প্রতি চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অলিম্পিক গেমস। আর এই টুর্নামেন্টের জন্য অপেক্ষায় থাকেন খেলোয়াড়রা। এবার তাদের ভবিষ্যৎ কথা ভেবে দুর্দান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউএস অলিম্পিক অ্যান্ড প্যারালিম্পিক কমিটি।
আমেরিকার হয়ে অলিম্পিকে প্রতিনিধিত্ব করলেই অবসরকালীন ভাতা হিসাবে মিলবে ২ লাখ ডলার। বাংলাদেশের টাকায় যা ২ কোটি ৪৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৭৮ টাকা। বুধবার (৫ মার্চ) নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই ঘোষণা দিয়েছে ইউএস অলিম্পিক অ্যান্ড প্যারালিম্পিক কমিটি।
এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, সংঅন্তত একটি অলিম্পিক্স বা প্যারিলিম্পিক্সে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা খেলোয়াড়েরা অবসরকালীন ভাতা হিসাবে ২ লাখ ডলার পাবেন। প্রতিটি গেমসের জন্য ২ লাখ ডলার করে দেওয়া হবে। এই অর্থ দেওয়া হবে দু’টি ভাগে।
অবসর নেওয়ার পর ভাতা হিসাবে তারা চারটি কিস্তিতে ১ লাখ ডলার (প্রায় ৮৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা) পাবেন। মৃত্যুর পর বাকি ১ লাখ ডলার পাবেন তার নিকট আত্মীয়েরা। কেউ তিনটি অলিম্পিক বা প্যারিলিম্পিকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করলে ৬ লাখ ডলার অবসরকালীন ভাতা পাবেন।
মূলত, রোজ স্টিভেন্স নামে জনৈক এক ক্রীড়াপ্রেমী আমেরিকার অলিম্পিক সংস্থাকে ১০০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১৭৩৮ কোটি টাকা দান করেছেন। অলিম্পিয়ানদের অবসরকালীন ভাতা হিসাবে তার দান ব্যবহারের অনুরোধ করেছেন। স্টিভেন্সের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকার অলিম্পিক সংস্থা।
এই টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য শর্ত রয়েছে। প্রথমত, সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে অবশ্যই অবসরপ্রাপ্ত হতে হবে। দ্বিতীয়ত, অলিম্পিক বা প্যারিলিম্পিকে প্রথম বার দেশের প্রতিনিধিত্ব করা থেকে অন্তত ২০ বছর অতিক্রান্ত না হলে এই টাকা পাওয়া যাবে না। অথবা সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের বয়স ৪৫ বছর বা তার বেশি হতে হবে। এই দু’টি ক্ষেত্রের যেটি পরে হবে, সেটিই বিবেচনা করা হবে।
অর্থাৎ কেউ ৩০ বছর বয়সে প্রথম বার আমেরিকার হয়ে অলিম্পিক বা প্যারিলিম্পিক নামলে ভাতা পাওয়ার জন্য তার বয়স হতে হবে ৫০ বছর। আবার কেউ ২০ বছর বয়সে প্রথম অলিম্পিক বা প্যারিলিম্পিক দেশের প্রতিনিধিত্ব করলে এবং ৪০ বছর বয়সে অবসর নিলে, তাকে ৪৫ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আমেরিকার অলিম্পিক সংস্থার প্রধান জেন সিকেস বলেছেন, ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ নিজেদের জীবন খেলাধুলার জন্য উৎসর্গ করেন। তারা অন্য কোনো কাজ করেন না। আয়ের অন্য কোনো উৎস তাদের থাকে না। অনেকেই ২৫ বা ৩০ বছর বয়সে এসে আর্থিক সমস্যায় পড়েন। অনেকেই খেলোয়াড় জীবনে ভবিষ্যতের জন্য যথেষ্ট অর্থ সঞ্চয় করে উঠতে পারেন না। নতুন এই প্রকল্প আমাদের খেলোয়াড়দের আরও নিশ্চিন্তে পারফর্ম করার সুযোগ করে দেবে।
আরটিভি/এসআর/এআর