থ্রি হুইলার ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে ফরিদপুর থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকেই বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়।
সরেজমিনে আন্তজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর থেকে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, বরিশাল, শরীয়তপুর, মাগুরা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন আন্তজেলা রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ওই পথে চলাচলকারী যাত্রীদের ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে।
জানা যায়, মহাসড়কে অবৈধভাবে থ্রি হুইলার চলাচল ও যাত্রী তোলা নিয়ে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুরের নগরকান্দায় মিনিবাসের চালকদের সঙ্গে থ্রি হুইলারের শ্রমিকদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে সেটি উভয়পক্ষের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলা ঘটনা ঘটলে বাস শ্রমিকরা ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ করে বাস চলাচল বন্ধ রাখে। রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে কোনো ধরনের সমঝোতা না হওয়ায় মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল থেকেও অভ্যন্তরীণ কোনো রুটেই বাস চলাচল করেনি। এ দিন দুপুর থেকে মুন্সীবাজার এলাকায় মহেন্দ্র শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করলে ফরিদপুর থেকে দূরপাল্লার সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বুধবারও আন্তজেলা সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
গত সোমবার দুপুরে যাত্রী তোলা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে ফরিদপুরের তালমার মোড় এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক নাজমুলকে (২৫) মারপিট করে বাস শ্রমিকরা। আহত নাজমুল নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় মহেন্দ্র শ্রমিকদের হামলায় তালমার মোড় এলাকায় ৩টি বাসের কাচ ভাঙচুর ও বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী। পরে ফরিদপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাস শ্রমিকরা অতর্কিতভাবে হামলা চালালে ফরিদপুর জেলা সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি মো. রিপন (৪৫) আহত হন। এ ছাড়া ৩-৪ টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আহত সিএনজি চালককে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বাস শ্রমিকরা আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পরিবহন মালিকরাও দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুর বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, মহাসড়কে মাহেন্দ্র চলাচল বন্ধ করার জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছি। মহাসড়কে তিন চাকার যন্ত্রযান চলতে পারবে না এ বিষয়ে হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু মহাসড়কে তিন চাকার অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়নি। এখন এ পথে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল শুরু হয়েছে। ফলে আমারা যাত্রী পাচ্ছি না। এর জন্য বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে শ্রমিকরা।
তিনি বলেন, ঢাকার যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে শুধুমাত্র ফরিদপুর-ঢাকা রুটে বাস চলাচল করছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ ও আন্তজেলা পথে সব বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
ফরিদপুরের ট্রাফিক পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। অতিশিগগিরই এই সমস্যার সমাধান করা হবে।’
আরটিভি/এমকে-টি