• ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
ইয়াবাসহ শ্রমিক লীগের সভাপতি আটক 
গভীর সমুদ্রে ভারতীয় জেলেদের দাদাগিরি
ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময়ে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমা থেকে ৩১ জন ভারতীয় জেলেকে আটক করেছে নৌবাহিনী। এ সময় ভারতীয় পতাকাবাহী দুটি ট্রলার জব্দ করা হয়। গত মঙ্গলবার এসব ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশি জেলেরা উভয় দেশে একই সময়ে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দাবি করেছেন।  জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশের প্রজনন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকার ১২ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। এ কারণে নদীতে ও সাগরে বাংলাদেশি জেলেরা ইলিশ ধরা থেকে বিরত রয়েছেন। কিন্তু এই সময়ে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে ইলিশ শিকার করে যাচ্ছেন।  ভারতীয় ৩১ জেলেকে আটকের বিষয়  নিশ্চিত করেন কোস্টগার্ড দক্ষিণ অঞ্চল-ভোলার মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় যে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ ও অবৈধ কর্মকাণ্ড ঠেকাতে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড অভিযান পরিচালনা করছে। এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার দুটি ট্রলারসহ ভারতীয় ৩১ জেলেকে আটক করা হয়েছে।’  বাংলাদেশি জেলেদের অভিযোগ, সাগরে তাদের সঙ্গে দস্যুর মতো আচরণ করেছে ভারতীয় জেলেরা। হ্যান্ডমাইকে বাংলাদেশি জেলেদের সরে যাওয়ার ঘোষণা দিচ্ছে। সরতে না চাইলে ইট-পাথর নিক্ষেপ করছে; জাল কেটে দিচ্ছে। ভারতীয় জেলেদের ট্রলারে ছয় সিলিন্ডারের শক্তিশালী ইঞ্জিন। ধাক্কা দিয়ে তারা বাংলাদেশি ছোট ছোট ট্রলারকে ডুবিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।  বরগুনার পাথরঘাটার জেলে মোহাম্মদ আলম মাঝি বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে আমাদের অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিত। ভারতীয় জেলেদের দ্বারা আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা পেতাম না। উল্টো আমাদের ধমকিয়ে রাখত। এবার যদি ভারতীয় জেলেদের ফিরানো যায় তাহলে আগামী বছর দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।’  মোহাম্মদ নুহু নামের এক জেলে বলেন, ‘ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় চালনার বয়া, মাইজদার বয়া, বড়ইয়ার চর, ফেয়ারওয়ের বয়া, বড় আমবাড়িয়া, ডিমের চর, সোনার চর, কবরখালীসহ ইলিশ বিচরণের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এসে মাছ শিকার করে।’  বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সহসভাপতি আবুল হোসেন ফরাজী বলেন ‘আগের সরকার ভারতের পাতানো নিষেধাজ্ঞা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারতীয়দের ইলিশ ধরার সুযোগ করে দিয়েছে। এ সুযোগে ভারতীয়রা বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এসে ইলিশ শিকার করছে। এই পাতানো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ভারত ও বাংলাদেশে একত্রে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর চাই।’  গত মঙ্গলবার দেওয়া নৌবাহিনীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিএনএস আখতার উদ্দিনের টহল চলাকালে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে বিদেশি পতাকাবাহী দুটি ট্রলারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা হয়। এ সময় ট্রলার দুটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নৌবাহিনীর জাহাজ ট্রলার দুটিকে বাংলাদেশের জলসীমার ভেতরেই আটক করতে সক্ষম হয়।  আটক ট্রলার দুটিতে মোট ৩১ জন সদস্য ছিলেন। তাঁদের বাড়ি ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার বিভিন্ন গ্রামে। ট্রলার দুটি পটুয়াখালীতে এনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আটকদের কলাপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে নৌবাহিনী।  দক্ষিণ স্টেশন কোস্টগার্ড ভোলা জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ জানান, ‘দেশীয় জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ ঘটনা রয়েছে। তবে সামনের দিনগুলোতে কঠোর হয়ে টহল জোরদার করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় জেলে অনুপ্রবেশের অভিযোগ আমরা আর নিতে চাই না। এ জন্য গভীর সমুদ্রে জাহাজের পাশাপাশি স্পেশাল টহলের জন্য ইতিমধ্যে অতিরিক্ত শক্তিশালী ট্রলার ও স্পিডবোট প্রস্তুত করা হয়েছে।’  কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুয়েল ইসলাম জানান, ভারতীয় জেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা পটুয়াখালী জেলা কারাগারে রয়েছেন। আরটিভি/এসএপি
আরটিভির সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি, প্রধান শিক্ষককে শোকজ 
পাথরঘাটায় সাংবাদিককে হুমকি, থানায় জিডি
১৮ বছরে পাথরঘাটায় ১৯২ জন জেলে নিখোঁজ
নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ ফের বিক্রি, জনমনে আতঙ্ক
পাথরঘাটায় সড়ক দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু 
বরগুনার পাথরঘাটায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শাহানা বেগম (৪৭) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন।  শনিবার (২২ জুন) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের সপ্তগ্রাম এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।  নিহত শাহানা বেগম কাঠালতলী ইউনিয়নের সপ্তগ্রাম এলাকার মো. হানিফ খানের স্ত্রী।  নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যার পরে শাহানা বেগম সপ্তগ্রাম বাজারে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরে তিনি বাড়ি যাওয়ার সময় বাবুরহাট থেকে চরদুয়ানীর উদ্দেশ্যে রওনা হলে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থল থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহানা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।  পাথরঘাটা থানা উপপরিদর্শক অসীম বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 
পাথরঘাটায় উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন এনামুল হোসাইন 
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে বরগুনার পাথরঘাটায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো. এনামুল হোসাইন।  রোববার (৯ জুন) ১০টার দিকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন অতিরিক্ত নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দিলীপ কুমার হাওলাদার। এর আগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৫৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।  ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য এনামুল হোসাইন দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে ২৪ হাজার ২১০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নুর আফরোজ মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২২ হাজার ২২৯ ভোট। এ ছাড়া বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩২৪ ভোট, রফিকুল ইসলাম রিপন মোল্লা আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৬০০ ভোট, হাফিজুর রহমান সোহাগ ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩ হাজার ৭৭৪ ভোট, আকন সহিদ চিংড়ী প্রতীকে ৭২৩ ভোট এবং হেমায়েত হোসেন ভুট্টো হেলিকপ্টার প্রতীকে পেয়েছেন ৩১৭ ভোট।  ভাইস চেয়ারম্যান পদে টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ২৯ হাজার ৭২১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ মো. নাজেস আফরোজ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শওকত হাচান রমিম মাইক প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২৫ হাজার ১৫৪। এ ছাড়া জামাল আহমেদ উড়োজাহাজ প্রতীকে ৫ হাজার ৯৫১ ভোট, রেজাউল করিম রাজা তালা প্রতীকে ৬ হাজার ৮১৫ ভোট, জাহিদ হাসান বই প্রতীকে ১ হাজার ৬ ভোট পেয়েছেন।  মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯ হাজার ৬৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ফুটবল প্রতীকের নাজমুন্নাহার পাপড়ি মল্লীক। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কলস প্রতীকের ফাতিমা পারভীন পেয়েছেন ১৪ হাজার ২৫২ ভোট। এ ছাড়া ফারজানা হাস প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৪৩৩ ভোট, নীলু রানী প্রজাপতি প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৩৭৫ ভোট।  উল্লেখ্য, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে তা স্থগিত করা হয়। পরে ৯ জুন রোববার এ ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
পাথরঘাটায় নির্বাচনী সংঘর্ষ, প্রার্থীসহ আহত ৩০
বরগুনার পাথরঘাটায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মারামারিতে প্রার্থীসহ ৩০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১০ জনকে পাথরঘাটা হাসপাতালে নিলে ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতরা প্রত্যেকেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী।  বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাত সাড়ে ১০টায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা থানার ওসি আল মামুন। আহতরা হলেন, দোয়াত-কলম মার্কার প্রার্থী এনামুল হোসাইন, যুবলীগ নেতা ফয়সাল আহম্মেদ, মো. সোলাইমান, শাহ আলী, সবুজ গাজী, তানভীর আহম্মেদ, ছাত্রলীগ নেতা মো. আহাদ, মো. রাকিব ও রুবেল মিয়া, হাসান রাব্বি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা গোলাম কবির কাপ-পিরিচ মার্কা ও এনামুল হোসাইনের দোয়াত-কলম মার্কার সমার্থকদের মধ্যে কাকচিড়া ইউনিয়নের কাটাখালী ও পাথরঘাটা হাসপাতালে দফায় দফায় এই সংঘর্ষ সংগঠিত হয়।  এ বিষয়ে প্রার্থী এনামুল হোসাইন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই কাকচিড়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুর ছেলে রাজন আহম্মেদ কাপ-পিরিচ মার্কার পক্ষ নিয়ে আমার (এনামুলের) লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে এবং আমার প্রচার অফিস ভাঙচুর করেছে। বৃহস্পতিবার ফের মোটরসাইকেলে মহরা দিয়ে রাজন ও তার লোকজন নিয়ে আমার কাকচিড়া ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রচার অফিসে হামলা চালায়। খবর পেয়ে আমি (এনামুল হোসাইন) কিছু কর্মী নিয়ে সেখানে গেলে আমার ওপর হামলা করে এবং আমাকে কুপিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে। পরে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে আমাকে পাথরঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করে।  আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা গোলাম কবির জানান, পাথরঘাটা হাসপাতালে এনামুলের সমর্থকরা আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে উভয়পক্ষের প্রায় ৩০ জন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমার গণ জোয়ার দেখে এনামুল নির্বাচন বানচাল করার জন্য এসব কাজ করছে।  পাথরঘাটা থানার ওসি আল মামুন বলেন, ‘এ ঘটনায় যাতে নির্বাচনের ওপর প্রভাব না পরে সে কারণে এই মারামারির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আটকের ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। প্রার্থীরা অভিযোগ দিলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ উল্লেখ্য, পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৯ মে হওয়ার কথা ছিল। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে তা স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন আগামী ৯ জুন ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করেছে।
পাথরঘাটায় ১৫ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি হাজারও মানুষ
পাথরঘাটায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে ১৫ গ্রাম। পানিবন্দি রয়েছেন হাজারও মানুষ। রোববার (২৬ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব।   স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের চাপে বিষখালি ও বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জোয়ারের সময় পার হয়ে যাওয়ার পরেও পানি না কমায় চিন্তিত রয়েছেন উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।  স্বল্প উচ্চতার রিং বাঁধের কারণে এসব এলাকায় পানি ঢুকে পড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বসতবাড়ি ও চুলা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারণে রান্না করতে পারেনি এসব এলাকার বাসিন্দারা।   পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার এলাকায় জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধের বাইরে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে এসব পরিবারের কারও চুলোয় হাড়ি ওঠেনি। আমাদের এই এলাকায় রিং বাঁধ বলতে কিছু নেই। বেশি উচ্চতার জোয়ারে খালের পানি বেড়ে যাওয়ায় আমাদের এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।’   এ দিকে অতিরিক্ত জোয়ারের কারণে বরগুনার বাইনচটকি, বড়ইতলা ও পুরাকাটা ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কসহ গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচলও বন্ধ রয়েছে।   সরেজমিনে এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিষখালি নদীর তীরবর্তী হরিণঘাটা, জিনতলা এলাকার শতাধিক ঘর বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা বেড়িবাঁধের ওপরে অবস্থান করছেন।   বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন বলেন, ‘নদীতে পানির অতিরিক্ত চাপ থাকায় পানি কমতে সময় লাগছে। এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব বাঁধ ভেঙে গেলে তাৎক্ষণিক মেরামতের জন্য ৮০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’  
রেমালের প্রভাব শুরু, পাথরঘাটায় প্রস্তুত ১৫৬ আশ্রয়কেন্দ্র
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ‘ঘূর্ণিঝড় রেমাল’ মোকাবিলায় বরগুনার পাথরঘাটা উপকূলীয় অঞ্চলে ১৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।  শনিবার (২৫ মে) উপজেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। এ দিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা থেকে উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে উপকূলীয় এলাকার জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর আগে বিকেল ৪টার পর থেকে দমকা হাওয়া বয়ে যায় উপকূলীয় এলাকায়। এ সময় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাঁন মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে উপকূলীয় পাথরঘাটা উপজেলায় ১৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৩শ’ স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেক উপজেলার কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, ‘বর্তমানে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংকেত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হবে।’
ঘূর্ণিঝড় রেমাল সতর্কতায় পাথরঘাটায় মাইকিং
ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় বরগুনায় সচেতনতামূলক মাইকিং করেছেন কোস্ট গার্ডের সদস্যরা। শুক্রবার (২৪ মে) বিকেল ৫টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ প্রচার মাইকিং করা হয়। কোস্ট গার্ড সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটা কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার এম ফিরোজ্জামানের নেতৃত্বে পাথরঘাটা পৌর শহরের লঞ্চঘাট, নিলিমা পয়েন্টসহ উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় প্রচার মাইকিং করেন কোস্ট গার্ড সদস্যরা। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে দেশের সমুদ্র বন্দর সমূহে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে। পরবর্তীতে সংকেত বেড়ে ঘূর্ণিঝড় রেমালে রূপ নিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এতে সংকেত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নিতে সচেতনতামূলক মাইকিং শুরু করা হয়েছে। এ বিষয়ে পাথরঘাটা কোস্ট গার্ড স্টেশন কমান্ডার লে. শাকিব মেহবুব বলেন, বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সমুদ্র বন্দরে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে পাথরঘাটা উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়। এছাড়াও জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন নদী এলাকয় প্রচার মাইকিং করা হবে।