• ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
logo
অষ্টগ্রামে বজ্রপাতে জেলে নিহত
অষ্টগ্রামে বালু উত্তোলন, ড্রেজারসহ গ্রেপ্তার ৫
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে কালনী (মেঘনা) নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় এমভি সজীব রুহান ড্রেজারসহ পাঁচ বালু খেকোকে গ্রেপ্তার করেছে অষ্টগ্রাম থানা পুলিশ। শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের বাঘাইয়া ও নোয়াগাঁও গ্রামের মধ্যবর্ত্তী কালনী (মেঘনা) নদীর থেকে ড্রেজারসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। জানা যায়, গত ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনের পর একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় কালনী নদীতে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে। ভাল্কহেডের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিলো এ বালু খেকোচক্রটি। এতে নদীর তীরবর্তী গ্রাম ও ফসলি জমিতে ভাঙন দেখা দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় মৎস্য সম্পদ ও হাওরের জীববৈচিত্র্য। শনিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অষ্টগ্রাম থানা পুলিশ নদীতে অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলনের ড্রেজার এমভি সজীব রুহানসহ পাঁচ বালু খেকোকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময়, বালু বোঝাই একটি ভাল্কহেডসহ কয়েক জন পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তুল ইউনিয়নের মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা দরবেশ মিয়ার ছেলে মো. কামরুল ইসলাম (৪০), সোনারুহাটির বাচ্চু মিয়া ছেলে সারুফ মিয়া (৩৮), দেওঘর ইউনিয়নের কাগজীগ্রামের হাছেন আলীর ছেলে বুলবুল আহমেদ (৩৪), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার ধানতলিয়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে নিহা আলম (২৪) ও নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামের সৈয়দ মিয়ার ছেলে সাহেব জামাল (৪০)। এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেলে পাঁচ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮ থেকে ৯ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ‘বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা’ দায়ের করা হয়।
আব্দুস সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন
২৭ ঘণ্টা পর নিখোঁজ পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
সড়কে ঘুরতে গিয়ে বাইকের ধাক্কায় প্রাণ গেল শিশুর
মিঠামইন হাওরে গোসল করতে গিয়ে পর্যটক নিখোঁজ
হাওরে পানিতে নেমে প্রাণ গেল শিক্ষার্থীর
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী হাওরে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে নিখোঁজ আবিদুর রহমানের (২৩) মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শনিবার (৬ জুলাই) বেলা ৩টার দিকে আবিদের মরদেহ উদ্ধার করে করিমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে করিমগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ডুবুরি দল। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৫ জুন) করিমগঞ্জের বালিখলা থেকে নৌকা নিয়ে কিশোরগঞ্জ হাওর বেড়ানো শেষে বিকেলে ৫টার দিকে মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের হাসানপুর সেতু সংযোগ সড়কের পানিতে বন্ধুরা মিলে গোসল করতে নামেন আবিদ। স্রোতের বিপরীতে সাঁতরাতে গিয়ে হঠাৎ পানিতে তলিয়ে যায় আবিদ। এ সময় সাঁতার না জানায় আবিদকে উদ্ধার করতে পারেনি তার বন্ধুরা। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল শনিবার সকাল ৭টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। বেলা ৩টার দিকে আবিদের মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের চাচা মোর্শেদ খান বলেন, আবিদ গাজিপুরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো। তারা কয়েক বন্ধু মিলে শুক্রবার হাওর বেড়ানো শেষে হাসানপুর ব্রিজে গোসলের সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা চাই ময়নাতদন্ত ছাড়া আইনী প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ নিয়ে চট্টগ্রামে যেতে। করিমগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস উপসহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, খবর পেয়ে ডুবুরি দল করিমগঞ্জে পৌঁছে। সকালে উদ্ধার অভিযান শুরু করে বিকেল ৩টায় মরদেহ উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করে।
মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষে সাফল্য
শহরে করতেন ব্যবসা। বিশাল পুঁজি বিনিয়োগ করেও নেই আশানুরূপ লাভ। তখন ইউটিউব দেখে দেখে শেখেন চাষবাস। পরে ব্যবসা ছেড়ে গ্রামে শুরু করেন সবজি চাষ। জমি লিজ নিয়ে মালচিং ও আধুনিক পদ্ধতিতে সবজি ও মসলা চাষ করে মিলে দ্রুত সাফল্য। কৃষকদের ভালো ফলনের পরামর্শ দিয়ে পান জনপ্রিয়তা। তাই গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কৃষকদের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মেম্বার নির্বাচিত হন কৃষি উদ্যোক্তা মোহাম্মদ রেখন মিয়া। ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলেও সকাল-সন্ধ্যা কাজ করেন জমিতে। জরুরি কাজ ছাড়া যান না পরিষদে, ভোটারদের দরকারি কাজ সারতে সঙ্গে রাখেন কলম ও সিল। জমিতে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে স্বাক্ষর ও কৃষিবিষয়ক পরামর্শ দেন। চাষিরা কৃষি পরামর্শ নিতে ভিড় করেন তার বাড়িতে। ডাকে ‘কৃষি ডাক্তার’ বলে। কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য (মেম্বার) নির্বাচিত হওয়া রেখন মিয়া সবজি ও মসলা চাষ করে বছরে আয় করেন কয়েক লাখ টাকা। ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের অধীনে ‘তৃতীয় সেরা কৃষক’ পুরস্কার ২০২৩ সালে পেয়েছেন। কৃষি উদ্যোক্তা রেখন মিয়ার ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন, তার বাবা প্রয়াত আবদুস সালাম। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান রেখন সিলেট শহরে করতেন সবজির ব্যবসা, রোদেপুড়ে কৃষি কাজ ছিল তার বিরক্তির কারণ। ২০১০ সালে বাবার মৃত্যুর পর গ্রামে শুরু করেন ডেকোরেশন ব্যবসা। অনেক পুঁজি বিনিয়োগ করেও মেলেনি সাফল্য। ২০১৪ সালে ইউটিউব দেখে আধুনিক পদ্ধতিতে জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন সবজি চাষ। শুরু হয় সাফল্যের পথ চলা। ২০২২ সালে ৮৫ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে বর্ষাকালীন টমেটো চাষ করেন, খরচ শেষে আয় করে ৬ লাখ টাকা। ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের অধীনে ‘তৃতীয় সেরা কৃষক’ পুরস্কার পান। চলতি বছর ৬মাসের জন্য ৭৫ শতাংশ জমি লিজ নেন ১২ হাজার টাকায়। মালচিং পদ্ধতিতে ৫৫ শতাংশে মরিচ ও ২০ শতাংশে চাষ করেন টমেটো এবং শিংনাথ বেগুন। ইতোমধ্যে ৭৫হাজার টাকার টমেটো ও বেগুন বিক্রি করেন। আর ৫৫ শতাংশ জমির কাঁচা ও শুকনো মরিচ বিক্রি করেন সাড়ে তিন লাখ টাকার। প্রায় সোয়া চার লাখ টাকার সবজি ও মসলা উৎপাদনে খরচ করতে হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। জমিতে ব্যবহৃত মালচিং পেপার ও বাঁশের খুটি ব্যবহার করতে পারবেন আগামী মৌসুমে। তার এই সাফল্য দেখে তরুণের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে কৃষি উৎপাদনে। কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও ইউটিউব দেখে অর্জিত অভিজ্ঞতা ও কৃষি বিষয়ক পরামর্শ কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নিজ বাড়িতে খোলেন ‘আধুনিক কৃষি তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র।’ যেখানে ভিড় করেন এলাকার কৃষকরা। মোহাম্মদ রেখন মিয়া বলেন, আমার নিজস্ব জমি নেই। কম পুঁজিতে বেশি লাভবান করতে কৃষির বিকল্প নেই। সরকারি খাস জমি লীজ পেলে বারোমাস সবজি ও মসলা চাষ করে দেশের চাহিদা পূরণ ও বেকার যুবদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারতাম। এই বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করি। উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র সরকার বলেন, রেখন মিয়া একজন কৃষি উদ্যোক্তা। আমরা তাকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী প্লট দিয়ে সহযোগিতা করি। তিনি প্রশিক্ষণ ও ইউটিউব দেখে কৃষি উৎপাদনে যে অভিজ্ঞতা ও সাফল্য অর্জন করেছেন তা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। অষ্টগ্রাম সদর ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু বলেন, আমার এ সহকর্মী অত্যন্ত কৃষি বান্ধব একজন মানুষ। তিনি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলেও দিনরাত চাষবাস নিয়ে থাকেন। কৃষকদের কল্যাণে কৃষি পরামর্শ বিলিয়ে বেড়ান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিজিৎ সরকার বলেন, ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিস্ট্যান্স প্রজেক্ট (ফ্রিপ) প্রকল্পের আওতায় রেখন মিয়াকে ৩৩ শতাংশ জমির জন্য মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষের একটি প্রদর্শনী ও প্রশিক্ষণ দেয় উপজেলা কৃষি অফিস। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবার ৫০শতাংশ জমিতে হাইব্রিড ‘বিজলী প্লাস’ জাতের মরিচ চাষ করে লাভবান হন। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও একজন অগ্রগামী কৃষক, রেখনকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকায় মরিচ চাষের আবাদ বাড়ছে।
মিঠামইনে ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে নিজ ঘর থেকে কামাল হোসেন (৪৬) নামে এক ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে কিশোরগঞ্জের হাওর বেষ্টিত মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের কেওয়ারজোড় গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ব্যবসায়ী কামাল হোসেন কেওয়ারজোড় গ্রামের মৃত হারিছ উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে। শুক্রবার বিকেলে নিজ ঘর থেকে মিঠামইন থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহ সন্ধ্যায় মিঠামইন থানায় নিয়ে আসা হয়। নিহতের ছোট ভাই জামাল হোসেন বলেন, আমার ভাই কামাল হোসেন ব্যবসায়িক কারণে ভৈরব ও কিশোরগঞ্জে বসবাস করতেন। সদ্য সমাপ্ত মিঠামইন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে কেওয়ারজোড় গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। জামাল হোসেন আরও বলেন, বুধবার নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থী বিজয়ী হওয়ায় আমার ভাই বৃহস্পতিবার রাতে তার সমর্থকদের জন্য স্থানীয় বাজারে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করেন। পরে রাতে বাসায় ফিরে মায়ের সঙ্গে কথা বলে নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঘুম থেকে না ওঠায় অনেক ডাকাডাকি করা হয়। এক পর্যায়ে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখা যায়, আড়ার সঙ্গে গামছা পেঁচিয়ে ঝুলছে। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব। তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। রিপোর্ট আসলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইটনায় বাড়ির সীমানা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১
কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত ইটনা উপজেলায় বাড়ির সীমানা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে শানু ভূঁইয়া (৬৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন নিহতের ছেলে ও ছোট ভাই। শুক্রবার (২৪ মে) ইটনা উপজেলায় বাদলা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শানু ভূঁইয়া উপজেলার বাদলা ইউনিয়নের থানেশ্বর বারোগড়িয়া গ্রামের পাগার আলী ভূঁইয়ার ছেলে।  আহতরা হলেন, নিহত শানু ভূঁইয়ার ছেলে লিটন ভূঁইয়া (৪৫) ও তার ছোট ভাই বাবুল ভূঁইয়া (৫২)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাদলা ইউনিয়নের থানেশ্বর বারোগড়িয়া গ্রামের শানু ভূঁইয়া ও প্রতিবেশী মুক্তু মিয়ার মধ্য বাড়ির সীমানা ও টিউবওয়েল স্থাপন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনার জেরে শুক্রবার সকালে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ইটনা থানা ও বাদলা ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শানু ভূঁইয়ার মৃত্যু হয়। ইটনা থানার (ওসি) জাকির রব্বানী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
অষ্টগ্রামে ট্রলিতে খেলাধুলায় প্রাণ গেল শিশুর
কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত অষ্টগ্রামে বাড়ির সামনে রাখা ট্রলিতে খেলা করতে গিয়ে ইমন (৫) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। বুধবার (১৫ মে) সকালে অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের ঢালারকান্দি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু ইমন মিয়া (৫) কলমা ইউনিয়নের ঢালারকান্দি গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢালারকন্দি গ্রামে খলিল মিয়ার বাড়ির সামনে, ডিজেল মেশিন ও ট্রাক্টরের সমন্বয়ে স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি ট্রলি রাখেন একই গ্রামের সায়েদ মিয়া। সকালে ইমন ও কয়েকজন শিশু একসঙ্গে এই ট্রলিতে খেলাধুলা করছিল। একপর্যায়ে ট্রলির পেছনের ঢালটি লক খোলে পড়ে, এতে ইমন আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে স্বজনরা তাকে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। কেউ অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
১৬ বছর ধরে টিনশেড ঘরে প্রাথমিক বিদ্যালয়
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে ১৬ বছর ধরে ছোট্ট একটি টিনশেড ঘরে চলছে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠদান। নেই স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট, বৈদ্যুতিক ও সুপেয় পানির সুবিধা। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। দ্রুত ভবন নির্মাণের দাবি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের। কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের চর কাটখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ২০০৮ সালে নদী ভাঙনের কারণে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সরকার। তারপর থেকে বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী টিনশেড ঘরে পাঠদান চালিয়ে আসছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভবন সংকটে মিলছে না ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দ। পাঠদানে ব্যবহৃত হয় না শিক্ষা উপকরণ, নেই শিশুদের খেলাধুলার সুবিধা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে কাটখাল ইউনিয়নের কালনী নদীর পূর্ব তীরে চর কাটখাল গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘চর কাটখাল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। এ বিদ্যালয়ে রয়েছে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী। ১৯৯৬ সালে নির্মিত হয় ভবনটি। কালনী নদীর ভাঙনের কারণে মাত্র ১২ বছর পর ২০০৮ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কাটখাল বাজার জামে মসজিদ এলাকায় একটি অস্থায়ী ঘরে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম চালানো হয়। তারপর থেকে পূর্ব চর কাটখাল গ্রামে ২৫ শতাংশ জমিতে ছোট্ট একটি টিনশেড ঘর উঠিয়ে পরিচালিত হচ্ছে শিশুদের পাঠদান। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, টিনশেড ঘরে ছোট্ট তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও নামমাত্র একটি অফিস কক্ষ রয়েছে। এক কক্ষের শব্দে অন্য কক্ষে পাঠদান করানো দুষ্কর। বারান্দাহীন টিনশেড এই ঘরে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, টিউবওয়েল ও টয়লেট সুবিধা। আর দশটা বিদ্যালয়ের মতো নেই সাজানো গুছানো দেয়াল। পাঠদানে ব্যবহৃত হয় না শিক্ষাউপকরণ। বিদ্যালয়ের সামনে দৈনিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও নেই খেলাধুলার কোনো উপকরণ। প্রকৃতির ডাক ও পানি খেতে যেতে হয় নিকটতম বাড়িতে। কয়েকজন শিক্ষার্থী মন খারাপ করে বলেন, ‘পাশের স্কুল দেখলে আনন্দ লাগে। কি সুন্দর স্কুলের পরিবেশ আর আমাদের ভাঙাচোরা ঘর। গরমের দিনে পাখা ব্যবহার হয় না, পানিও খেতে পারি না। ঝড়ের দিনে ভয় লাগে। আকাশ খারাপ (মেঘ) করলে দৌড়ে বাড়ি চলে যাই।’ এ বিষয়ে শিক্ষকরা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে আমরা যে প্রশিক্ষণ নেই, তার সঙ্গে এই বিদ্যালয়ে শিশুদের পাঠদানে সমন্বয় করতে পারিনা ভবন, শিক্ষাউপকরণসহ নানা সংকটের কারণে। ২০১৩ সালে জাতীয়করণকৃত এই বিদ্যালয়ে ৬ জন শিক্ষকের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ৪ জন। শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছেন ১৩০ জন শিক্ষার্থী। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় দফায় বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের আবেদন করেও কোনো সাড়া পায়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক বলেন, বিদ্যালয়টিতে নানামুখী সংকটের কারণে আমরা যে প্রশিক্ষণ পাই, তা শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রয়োগ করতে পারিনা। সরকার যদি দ্রুত আমাদের ভবনসহ পানি, টয়লেট ও সুন্দর পরিবেশ করে দিতো, আমার ভালোভাবে পাঠদান করাতে পারতাম। কাটখাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বহুদিন ধরে টিনশেড ঘরে পাঠদান করছেন শিক্ষকরা। উপজেলা সমন্বয় সভায় ভবন নির্মাণ বিষয়ে আলোচনা করেছি। কেন ভবনটি নির্মাণ হচ্ছে না, তা জানিনা। শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে দ্রুত ভবন নির্মাণের দাবি জানাই।’ মিঠামইন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান বলেন, আমি এই উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি, এ বিদ্যালয়টির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা আশা করছি শিগগিরই সরকারের ‘চর ও হাওরাঞ্চল উন্নয়ন’ প্রকল্পের অধীনে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু হবে।