গত বছর বেতন ইস্যুতে এবং কোনো ম্যাচ না পাওয়ায় বাফুফের ওপর রাগ করে ক্যাম্প ছেড়েছিলেন বেশ কয়েকজন নারী ফুটবলার। এবার বাফুফের ওপর অপেশাদার আচরণের অভিযোগ এনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাফজয়ী ফুটবলার কৃষ্ণা রানী সরকার।
ইনজুরির কারণে ২০২২ সাল থেকে জাতীয় দলের বাইরে রয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই ফরোয়ার্ড। ইনজুরি পুরোপুরি সেরে না ওঠায় চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে দুই ম্যাচের স্কোয়াডে জায়গা হয়নি কৃষ্ণার। এরপরই বাফুফের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে বাফুফের বিরুদ্ধে উন্নত চিকিৎসা না করানোর অভিযোগ আনেন সাফজয়ী এই ফুটবলার। এর পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তির মুখে পড়তে যাচ্ছেন তিনি।
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে কৃষ্ণা লিখেছেন, ‘২০২২ এ সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে ইঞ্জুরিতে। প্রায়ই দেড় বছর হয়ে গেছে। পা আগের থেকে ভালো, কিন্তু এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়ে উঠতে পারিনি। প্র্যাকটিস করলেই ব্যথা হয়। বাফুফে ফিজিও দিয়ে আমার ট্রিটমেন্ট চলছে। সবাই জানে ইনজুরিটা অনেক রেয়ার। ব্যথা নিয়েই প্র্যাকটিস করতেছি। দেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি।
২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ফিজিও দেবাশীষ চৌধুরী স্যারকে দেখিয়েছিলাম। উনি প্রায় আমাকে অনেক দিন দেখেন, যখন ব্যথা কমতে ছিল না। স্যার বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়া, ইন্ডিয়া গিয়ে ট্রিটমেন্ট করাতে।
কিন্তু যখন আমি বাফুফে জানাই, উনারা বলেন আরও কিছুদিন দেশে ডাক্তার দেখাতে। আমি অনেক দিন তাদেরকে ইন্ডিয়াতে যাওয়ার কথা বলছি। কিন্তু উনারা আমার কথায় কোনো গুরুত্ব দেয়নি। আজও পর্যন্ত ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস করছি।
২০১৩ সালে অনূর্ধ্ব ১৪ দলে সুযোগ পাই এবং ২০১৪ সালে সিনিয়ার জাতীয় দলে সুযোগ পাই, সেখান থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কখনও কোনো দলের বাইরে থাকে হয়নি। প্রায় ১০ বছর একটানা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছি। টুকটাক ইনজুরিতে পড়েছি।
কিন্তু হঠাৎ করে এত বড় ইনজুরিতে পড়বো কখনও ভাবিনি। অনেক দিন রেস্টে থাকার পর আর ভালো লাগছিল না এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলাম। তাই ব্যথা নিয়ে প্রাক্টিস চালিয়ে যাচ্ছি।
চায়নাতে যখন এশিয়ান গেম খেলতে যাই, তিনটা ম্যাচ ব্রাঞ্চে বসে কাটিয়েছে। ব্যাক টু ব্যাক দুইটা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে গেলাম। একজন প্লেয়ার হিসেবে এইটা মেনে নেওয়া খুব দুঃখজনক। কষ্ট একটাই কখনও কোন ট্রিমমেট, প্লেয়ার বা কোচ কে বলতে দেখলাম না কৃষ্ণা ইনজুরি তাকে তাড়াতাড়ি ট্রিটমেন্ট করানো হোক। কারো কোনো মাথাব্যথাই নেই। ১০ বছরের পরিশ্রম এক নিমিষে শেষ।
অনেক প্লেয়ারকে দেখেছি এভাবে হারিয়ে যেতে। মনে হয় সেই দিনটা আর বেশিদিন নেই কৃষ্ণার জন্য। সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ এবং দোয়া করবেন। যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ি। আবার আগের মতো মাঠে ফিরতে পারি।