রান্নাঘরে ব্যবহৃত কিছু জিনিস আপনার হরমোনের ভারসাম্যকে এমনভাবে প্রভাবিত করতে পারে, যেগুলো আপনি হয়তো ধারণা করতে পারবেন না। অনেক সময়, আমরা খাবার তৈরি করার সময়ে কিছু জিনিস ব্যবহার করি, যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে, কিছু সাধারণ জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং সচেতনতা অবলম্বন করে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সাধারণ রান্নাঘরের জিনিস রয়েছে যেগুলো মহিলাদের হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে পারে। চলুন, জেনে নিই সেই জিনিসগুলো কী কী:
প্লাস্টিকের পাত্র
বেশিরভাগ প্লাস্টিকের পাত্রে একটি রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যাকে ‘বিপিএ’ বা বিসোফেনল এ বলা হয়, যা হরমোনের নিঃসরণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই, প্লাস্টিকের বদলে কাচ বা স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র ব্যবহার করা ভালো।
নন-স্টিক প্যান
নন-স্টিক প্যানগুলো থেকে ক্ষতিকারক রাসায়নিক নির্গত হয়, যা থাইরয়েডের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই প্যানগুলো ক্ষয়ে গিয়ে খাবারে ক্ষতিকারক পদার্থ মিশিয়ে দেয়। এই ধরনের পাত্রের পরিবর্তে ঢালাই লোহা বা স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র ব্যবহার করা উচিত।
পরিশোধিত রান্নার তেল
পরিশোধিত তেল প্রক্রিয়াজাত হওয়ায় হরমোনের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে এবং শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই, রিফাইন্ড তেলের পরিবর্তে ঘি, নারিকেল তেল বা কোল্ড প্রেসড তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
টি-ব্যাগ
টি-ব্যাগ প্রাথমিকভাবে সুবিধাজনক হলেও অধিকাংশ টি-ব্যাগ মাইক্রোপ্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে এবং হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। তাই, টি-ব্যাগের পরিবর্তে চা পাতা ব্যবহার করা উচিত।
টিনজাত খাবার
বেশিরভাগ টিনজাত খাবারে ‘বিপিএ’ নামে একটি রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা খাবারের মধ্যে মিশে গিয়ে হরমোনজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই, টিনজাত খাবার থেকে বিরত থাকা ভালো।
অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল
অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে খাবার মুড়ে রাখলে গরম বা অ্যাসিডিক খাবারের সাথে এটি মিশে যেতে পারে, যা বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে। তাই, এটি ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকা উচিত।
প্লাস্টিকের মোড়ক
প্লাস্টিকের মোড়কেও এমন রাসায়নিক থাকে, যা খাবারের সঙ্গে মিশে হরমোনজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এর পরিবর্তে কাচের পাত্র ব্যবহার করা নিরাপদ।
হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি। নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, এবং সচেতনতা আমাদের শরীর ভালো রাখতে সহায়তা করে। রান্নাঘরের কিছু সাধারণ জিনিসপত্র সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং প্রয়োজনে সেগুলো পরিবর্তন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরটিভি/জেএম