শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে রোমাঞ্চকর এক জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। লঙ্কানদের দেওয়া ২৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পঞ্চম দিন ম্যাচের শেষ বলে ২ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পায় কিউইরা। এই হারে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল দিমুথ করুনারত্নের দলের।
ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে প্রথম দুই দিনে ম্যাচের রাশ ছিল শ্রীলঙ্কার হাতে। তবে তৃতীয় দিন থেকে শ্রীলঙ্কাকে পাশ কাটিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে নিতে থাকে স্বাগতিকরা। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে ম্যাচের পরিস্থিতি দুই দলের জন্য সমান জায়গায় দাঁড়ায়। এতে যে কেউই ম্যাচ জিততে পারত। তবে পঞ্চম দিনে প্রকৃতির বাধা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত শেষ বলের লড়াইয়ে বাজিমাত করল কেইন উইলিয়ামসনরা।
এই ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩৫৫ রান সংগ্রহ করেন শ্রীলঙ্কা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩৭৩ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। এরপর ১৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দফায় ব্যাট করতে নেমে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের সেঞ্চুরিতে ৩০২ রান তোলে লঙ্কানরা।
ফলে নিউজিল্যান্ডের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ২৮৫ রানের। চতুর্থ দিন শেষে কিউইরা তাদের শেষ ইনিংসে তোলে ১ উইকেটে ২৮ রান। সুতরাং, শেষ দিনে জয়ের জন্য ৯ উইকেটে ২৫৭ রান তুলতে হতো স্বাগতিকদের। তবে বৃষ্টির জন্য দিনের প্রথম সেশনের খেলা ভেস্তে যায়।
তাই নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট অমিমাংসিতই থেকে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে দ্বিতীয় সেশনে খেলা শুরু হলে জয়ের জন্য ৫৩ ওভার হাতে ছিল নিউজিল্যান্ডের সামনে। এই সময়েই হিসাবটা বদলে দেয় নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা। কার্যত, ওয়ানডে ক্রিকেট স্টাইলে রান তুলে ম্যাচ নিজেদের করে নেয় কিউইরা।
ম্যাচের শেষ পাঁচ ওভারে ৫ উইকেট হাতে রেখে ৩৭ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। সেখান থেকে ৩ উইকেট হারিয়ে ম্যাচের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে দারুণ জয় পায় নিউজিল্যান্ড। ব্যাট হাতে ১২১ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন। এ ছাড়াও ড্যারিল মিচেল ৮১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন।
এই জয়ে ক্রিকেট ইতিহাসের ১৪৬ বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার শেষ বলে জয়ের ঘটনা ঘটল। দীর্ঘ ৭৫ বছর আগে, অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের ২০ ডিসেম্বর স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ডারবান টেস্টে শেষ বলে জিতেছিল সফরকারী ইংল্যান্ড। সেই পুরনো স্মৃতিই যেন নতুন করে রোমন্থন করলেন ব্লাক ক্যাপসরা।