শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে যা করবেন
সবার সামনে নিজেকে মেলে ধরা সহজ নয়। বাসায় শিশু অনেক কথা বলে, কিন্তু স্কুলের মঞ্চে উঠলেই আর কিছু বলে না। একরাশ জড়তা যেন গ্রাস করে বসে তাকে। এ ব্যাপারে অনেক শিশুরই আত্মবিশ্বাসের অভাব আছে। কারও ক্ষেত্রে হয়তো একটু প্রশংসা বা উৎসাহ তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কাজে দেয়। কারও ক্ষেত্রে হয়তো কাউন্সেলিং প্রয়োজন হয়। যা শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কাজ দেবে। সন্তানের পাশে থেকে তার ভয়-দ্বিধা কাটাতে সাহায্য করতে হবে মা-বাবাকে।
আত্মবিশ্বাসের অভাব কিংবা সবার সামনে জড়তা কাজ করা এক ধরনের ভীতি, যা ধীরে ধীরে কাটাতে হবে। আমরা অনেক সময় শিশুদের সঙ্গে তার বন্ধুদের তুলনা করে ফেলি বা ছোটদের বলি ‘এই রকম করলে লোকে কী বলবে!’ এতে ওরা নিজেদের অজান্তেই মনের মধ্যে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে নেয়। অনেক সময় দেখা যায় বাড়িতে শিশু সব পড়াশোনা পারছে, কিন্তু স্কুলে গিয়ে আর পারছে না। পরীক্ষার খাতায় হয়তো লিখে আসছে, কিন্তু মৌখিক পরীক্ষার সময়ে এলোমেলা করে ফেলছে। এসব ক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলুন। অন্য সময়ে ক্লাসে সন্তানের আচরণ কেমন থাকে, সেটা জানার চেষ্টা করুন। বাড়িতে নিজেই মৌখিক পরীক্ষা নিন। তবে বকা কিংবা মারধর করবেন না কোনোভাবেই। এতে শিশু আরো গুটিয়ে নেবে নিজেকে।
ভুলে যাওয়া কিংবা না পারা কোনো দোষ নয়। এগুলো সাময়িক ব্যাপার, যা অধ্যবসায় এবং ধৈর্য্যের মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। বাড়িতে যখন আপনার সামনে সে গাইবে-নাচবে রেকর্ড করে রাখুন। ওকে দেখান সে আসলে কতটা ভালো করেছে বা কোন জায়গাগুলো আরো ভালো করা যায়। সন্তানকে উৎসাহ দিতে হবে সবসময়।
মজার ছলে শিশুর যেকোনো ধরনের ভয় কাটানোর চেষ্টা করুন। খেলার মাধ্যমে তাকে পড়তে, পারফর্ম করতে উৎসাহ দিন। শিশুর বন্ধুদের সঙ্গেও এমন খেলা করতে বলবেন। পরিবেশ হালকা রাখতে শিশুর বন্ধুদের মধ্যে বা বাড়িতে কোনো বিষয়ে একসঙ্গে আলোচনা করতে পারেন।
সন্তানের কিছু আচরণে লক্ষ রাখতে বলছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। সামাজিকভাবে মেলামেশা করতে তার সমস্যা হচ্ছে কি না, স্কুলে পড়া বুঝতে পারছে কি না, বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে সমস্যা হচ্ছে কিনা-এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন। যদি প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক উত্তর পান, তা হলে অতিরিক্ত চিন্তার কিছু নেই। সেটা না হলে কাউন্সেলিংয়ের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
মন্তব্য করুন