ক্যানসার, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় ব্রকলি
খাদ্য উপাদানের মধ্যে ভিটামিন ও মিনারেলসের অন্যতম উৎস হলো শাক-সবজি ও ফলমূল। ভিটামিন ও মিনারেলস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে এবং শরীরকে খাদ্যের শর্করা, আমিষ ও চর্বির ব্যবহারে সাহায্য করে। অর্থাৎ শরীর সুস্থ রাখতে শাক-সবজি ও ফলমূলের অবদান অনেক এটা সবারই জানা। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকালে পাওয়া সবজিগুলোর মধ্যে ব্রকলির রয়েছে অনন্য পুষ্টিগুণ।
সম্প্রতি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে ব্রকলি ক্যানসার, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। চিকিৎসকরা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ব্রকলি খেতে বলেন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে চিনি-লবণ-ময়দার হার কমিয়ে দেয়া এ সব অভ্যাসেই রোগ থেকে দূরে থাকার দাওয়া দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
ব্রকলিতে উচ্চমাত্রায় বিভিন্ন রকমের পুষ্টি, আঁশ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, আয়রন ও পটাশিয়াম রয়েছে। অন্যান্য সবজির চেয়ে ব্রকলিতে প্রোটিনের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। কাঁচা ব্রকলিতে ৯০ ভাগই পানি থাকে। এতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ ৭ শতাংশ, প্রোটিন ৩ শতাংশ এবং চর্বি নেই বললেই চলে। এতে ক্যালরির পরিমাণও কম। ৯১ গ্রাম ব্রকলির মধ্যে ৩১ ক্যালরি থাকে।
ক্যানসার নিয়ে সারা বিশ্বে নানা গবেষণায় উঠে এসেছে, ক্যানসারের টিউমারের বৃদ্ধি (ম্যালিগন্যান্ট টিউমার) ঠেকাতে ব্রকলি অত্যন্ত কার্যকরী। বিশেষ করে স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই সবজির ভূমিকা অনেক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাবলুএইচও-এর একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ নতুন করে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং ৪ লাখ ৫৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাবলুএইচও-এর সমীক্ষা অনুসারে, ভারতে এই রোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের বাড়বৃদ্ধি রুখতে গবেষণা চালিয়েছেন দীর্ঘ দশ বছর।
প্রধান গবেষক ইনগ্রিড হ্যারের মতে, ব্রকলির বিটা-ক্যারোটিন, ফ্ল্যাভোনয়েড, লিউটেন, ক্যারটিনয়েড ও জিক্সানথিন-এর মতো একাধিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান একাধিক গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তবে ক্যানসারের বেলায় এই সবজি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, ব্রকলিতে থাকা সালফোরাফেন ভেষজ যৌগ প্রায় ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের বৃদ্ধি ঠেকাতে সক্ষম। এছাড়াও এতে থাকা গ্লুকোরাফানিন ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের টিস্যু মেরামত করতে পারে। ব্রকলির পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের অন্যতম প্রধান জোগানদার। এগুলো স্নায়ুতন্ত্র ও হাড়কে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
এস/পি
মন্তব্য করুন