নাটোরের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণের সহায়তার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মাহমুদুর রহমান ওরফে ফেন্সি আহমেদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় তার ভাই ফিরোজ আহমেদকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ মামলায় তাদের আরেক ভাই ফেরদৌস আহমেদও পলাতক রয়েছেন।
নাটোরের গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, গত ১ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে ভুক্তভোগী এসএসসি পরীক্ষার্থী ব্যবহারিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ে যান। পরীক্ষা শেষে বিদ্যালয়ের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদ তাকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনাটি দেখে স্থানীয়রা অপহৃত মেয়েটির বাবা মাকে খবর দেয়। পরে মেয়েটির বাবা মা ফিরোজ আহমেদের দুই ভাই মাহমুদুর রহমান ওরফে ফেন্সি আহমেদ ও ফেরদৌস আহমেদের কাছে যায়। তারা অপহৃত মেয়েটিকে এনে দেবে বলে তালবাহানা করতে থাকে। সেইসঙ্গে অপহরণকারী ফিরোজ আহমেদকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করতে থাকে।
ইতোমধ্যে রাজশাহীর একটি বাসায় আটকে রেখে পিস্তল ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে ফিরোজ। এ ঘটনায় ওই দিন রাত ১১টার দিকে ভুক্তভোগীর মা ফিরোজ আহমেদসহ তার দুই ভাই মাহমুদুর রহমান ওরফে ফেন্সি আহমেদ এবং ফেরদৌস আহমেদকে আসামি করে গুরুদাসপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পরদিন সকালে পুলিশ ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করলেও পালিয়ে যান অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক। মামলার পর থেকে ফেন্সি আহমেদ এবং ফেরদৌস আহমেদ গা ঢাকা দেয়।
এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন এলাকাবাসী। অভিযোগ ওঠার পর প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কার করে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি। মঙ্গলবার মধ্যরাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার হর-তকীতলা এলাকা থেকে প্রধান শিক্ষক ফিরোজকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদকে গুরুদাসপুর আমলি আদালতে তোলা হয়। বিচারক শামসুন্নাহার রীটা ফিরোজের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার অপর দুই আসামি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মাহমুদুর রহমান ওরফে ফেন্সি আহমেদ ও তার ভাই ফেরদৌসকে গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা অব্যাহত আছে বলে জানায় পুলিশ।
এদিকে তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আকতারুজ্জামান বলেন, মাহমুদুর রহমান আমার এখানকার সহকারী শিক্ষা অফিসার। তিনি গত ৪ অক্টোবর থেকে অসুস্থতাজনিত কারণে ছুটিতে আছে। তবে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে শুনেছি এখনও কোনো কাগজ হাতে পাইনি।