রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের রিক্তা আক্তার নামের এক ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকার পূর্বপাড়ার ধরমপুরের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
-
আরও পড়ুন... কোচিং সেন্টারের আয় দিয়ে সংসার চলতো সজিবের
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত রিক্তা আক্তারের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া কুমারখালির জোতপাড়া গ্রামে। তিনি তার স্বামীর সঙ্গে বিনোদপুর এলাকার পূর্বপাড়ার ধরমপুরের মুহিত ভিলায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর বলেন, ঘটনাটি শোনার পরপরই আমি মেডিকেল গিয়েছিলাম। মরদেহ পরবর্তী আইনি কার্যক্রমের জন্য রামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিহতের যেসব লক্ষণ আমরা দেখেছি, তাতে এটিকে আত্মহত্যা মনে হয়নি। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। বর্তমানে নিহতের স্বামীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
নিহত শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুইবছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ফলিত গণিত বিভাগে ইসতিয়াক রাব্বির নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তার। কলেজ জীবন থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। তারা দুইজনই ব্যাচমেট। একবছর ধরে তারা দুইজন বাসা ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থাকছেন।
এদিকে মৃত রিক্তার স্বামীর বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন ইসলাম জানান, কয়েক দিন ধরে ওদের মধ্যে একটু ঝামেলা চলছিল। কাল বিকেলে রাব্বি আমাদের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়েছিল। এ সময় বলেছিল, ওর বউ নাকি অন্য একটা ছেলের সঙ্গে ফেক আইডি খুলে কথা বলে। এটা নিয়ে দুপুরে ওদের দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়েছে।
আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো.হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, বিষয়টা শুনে আমি মেডিকেলে দেখতে যাই। আমি এই ঘটনার পুলিশি তদন্ত দাবি করছি। একজন শিক্ষার্থীর এমন অকালমৃত্যু কখনোই কাম্য নয়। নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি বিভাগের পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা জানান তিনি।
-
আরও পড়ুন... একসঙ্গে চলতেন তারা, একসঙ্গেই মারা গেলেন
মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন জানান, রাত ১২টার দিকে মৃতের স্বামীসহ আরও কয়েকজন তাকে মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এখন মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। রিপোর্ট পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে।