নওগাঁর রাণীনগরে এক গৃহবধূকে (১৯) মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারধর করে মাথার চুল কেটে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই গৃহবধূর স্বামীকেও মারপিট করেছেন তারা। গতকাল রোববার (১৭ জুলাই) দিনগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার কালীগ্রাম কয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহবধুর শ্বশুর কালীগ্রাম কয়াপাড়া গ্রামের রাজ্জাক সিপাই (৬০), ভাসুর দেলোয়ার হোসেন (৩৫) ও ননদ রাজিয়া সুলতানাকে (৩৮) আটক করেছে থানা পুলিশ।
গৃহবধূর স্বামী রেজাউল করিম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে আমার এক বন্ধুকে নিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী এবং ওই বন্ধু মিলে একসঙ্গে বাড়িতে রাতের খাবার খাচ্ছিলাম। এ সময় আমার ঘরে পরপুরুষ ঢুকেছে সন্দেহে বাহির থেকে পরিবারের লোকজন বাড়ির দরজায় শিকল তুলে দেয়। এরপর আমাদের খাবার খাওয়া শেষে আমি বাহিরে ডাকাডাকি করলে আমার বাবা, বড় ভাই, বোন ও ভাবি শিকল খুলে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারপিট করে। এ সময় আমার স্ত্রীর ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার শ্বশুরের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে শুক্রবার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার বাড়িতে এলে তাদের সঙ্গে আমার স্ত্রীকে তারা বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
রেজাউল আরও জানান, রোববার সকালে আমি আমার স্ত্রীকে নিতে শ্বশুরবাড়ি আদমদিঘী উপজেলার কালাইকুলি পালোয়ানপাড়া গ্রামে যাই। শ্বশুর বাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে এদিন রাত ৮টার দিকে বাড়িতে আসি। এরপর বাড়িতে ঢুকতে লাগলে আমার বাবা, বড় ভাই, বড় বোনসহ আমার পরিবারের লোকজন আমাকেসহ আমার স্ত্রীকে মারপিট করে। এ সময় তারা আমার স্ত্রীর মাথার চুল কেটে নির্যাতন করে।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ জানান, বিয়ের পর থেকেই মাঝে-মধ্যেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাকে মানসিক নির্যাতন করত। এদিন তারা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে মারপিট করাসহ মাথার চুল কেটে নির্যাতন করেছেন। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ।
এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে সোমবার (১৮ জুলাই) থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহবধূর শশুর, ভাসুর ও ননদকে আটক করেছে থানা পুলিশ। আর মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।