ঢাকাশনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়কের অবসর

স্পোর্টস ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ০২:৪০ পিএম


loading/img

ওয়ানডে বিশ্বকাপে রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। অথচ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে গর্ব করার মতো কিছুই ছিল না অজিদের। তবে সেই আক্ষেপটাই অস্ট্রেলিয়া ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মিটিয়েছিল অ্যারন ফিঞ্চের হাত ধরে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এই সংস্করণে রেকর্ড সংখ্যক ৭৬ ম্যাচে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যান এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ব্যাট-প্যাড তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

বিজ্ঞাপন

অস্ট্রেলিয়া দলের এই ওপেনার ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যও ছিলেন। গত সেপ্টেম্বর মাসেই ফিঞ্চ ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। টেস্টে সেভাবে সুযোগ না পেলেও মেলবোর্নে ভারতের বিপক্ষে ২০১৮ সালে সবশেষ খেলেছেন তিনি। তবে টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়া দলের নিয়মিত মুখ ছিলেন ফিঞ্চ। কিন্তু এবার ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। 

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মেলবোর্নে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে নিজেই আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন ৩৬ বছর বয়সী অ্যারন ফিঞ্চ। ফলে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এই ব্যাটসম্যানকে আর কখনও দেশের হয়ে খেলতে দেখা যাবে না। তবে ঘরোয়া ক্রিকেট ও ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আরও কিছুদিন খেলা চালিয়ে যাবেন ফিঞ্চ। 

বিজ্ঞাপন

অবসরের সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে ফিঞ্চ গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমি নিজেই বুঝতে পারলাম যে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলতে পারব না। তাই সরে যাওয়ার জন্য এটাই আদর্শ সময় বলে মনে করছি। এতে দল নতুন করে তৈরি হতে পারবে বলে মনে করছি।'

বিদায়বেলায় স্বজন, বন্ধু ও ভক্তদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এই ডানহাতি ওপেনিং ব্যাটার বলেন, 'আমি আমার পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে আমার স্ত্রী এমি, আমার সতীর্থ, ক্রিকেট ভিক্টোরিয়া, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার সব ক্রিকেটারকে ধন্যবাদ আমাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য। আমাকে ভালোবাসা দেওয়ায় সমর্থকদেরও জানাই কৃতজ্ঞতা।'

বিজ্ঞাপন

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট দিয়েই ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল ফিঞ্চের। দেশের হয়ে মোট ১০৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ৭৬টিতেই অধিনায়ক ছিলেন তিনি। যেখানে ৩৪.২৮ গড় এবং ১৪২.৫ স্ট্রাইকরেটে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ১২০ রান করেছেন ফিঞ্চ। 

গত অক্টোবরে নিজ দেশে বিশ্বকাপের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪ বলে ৬৩ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংসটা ক্যারিয়ারের শেষ হয়ে রইল ফিঞ্চের। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটিও তার দখলে রয়েছে। ২০১৮ সালের জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ৭৬ বলে ১৭৩ রান করেছিলেন তিনি। তার আগে ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৬ রানের ইনিংস খেলে ব্যক্তিগত ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড করেছিলেন তিনি। যেখানে ফিঞ্চ ভেঙেছিলেন নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ১২৩ রানের রেকর্ড। 

ক্রিকেট বিশ্বে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ডেভিড ওয়ার্নার-অ্যারন ফিঞ্চ জুটি সেই সময়ে ক্রিকেটের সংজ্ঞাটাই পাল্টে দিয়েছিলেন। তাদের দুজনের আগ্রাসী মানসিকতার ব্যাটিং ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আনন্দের খোরাক জুগিয়েছে অনেক দিন ধরে। ফিঞ্চ একদিনের ক্রিকেটে ১৪৬ ম্যাচে ৫হাজার ৪০৬ রান করেছেন। এছাড়া ৫ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে দুই ফিফটিতে ২৭৮ রান করেছিলেন তিনি। 

ফিঞ্চের অধিনায়কত্বে ভারতের মাটিতে ওডিআই সিরিজ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া আইপিএলে একাধিক ফ্র‍্যাঞ্চাইজির হয়ে মাঠে নেমেছেন অধিনায়কত্ব সামলেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও বিগব্যাশে মেলবোর্ন রেনেগেটসের হয়ে খেলবেন ফিঞ্চ। এছাড়া ভিক্টোরিয়া রাজ্য দলের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটও মাঠ মাতাবেন তিনি।

টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা ফিঞ্চের বিদায়ে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। সংস্থাটির প্রধান ডা. লেচলান হেন্ডারসন বলেছেন, 'অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে) জেতানো মাত্র পাঁচজন অধিনায়কের একজন ফিঞ্চ। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে তার বিশেষ জায়গা থাকবে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে সেরা নিবেদন দেখিয়ে খেলার জন্য তাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। তার পরবর্তী জীবনের জন্য শুভকামনা।'

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |