• ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি রবিউল হুসাইনের মরদেহ বুধবার সকালে শহীদ মিনারে নেয়া হবে

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৬ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:২২
একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন,
একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন

একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনের মরদেহ আগামীকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে এবং দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বাসস’কে একথা জানিয়ে বলেন, এর আগে সকাল ১০টায় বাংলা একাডেমিতে তাঁর মরদেহ আনা হবে। জোহরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজার পর মরদেহ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও স্থপতি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হবে। বিকেলে তাঁর মরদেহ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী আয়োজন উপকমিটি’র সদস্য রবিউল হুসাইনের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বার্তায় শোক প্রকাশ এবং প্রয়াতের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
এছাড়াও স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম এবং কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী কবির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ এবং আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কবী রবিউল হুসাইনের মৃত্যুতে পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক কবী তারিক সুজাত গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে প্রখ্যাত কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনের বাসভবনে গিয়ে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। সেখানে কিছু সময় অবস্থান করে তিনি কবির পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান ও সান্ত¦না দেন।
রবিউল হুসাইন আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। সকালে হাসপাতাল থেকে রবিউল হুসাইনের মরদেহ বাসায় নেয়া হয়। পরে এখান থেকে বারডেমের হিমঘরে রাখা হয়।
জানা গেছে, রবিউল হুসাইন রক্তের সংক্রমণে ভুগছিলেন। দুই সপ্তাহ ধরে তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার তাঁকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছিল।
ভাষা ও সাহিত্যে অবদান রাখায় ২০১৮ সালে একুশে পদক পান কবি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, স্থপতি রবিউল হুসাইন। পেশা স্থাপত্যশিল্প হলেও তিনি একাধারে স্থপতি, কবি, শিল্প-সমালোচক, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক ও সংস্কৃতিকর্মী। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষকও ছিলেন তিনি।
কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস মিলিয়ে দুই ডজনের বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। ১৯৬৮ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং স্থপতি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
রবিউল হুসাইন ১৯৪৩ সালের ৩১ জানুয়ারিতে ঝিনাইদহের শৈলকুপার রতিডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । কুষ্টিয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে তিনি ভর্তি হন ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজির (বর্তমান বুয়েট) আর্কিটেকচার ফ্যাকাল্টিতে।
রবিউল হুসাইনের নকশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তি ও স্বাধীনতা তোরণ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ফটক, ভাসানী হল, বঙ্গবন্ধু হল, শেখ হাসিনা হল, ওয়াজেদ মিয়া সায়েন্স কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম ও একাডেমিক ভবন নির্মিত হয়েছে।
বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য ,শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন রবিউল।
রবিউল হুসাইনের লেখা উল্লেখযোগ্য বই হলো ‘কী আছে এই অন্ধকারের গভীরে’, ‘আরও উনত্রিশটি চাঁদ’, ‘স্থিরবিন্দুর মোহন সংকট’, ‘কর্পূরের ডানাঅলা পাখি’, ‘আমগ্ন কাটাকুটি খেলা’, ‘বিষুবরেখা’, ‘দুর্দান্ত’, ‘অমনিবাস’, ‘কবিতাপুঞ্জ’, ‘স্বপ্নের সাহসী মানুষেরা’, ‘যে নদী রাত্রির’, ‘এইসব নীল অপমান’, ‘অপ্রয়োজনীয় প্রবন্ধ’, ‘দুরন্ত কিশোর’, ‘বাংলাদেশের স্থাপত্য সংস্কৃতি’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘গল্পগাথা’, ‘ছড়িয়ে দিলাম ছড়াগুলি’ ইত্যাদি।

এসজে

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়