টাঙ্গাইলে যমুনাসহ সব নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ঝিনাই নদীর পানি ১৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা ও গাবসারা, কালিহাতী উপজেলার গোবিন্দপুর, গোহালিয়া বাড়ি ইউনিয়ন এবং টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। যাতায়াতে বেড়েছে দুর্ভোগ। পানির নিচে চলে গেছে কয়েক হাজার একর জমির পাট, আউশ ধান, তিল, বাদামসহ বিভিন্ন ফসল।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আহসানুল বাশার আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, বন্যায় যমুনা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় পাট, আউশ ধান, তিল, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি এক সপ্তাহের মধ্যে নেমে গেলে ফসলের খুব একটা ক্ষতি হবে না। তার বেশি দীর্ঘস্থায়ী হলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভূঞাপুর উপজেলার চিতুলিয়া পাড়া ও ভালকুটিয়া এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় লোকজন। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পাড়ের মানুষদের।
অন্যদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাসাইল উপজেলার বাসাইল দক্ষিণ পাড়া-বালিনা সড়কের একটি অংশ পানি তীব্র স্রোতে ভেঙে গেছে। এর ফলে বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে ওই এলাকার লোকজনের যাতায়াতে দুর্ভোগসহ পানিবন্দি হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বন্যার পানির প্রবল স্রোতে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আনালিয়া বাড়ি এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে বাধঁটি ভেঙে যায়। বাধেঁর ভাঙা অংশ দিয়ে প্রবল বেগে প্রবেশ করছে পানি। এতে করে আনালিয়া বাড়ি, শল্লা, দেউপুর, নরদহি, নারান্দিয়া, বাবলা, ঘরিয়া, রৌহা, ভাঙাবাড়িসহ কমপক্ষে ১৫ গ্রাম প্লাবিত হবে বলে জানিয়েছেন শল্লা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, যমুনা ও ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও অন্য সব নদীর পানিও বাড়ছে। এতে করে জেলায় বড়সড় একটি বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গণি আরটিভি নিউজকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।