ঢাকাশুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

বিসিএসের স্বপ্ন পূরণ হলো না শামিমার

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩ , ১০:৪১ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

বিসিএসের স্বপ্ন পূরণ হলো না চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার শামিমা খাতুনের। চলতি বছরের জুন মাসে বিয়ে তার। বিয়ের পর বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে বইপত্রসহ সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি যান তিনি। শামিমার স্বপ্ন ছিল সরকারি কর্মকর্তা হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো তার। শ্বশুর বাড়ি থেকে ফিরলেন লাশ হয়ে।

বিজ্ঞাপন

একই উপজেলার ঘোলদাড়ি গ্রামের কুটিপাইকপাড়ার ভূসিমাল ব্যবসায়ী শাহাবুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় শামিমার। বিয়ের কয়েক দিন যেতে না যেতেই যৌতুকের দাবিতে শামিমার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। মেয়ের নির্যাতন সইতে না পেরে দুই লাখ টাকাও দেন শামিমার বাবা। কিন্তু মাস না পেরোতেই আবারও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে শামিমার স্বামী। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শামিমার ওপর আবারও শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়।

শামিমা খাতুন আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি গ্রামের মোতাহার হোসেন পান্নুর মেয়ে।

বিজ্ঞাপন

দিনদিন নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলছিল। বিষয়টি জানতে পেরে শামিমাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন তার বাবা মোতাহার হোসেন পান্নু। পরে স্বামীর অনুরোধে তাকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো হয়।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ি গ্রামের কুটিপাইকপাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে শামিমা খাতুনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শামিমা খাতুন মেধাবী ছিলেন। নিজের গ্রামের বিদ্যালয় থেকেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক গণ্ডি পেরিয়ে আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে অনার্স শেষ করেন। ঝিনাইদহের সরকারি কে সি কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এরপর বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল শামিমা। তার আগেই লাশ হয়ে ফিরতে হলো। পরিবারের অভিযোগ, নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে স্বামী শাহাবুল। 

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বয়োবৃদ্ধ বাবা মোতাহার হোসেন পান্নু তার নিজের সম্পত্তি তিন মেয়ের নামে ভাগবাটোয়ারা করে দিয়েছেন। সেই জমি বিক্রি করে টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকেন শামিমার স্বামী শাহাবুল। শামিমা জমি বিক্রিতে সম্মত না হওয়ায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে স্বামী। ধারণা করা হচ্ছে এসব কারণেই শামিমাকে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার প্রচার করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে। 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |