ষ্য ছিল মাত্র ৫ রানের। তবে প্রথম পাঁচ বল থেকে মাত্র ৩ রান দিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন নরকিয়া। তবে শেষ বলে টিম ডেভিড মিড অফে বল ঠেলে দিয়ে ২ রান নিলে জয় তুলে নেয় মুম্বাই।
দিল্লির একাদশে ফেরার ম্যাচে ৪ ওভার বোলিং করে ৩৮ রান খরচে ১ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। আর মুকেশ কুমারের ঝুলিতে গেছে ২ উইকেট।
মন্তব্য করুন