ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই দাপুটে সব জয় পাচ্ছে ভারত। একের পর এক ম্যাচ জিতে প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে রোহিত শর্মার দল। টানা নয় ম্যাচে মাঠে নেমে সবকটি জিতে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগোচ্ছে তারা। প্রথম সেমিফাইনালে স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড।
এতে এবার বিশ্বকাপের শিরোপার দাবিদার তালিকায় শুরুতেই ভারতের নাম রাখছেন বিশ্লেষকরা। ভারতের সাবেক কোচ ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রীও সেটাই মনে করেন। তার মতে, এবার বিশ্বকাপ না জিততে পারলে পরবর্তী বিশ্বকাপ জেতার কথা ভাবতে আরও তিন বিশ্বকাপ লেগে যাবে ভারতের।
গত বিশ্বকাপে এই নিউজিল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিয়েছিল ভারত। এবার ঘরের মাঠে নতুন গল্প লিখতে চায় রোহিতের দল। তা করার জন্য সব ধরনের উপকরণই আছে এই দলে। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা সবাই আছেন সেরা ফর্মে। মূলত এ কারণেই শাস্ত্রী বলছেন, এবারই সেরা সময়।
একটি ইউটিউব পডকাস্টে শাস্ত্রী বলেছেন, ‘পুরো দেশ উন্মাদ হয়ে যাচ্ছে। শেষবার ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল এক যুগ আগে। ১২ বছর পর আবার বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ তাদের সামনে। যেভাবে তারা খেলছে, মনে হচ্ছে, এটাই তাদের সেরা সুযোগ।’
অধিনায়ক রোহিতের বর্তমানে বয়স ৩৬ ও কোহলির ৩৫ বছর। তারা দুজনের শেষ বিশ্বকাপ হতে পারে এটাই। এছাড়া দলে রয়েছেন বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ সিনিয়র ক্রিকেটার। সেই কথাটাই যেন মনে করিয়ে দিয়ে ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই ক্রিকেটার।
শাস্ত্রী বলেন, ‘এবার যদি তারা বিশ্বকাপ জিততে না পারে, তাহলে পরবর্তী বিশ্বকাপ জেতার কথা ভাবতেও হয়তো আরও তিনটি বিশ্বকাপ লেগে যাবে। এই দলটা এমন যে, সাত-আটজন ক্রিকেটার তাদের ফর্মের চূড়ায় আছেন। এটা হতে পারে তাদের শেষ বিশ্বকাপ। তারা যেভাবে খেলছে, এবারের বিশ্বকাপ জেতার মতো দল তাদের আছে।’
জশপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি, মোহাম্মদ সিরাজ থেকে স্পিনার কুলদীপ যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা—ভারতের প্রতিটি বোলারই আছেন দুর্দান্ত ছন্দে। প্রতি ম্যাচেই দাপট দেখাচ্ছে তারা। শাস্ত্রী মনে করছেন, ভারতের এই বোলিং আক্রমণই গত ৫০ বছরের সেরা।
তিনি বলেছেন, ‘অসাধারণ, তবে এটা হুট করে হয়নি। তারা একসঙ্গে চার-পাঁচ বছর ধরে খেলছে। সিরাজ তিন বছর আগে এই দলে যোগ দেয়। এই বিশ্বকাপে তারা খুব কম শর্ট বল করেছে। শর্ট বল তারা ব্যবহার করেছে চমকে দিতে। ৯০ শতাংশ সময়ে তারা স্টাম্পে বোলিং করেছে, যেটা ভারতে করতেই হবে। সিম পজিশনের কারণে তারা সুইং পাচ্ছে আর সেটা ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক সমস্যার কারণ হচ্ছে। সাদা বলে ক্রিকেট শুরু হওয়ার পর ৫০ বছরে এটাই সেরা বোলিং আক্রমণ।’
২০১১ সালে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা-ভারত যৌথভাবে মিলে আয়োজন করেছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সেবার ফাইনাল হয়েছিল মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। সেখানে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। এবার আহমেদাবাদে কি রোহিত শর্মারা পারবে সেই ট্রফি পুনরুদ্ধার করতে? সেজন্য আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।