দেশে চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনমনে স্বস্তি ফেরাতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন। কৃষক ও ক্রেতাদের মেল বন্ধনের উদ্দেশ্যে চালু করেছে মানবতার সওদাপাতি কৃষকের বাজার। যেখানে কৃষক তার উৎপাদিত পণ্য সরাসরি বিক্রি করতে পারছে। এতে একদিকে যেমন খুশি হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা অপরদিকে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। মধ্যস্বত্যাভোগী না থাকায় ন্যায্য দাম পাচ্ছে কৃষকরা।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমন্বয়কদের যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল থেকে ঠাকুরগাঁও সাধারণ পাঠাগার মাঠ চত্বরে মানবতার সওদাপাতি কৃষকের বাজার নামে অস্থায়ী এ বাজার। সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত চলবে এ বাজার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ বাজারে নিজেদের খেতের উৎপাদিত লাউ, শিম, মূলা, বরবটি, আলু, কাঁচামরিচ সহ অন্যান্য কাচা সবজির পসরা নিয়ে বসেছেন কৃষকরা। তাতে ক্রেতাদেরও উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বাজারের চেয়ে প্রতিটি পণ্যে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে পেয়ে খুশি ক্রেতারা। বাজারে পলিথিন মুক্ত কেনাকাটা করতে ও ক্রেতা বিক্রেতাদের উদ্বুদ্ধ করতে এ বাজারের আরেকটি বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ভুট্টার আঁশে তৈরি বিশেষ ব্যাগ ও পাটের ব্যাগ। এছাড়াও শুধুমাত্র কাচা সবজিই নয়, এ বাজারে পাওয়া যায় মাছ মাংস সহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যই।
বাজার করতে আসা ক্রেতা শাহিন আলম জানান, আমাদের এখানে আশেপাশে প্রায় ৩টি বাজার রয়েছে। আমি সব গুলোতেই যাই এবং সব গুলোরই মূল্য তালিকা আমার জানা। এখানে আমি কিছু সবজি ও প্রয়োজনীয় আরও দু একটি জিনিস কিনেছি। এ বাজারে আমি প্রতিটি জিনিস স্থানীয় অন্য বাজার গুলোর তুলনায় অনেক কমেই কিনেছি। কোনটাতে তো কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কম পেয়েছি।আবুল হোসেন নামের আরেক ক্রেতা জানান, আমি ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনেছি এবং স্থানীয় বাজারের চেয়ে কেজিতে ২০ টাকা কম পেয়েছি। স্পতাহে সাত দিন না হলেও অন্তত এ বাজারটিকে যেন অস্থায়ী ভাবে না রেখে এটিকে স্থায়ীভাবে রাখার জন্য জেলা প্রশাসনকে বলবো।
বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষক তোজাম্মেল জানান, আমি আধা মণ বরবটি নিয়ে আসছিলাম। এক ঘণ্টার মধ্যেই সব বিক্রি হয়েছে। বাজারের চেয়েও কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি করেছি তবুও পাইকারদের চেয়ে বেশি মূল্য পেয়েছি। এর পরের দিন আমি আরও বেশি সবজি নিয়ে আসবো।
জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা জানান, কৃষকের বাজার মূলত হলিডে মার্কেটের মত। ছুটির দিনে সুলভ মূল্যে ক্রেতাদের ক্রয় করা এবং কৃষক সরাসরি নিজেই বিক্রেতা হয়ে ন্যায্য মূল্য পাওয়ার উদ্দেশ্যেই এই বাজারটি চালু করা। ভোক্তারা চাইলে আরও বড় পরিসরে এ বাজারকে আমরা করার কথা ভাবতে পারি।
আরটিভি/এএএ