• ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
logo
শ্রীপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১
শ্রীপুরে হাইওয়ে থানায় হামলা, ২ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ
গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা হাইওয়ে থানায় হামলা চালিয়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে থানার সীমানা প্রাচীরের ভেতরে থাকা রেকার ও থানার একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।  শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা ৩টার দিকে আন্দোলনকারী ছাত্ররা মাওনা হাইওয়ে থানায় হামলা চালায়। বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা মাওনা-শ্রীপুর সড়কের বকুলতলায় মাওনা হাইওয়ে থানায় হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা হাইওয়ে থানার সীমানা প্রাচীরের ভেতর থাকা হাইওয়ে থানার রেকার এবং টহলের কাজে ব্যবহৃত পুলিশ ভ্যানে আগুন দেয়। এর আগে দুপুরে আন্দোলনরত ছাত্ররা মাওনা চৌরাস্তার পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে অবস্থান নেয়। এ দিকে সরকার দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা মাওনা চৌরাস্তার ফ্লাইওভারের নিচে অবস্থান নিলে উত্তেজনা দেখা যায়। কিছু সময় পর বিক্ষোভকারীরা লাঠিসোঁটা হাতে মিছিল নিয়ে মাওনা ফ্লাইওভার এলাকায় যায়। এ সময় ছাত্ররা পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেয়। এরপর আন্দোলনকারীরা দুপুরে মাওনা চৌরাস্তায় শ্রীপুর সড়কে ভাই ভাই সুপার মার্কেটে রাখা শ্রীপুর থানা পুলিশের তিনটি গাড়ি এবং উড়াল সেতুর নিচে দুটি পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়। মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মাহবুব মোর্শেদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় এ ঘটনায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে যাওয়ায় প্রেমিকের আত্মহত্যা
শ্রীপুরে সিএনজিকে লরির ধাক্কায় নিহত ১
শ্রীপুরে ট্রাকচাপায় তুলা গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তা নিহত
চাচার মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ি যাওয়ার পথে প্রাণ গেল ভাতিজার
শ্রীপুরে প্রস্তুতি সভা থেকে বিএনপির ৪ নেতাকর্মী আটক
গাজীপুরের শ্রীপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শনিবার (২৯ জুন) ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি সভা থেকে শ্রীপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির চার নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।  শুক্রবার (২৮ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় মাওনা চৌরাস্তা কাঁচা মালের আড়ত সংলগ্ন প্রস্তুতিসভা থেকে তাদের আটক করা হয়। শ্রীপুর থানার ওসি (তদন্ত) সাখাওয়াত হোসেন আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আটক বিএনপি নেতাকর্মীরা হলেন শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান টিটু, শ্রীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রাজিবুল বেপারি, শ্রীপুর উপজেলা যুবদল সদস্য আরিফুল ইসলাম এবং তেলিহাটি ইউনিয়ন যুবদল সদস্য আবু বকর। বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকায় শনিবার (২৯ জুন) মহাসমাবেশ সফল করতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় বসছিলাম। আলোচনা শুরুর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ এসে আমাদেরকে চলে যেতে বলে। আমরা আলোচনা শেষ না করেই চলে আসতেছিলাম। এ সময় পুলিশ পেছন থেকে আমাদের চার নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। প্রস্তুতিসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, শ্রীপুর পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বেপারী, তেলিহাটি ইউনিয় বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মোড়ল, কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন বিএসসি এবং শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিয়াউল করিম মোড়ল রিফাতসহ দলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা।
স্ত্রীকে হত্যার পর মায়ের কাছে ছেলের চিঠি, খতিয়ে দেখবে পুলিশ
গাজীপুরের শ্রীপুরে তিনতলা ভবনের একটি কক্ষ থেকে মীম আক্তার (২২)  নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  মিম আক্তারের লাশের পাশে পাঁচ পৃষ্ঠার চিঠি পেয়েছে পুলিশ।  ওই চিঠি আল আমিন তার মায়ের কাছে লিখেছেন।  চিঠিতে তিনি তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে উল্লেখ আছে। তবে ওই চিঠি আল আমিনের লেখা কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মীমের হত্যাকারী তার স্বামী আল আমিন না অন্য কেউ তা উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের আবদুস সামাদের বাড়ির তিন তলার একটি কক্ষ থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।   মায়ের কাছে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘মা আমারে মাফ কইরা দিয়ো।  অনেক স্বপ্ন ছিল তোমারে কোনো দিন কষ্ট দিবো না।  কিন্তু এমন একজন মানুষ তুমি আমারে আইনা দিছো, যার অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই সিদ্ধান্ত নিলাম।  তিলে তিলে মরার চাইতে একবারে মরে গেলাম।  সবাই আমারে মাফ কইরা দিয়ো।  সে আমারে কয়েক মাসের মধ্যে মানসিক রোগী বানাইয়া ফেলছে। পরিশেষে সবার জন্য দোয়া করে গেলাম।  এমন বউ জানি কারও কপালে না জুটে।’ এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বাকি টাকা পরিশোধের কথা জানিয়ে চিঠিটির পরিশেষে লেখা হয়েছে, ‘নিজেহ একাই মাইরা যাইতাম। কিন্তু এরে যদি বাঁচাইয়া রাইখা যাই, এ আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবো, তাই মাইরা ফেললাম। অনেক স্বপ্ন ছিল রাসুল (সা.)-এর সব সুন্নাহগুলি আমার জীবনে বাস্তবায়িত করমু, কিন্তু পারলাম না!’ তার মায়ের মোবাইল নম্বর ও নিহত মীমের নানার মোবাইল নম্বর লিখে দেওয়া হয়েছে মায়ের কাছে লেখা চিঠিতে। শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এস আই) আব্দুল কুদ্দুছ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, গত তিন মাস আগে আল-আমিন তার স্ত্রী মীম আক্তারকে নিয়ে ওই বাড়ির তিন তলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। বুধবার দুপর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে সে তার স্ত্রীকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে দরজায় তালা মেরে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর তিনি তার অফিসের সহকর্মী আরিফকে ফোনে করে জানান স্ত্রী মীম আক্তারকে হত্যা করে লাশ ঘরে রেখে তালা দিয়ে চলে এসেছেন। দেয়ালে তার (স্ত্রীর) নানার নাম্বার লেখা আছে। তাদেরকে খবর দিয়ে যেন মরদেহ দিয়ে দেয়। তবে কী কারণে তিনি তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন, তা কেউ জানাতে পারেনি। মীম (২২) সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার মুলকান্দি ছোট বেড়া খারুয়া ছোটপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। সে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি থানার কালাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে আল আমিনের (২৪) স্ত্রী।     
‘আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবে সে, তাই মাইরা ফেললাম’
‘নিজে একাই মইরা যাইতাম। কিন্তু এরে (স্ত্রী) যদি বাঁচাইয়া রাইখা যাই, সে আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবে। তাই মাইরা ফেললাম। অনেক স্বপ্ন ছিল রাসুলের সব সুন্নাহগুলো আমার জীবনে বাস্তবায়িত করমু। কিন্তু পারলাম না।’ স্ত্রী মীম আক্তারকে (১৭) শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহের পাশে চিরকুট রেখে দরজায় তালা দিয়ে চলে যান স্বামী আল-আমিন (২৪)।  বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তর পাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মীম আক্তার সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার মুলকান্দি (ছোট বেড়া খারুয়া) গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। স্বামী আল-আমিন টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার কালাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে আব্দুস সামাদের বাসার তিন তলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে স্থানীয় সাদ টেক্সটাইল কারখানায় চাকরি করতেন। খবর পেয়ে বিকেলে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালা ভেঙে মীম আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে ওই নারীর স্বামী পলাতক রয়েছে। মীম আক্তার এবং আল-আমিন আপন চাচাতো ভাই-বোন। গত ৯ মাস আগে তাদের বিবাহ হয়। শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এস আই) আব্দুল কুদ্দুছ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, গত তিন মাস আগে আল-আমিন তার স্ত্রী মীম আক্তারকে নিয়ে ওই বাড়ির তিন তলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। বুধবার দুপর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে সে তার স্ত্রীকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে দরজায় তালা মেরে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর তিনি তার অফিসের সহকর্মী আরিফকে ফোনে করে জানান স্ত্রী মীম আক্তারকে হত্যা করে লাশ ঘরে রেখে তালা দিয়ে চলে এসেছেন। দেয়ালে তার (স্ত্রীর) নানার নাম্বার লেখা আছে। তাদেরকে খবর দিয়ে যেন মরদেহ দিয়ে দেয়।  তবে কি কারণে তিনি তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন, তা কেউ জানাতে পারেনি। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। র‌্যাব, ডিবি এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আঠাবিহীন কাঁঠাল চাষে সাড়া ফেলেছে সবুজ, ৩ মাসে ফলন
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের যুবক মাহমুদুল হাসান সবুজের বাগানে বারোমাসি আঠাবিহীন কাঁঠাল দেখতে হাজারও মানুষ ভিড় করছেন। নানা ধরনের ফলজ গাছের ফাঁকে ফাঁকে আঠাবিহীন কাঁঠাল গাছ রোপণ করে তিনি সাড়া জাগিয়েছেন। একদিকে বছরজুড়ে কাঁঠাল পেড়ে খাচ্ছেন, অন্যদিকে এলাকায় রসালো ফল আঠাবিহীন কাঁঠালের চাষি হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসান সবুজ জানান, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হন আঠাবিহীন কাঁঠাল চাষে। কিন্তু কাঁঠালের চারা সংগ্রহে সংকটে পড়েন। পরে এক বন্ধুর সহায়তায় ভারত থেকে আঠাবিহীন কাঁঠালের চারা আমদানি করেন। রোপণের তিন মাসের মাথায় ফলন আসতে শুরু করে। এখন একের পর এক গাছ থেকে কাঁঠাল নামিয়ে স্বজন ও প্রতিবেশীদের বিলিয়ে দিচ্ছেন। সবুজের আঠাবিহীন কাঁঠাল চাষ দেখে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন। বাড়ির চারপাশে নানা ধরনের ফলজ গাছের ফাঁকে ফাঁকে ৪৪টি চারা রোপণ করেছেন তিনি। একটি গাছও মরেনি। সবগুলো গাছ বড় হয়েছে। সেগুলোতে এখন ফল ধরেছে। ইতোমধ্যে পাকা ফলও খেয়েছেন। যেগুলো পেকেছে সেগুলো নিজে খেয়েছেন, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের দিয়েছেন। কাঁঠালের ভেতরের কোষগুলো রসালো এবং খুব মিষ্টি। তবে আঠা নেই। বাগান দেখতে আসা শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকার একটি পোশাক কারখানায় স্টোর ম্যানেজার ফজলুল হক বলেন, ‘বারোমাসি কাঁঠালের বাগান ও তার পরিচর্যা দেখার জন্য এসেছি। চারা সংগ্রহ ও পরিচর্যার নিয়মকানুন সম্পর্কে জেনেছি। আমি নিজেও রোপণ করবো। এতে আমিও লাভবান হবো এবং দেশেও এ কাঁঠালের চাষ বাড়বে।’ হাজী ছোট কলিম উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও মুলাইদ গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত এক বছর যাবৎ সবুজ বারোমাসি কাঁঠালের পরিচর্যা করে আসছেন। গাছে প্রচুর কাঁঠাল আসছে। কিছু কাঁঠাল ঝরে পড়েছে। কাঁঠালগুলো খুব সুন্দর এবং ফলন ভালো।  নিজেরা এ কাঁঠাল গাছ রোপণ করলেও লাভবান হবো। তার কাঁঠাল চাষ দেখে বাগান মালিক ও চাষিরা উদ্বুদ্ধ হবে।’ শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাঁঠালের একটি ছোট চারার মধ্যে বারোমাসি কাঁঠাল ফলে। এটা সাধারণত ভিয়েতনামের জাত। খুব মিষ্টি এবং সুস্বাদু। বারোমাসি কাঁঠালের চাষে আমাদের দেশের কাঁঠালের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও একসময় রপ্তানি করা সম্ভব হবে।’ নয়নপুর এলাকার স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আতাউর রহমান সোহেল বলেন, ‘গাজীপুর কাঁঠালের জন্য বিখ্যাত। নির্দিষ্ট মৌসুম ছাড়া এটি পাওয়া যায় না। চাষি সবুজ বারোমাসি আঠাবিহীন ৪০টি কাঁঠালের গাছ রোপণ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। আমাদের এলাকায় দ্রুত শিল্পায়ন হওয়ায় দেশি কাঁঠালের জাত কমে যাচ্ছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য আমরা বারোমাসি আঠাবিহীন কাঁঠাল চাষ করে সবুজের মতো সমৃদ্ধ হতে পারব।’ শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদি সুমাইয়া সুলতানা বলেন, ‘আমাদের দেশীয় জাতের কাঁঠালের প্রচুর আঠা থাকে। এটি বছরে একবার ফলন দেয়। কিন্তু নতুন যে ভ্যারাইটি ডেভেলপ করা হয়েছে সেটা বারোমাস ফলন দেয় এবং আঠাবিহীন। কৃষকেরাও এটি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এবং আমরাও পরামর্শ দিচ্ছি বারোমাসি এ কাঁঠালের আবাদ করার জন্য।’ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কাঁঠাল গবেষক ড. মো. জিল্লুর রহমান এ পদ্ধতির উদ্ভাবক। তিনি দেশে কাঁঠাল চাষ সম্প্রসারণে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিভিন্ন অমৌসুমি জাতের কাঁঠালের জাত সংগ্রহ করে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের কাঁঠাল উৎপাদিত হয়। এলাকাভেদে এর স্বাদেরও ভিন্নতা রয়েছে। বীজ থেকে চারা উৎপাদনে গুণাগুণ ঠিক থাকে না। গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করলে শতভাগ গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। এ বিষয়ে ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমাদের জাতীয় এই ফল একসময় অবহেলায় ছিল। আর এখন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহারের পথ খুলেছে। কাঁঠাল ঘিরেই উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। নানা বিষয় বিবেচনায় নিয়ে কাঁঠালের গ্রাফটিং পদ্ধতির দিকে কৃষকদের উৎসাহ তৈরি করতে হবে। এ পদ্ধতির ফলে রোপণের কিছুদিনের মধ্যেই ফল পাওয়া যাবে।’ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) ফল বিভাগ ও উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, দেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টির ব্যবহার নিশ্চিতে বিভিন্ন ফল ও ফসলের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে সরকার জোর দিয়েছে। একই সঙ্গে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বল্প সময়ে ভালো ফলনের প্রতিও। বিজ্ঞানীদের দীর্ঘ গবেষণার ফসল হচ্ছে এ গ্রাফটিং পদ্ধতি। এর আগে আম ও লিচুর ক্ষেত্রে এ গ্রাফটিং পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়েছে। আর এখন শুরু হয়েছে কাঁঠালে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার বলেন, নতুন উদ্ভাবিত কাঁঠালের নতুন জাতটি রোপণ করে মাঠ পর্যায়ে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। নতুন জাতের কাঁঠাল খেতে সুস্বাদু, মিষ্টি এবং ঘ্রাণ ভালো।
‘কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে’
গাজীপুরের শ্রীপুরে তিনদিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি এমপি মেলার উদ্বোধন করেন।  রোববার (২৩ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টায় শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ মেলার উদ্বোধন করেন।  মেলায় বিভিন্ন কৃষি পণ্যের সরকারি বে-সরকারি ১৫টি স্টল স্থান পেয়েছে। সমন্বিত কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ‘কন্দাল ফসল’ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি প্রযুক্তি মেলার আয়োজন করে। প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি বলেন, ‘বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। কৃষিতে দেশ আজ সমৃদ্ধ। কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে কৃষিতে সব ধরনের চাষ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষিতে যতো বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ততো বেশি উৎপাদন বাড়বে।’ এ সময় শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা, সাবেক ভিপি আহসান উল্লাহ, শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির হিমু, গাজীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন জর্জ, শ্রীপুর উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন, শ্রীপুর আঞ্চলিক শাখা শ্রমিক লীগের সভাপতি জালাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথি সকলকে নিয়ে মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। মেলায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান, ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন, খামার যন্ত্রপাতি, কন্দাল ফসল, ধানের আধুনিক জাত, কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাত, ফারজানা নার্সারি, ব্র্যাক নার্সারি, ইস্পাহানি এগ্রো লিমিটেড, স্কয়ার ক্রপ কেয়ার ডিভিশনসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫টি স্টল কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে। আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত মেলা চলবে।
সড়কে ছিটকে মারা গেলেন মা, বেঁচে গেল কোলে থাকা সন্তান
ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নিতে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি রওনা দিয়েছিলেন সুবর্ণা আক্তার (৩৫) নামে এক গৃহবধূ। তার সঙ্গে ছিল ৩ সন্তান। কিন্তু বাবার বাড়ি পৌঁছানোর আগেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে ছিটকে পড়ে মারা যান তিনি।  শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরে গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি-লিচুবাগান সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।  স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দুর্ঘটনায় সুবর্ণা আক্তার মারা গেলেও তার আড়াই বছর বয়সের সন্তান রাইসাসহ ৩ সন্তান বেঁচে যায়। নিহত সুবর্ণা আক্তার শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হকের মেয়ে ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের নিগুয়ারি গ্রামের মো. শামীমের স্ত্রী। শনিবার রাত ১১টায় রাজধানীর গ্রিনলাইফ হাসপাতালে সুবর্ণার মৃত্যু হয়। একই হাসপাতালে তার মেয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে সুবর্ণার পরিবারের লোকজন জানান, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা করে সুবর্ণা বাবার বাড়ি আসার সময় এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ সময় আড়াই বছর বয়সী মেয়ে মোসা. রাইসা তার কোলে ছিল। হঠাৎ তাদের বহন করা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাটি সামনের আরেকটি অটোরিকশাকে পাশ কাটাতে প্রচণ্ড গতিতে মোড় নেয়। এতে সুবর্ণা তার কোলের সন্তানসহ রাস্তায় ছিটকে পড়েন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি অটোরিকশা তাকে চাপা দেয়। এতে তার মাথায় আঘাত লাগে। সুবর্ণার কোলের সন্তানটিও আহত হয়। যদিও ভাগ্যক্রমে অটোরিকশায় থাকা তার অপর দুই সন্তানের কোনো ক্ষতি হয়নি। পরে স্থানীয়রা সুবর্ণা ও তার কোলে থাকা সন্তানকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তার আল হেরা হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রাজধানীর গ্রিনলাইফ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ১১টার দিকে সুবর্ণা মারা যান। সুবর্ণার অপর ২ সন্তান শ্রীপুরে নানা বাড়িতে আছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে শ্রীপুর থানায় কেউ এখনও অবগত করেনি বলে জানিয়েছেন এসআই কুদ্দুস মিয়া। তিনি বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়ে কেউ থানাকে অবগত করেনি। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।’