ময়মনসিংহ সদরের ফকিরাকান্দা বয়রা এলাকার ফখরুল ইসলাম (৬০) দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। এরপর জামিনে বের হয়ে ফের হত্যা করেন প্রথম স্ত্রীকে। ওই মামলায় ফখরুলকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ পারভীন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলাম ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ফকিরাকান্দা বয়রা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্র জানায়, আসামি ফখরুল ২০০১ সালের ১৬ আগস্ট তার দ্বিতীয় স্ত্রী একজন বিহারী নারী কানিজ ওরফে তানিয়াকে হত্যা করেন। এর দায়ে ২০০৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ওই মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে ২০১২ সালের ২৬ মার্চ বিকেল ৩ টায় তার ঘরে ঘুমিয়ে থাকা প্রথম স্ত্রী শিরিনাজ বেগমকে দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন।
এ মামলা চলাকালে আসামি নিজেকে মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি করলে আদালতের নির্দেশে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ড বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে সুস্থ ঘোষণা করে।
একইসঙ্গে ২০০১ সালের মামলার ঘটনার সময়ও তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল বলে দাবি করলে পাবনা মানসিক হাসপাতাল থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করে আদালত নিশ্চিত হয় যে, ওই সময়কালেও তিনি স্বাভাবিক ছিলেন বিধায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি না করে ফেরত পাঠায়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত অবস্থায় জামিনে মুক্তি পেয়ে আসামি দ্বিতীয়বার একই ধরনের অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে আদালত প্রমাণ পায়। সেই প্রেক্ষিতে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩০৩ ধারায় নির্ধারিত বিধান অনুসারে একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন, পাবলিক প্রসিকিউটর বীর মুক্তিযোদ্ধা কবীর উদ্দিন ভূঁইয়া। আসামিপক্ষে রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবী ছিলেন মোকাম্মেল হক শাকিল।