• ঢাকা শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১
logo
টিউলিপের পদত্যাগে তোপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
টিউলিপের জায়গায় নিয়োগ পেলেন এমা রেনল্ডস
সদ্য পদত্যাগ করা টিউলিপ সিদ্দিকির স্থলে নতুন অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার হিসেবে লেবার পার্টির এমপি এমা রেনল্ডসকে (৪৭) নিয়োগ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।  বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। এমা রেনল্ডস গত বছরের জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত হন। এই নির্বাচনে ১৪ বছর বিরোধী দলে থাকার পর লেবার পার্টি ক্ষমতায় ফিরে আসে। এমা রেনল্ডস বর্তমানে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ওয়াইকম্ব নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন। এর আগে তিনি ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মধ্য ইংল্যান্ডের বিভিন্ন আসন থেকে নির্বাচন করে আইনপ্রণেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে বাংলাদেশে তদন্ত শুরুর পর সমালোচনার মুখেপদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন তিনি। মন্ত্রী হিসেবে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রশ্নের মুখে পড়েন টিউলিপ সিদ্দিকি। অবশেষে মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন টিউলিপ। প্রধানমন্ত্রী স্টারমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। আরটিভি/কেএইচ
টিউলিপের পদত্যাগপত্রের জবাবে যা লিখেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী 
পদত্যাগপত্রে যা লিখেছেন টিউলিপ সিদ্দিক
এবার টিউলিপকে দায়িত্ব ছাড়ার আহ্বান ব্রিটিশ দুর্নীতিবিরোধী জোটের 
তদন্ত সাপেক্ষে টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
টিউলিপের পর যুক্তরাজ্যে এবার আলোচনায় সালমানপুত্র শায়ান 
এবার যুক্তরাজ্যে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বন্ধু শায়ান ফজলুর রহমান। দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ব্যাপক চাপের মুখে থাকা টিউলিপ সিদ্দিকের পর শায়ান ফজলুর রহমানের নাম সংবাদমাধ্যমে আসায় রীতিমতো তোলপাড় চলছে।  ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শায়ান ফজলুর রহমান ব্রিটিশ রাজার হাত ধরে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা ‘ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট’র উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। তিনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের ছেলে। অন্যদিকে, টিউলিপ সিদ্দিক হলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। তবে শায়ানের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে শায়ানের জন্ম। এই সূত্রে তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। তিনি কিংবা তার স্ত্রী কখনো কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হননি। সালমান এফ রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) শায়ান ও স্ত্র্রী শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্ধ করেছে। শায়ান এক সময় আইএফআইসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠনে তিনি পরিচালক পদও হারান। ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শায়ান ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের ‘পারিবারিক বন্ধু’। তিনি বাংলাদেশের ‘ধনকুবের’ সালমান এফ রহমানের ছেলে। টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা লন্ডনে এলে শায়ানের ১৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বাড়িতে ‘বিনাভাড়ায়’ থাকতেন। শায়ান এক সময় তার বাবার নিয়ন্ত্রণে থাকা বেক্সিমকো গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের ওয়েবসাইটে এখনো তার সেই পরিচয়ই দেখানো হচ্ছে। ডেইলি মেইল জানায়, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরও ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন শায়ান। তবে এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট বলেছে, আমরা শায়ানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে অবগত। আমরা বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছি।  আরটিভি/কেএইচ
টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি বিরোধীদলীয় নেতার
যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ। রোববার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রিসভার সদস্য এবং তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। কিন্তু তার জন্মভূমি বাংলাদেশেই এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যেখানে তিনি এবং পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, নিজ খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের উপহারের ফ্ল্যাটে থাকা নিয়ে বিতর্ক চলছে তাকে নিয়ে।  বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা কেমি ব্যাডেনোচ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া পোস্টে কনজারভেটিভ পার্টির এ নেতা বলেছেন: কেয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে। পোস্টে তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন এবং তিনি নিজেকেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন। ব্যাডেনোচ বলেন, সরকার যে আর্থিক সমস্যাগুলো তৈরি করেছে, তা মোকাবিলায় মনোনিবেশ করা উচিত হলেও টিউলিপ সিদ্দিক সেই কাজে মনোনিবেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছেন। আর এখন বাংলাদেশ সরকারও শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে তার যোগসূত্র নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এছাড়া সম্প্রতি টোরি এমপিরাও টিউলিপের পদত্যাগ দাবি করেছেন। ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা টিউলিপের উদ্দেশে বলেছেন, ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তিনি যেন ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার সম্পত্তির লেনদেনের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এবং ব্যাখ্যা করতে হবে আসলে কী ঘটেছে এবং কেন? যদি তিনি তা না করেন, তবে মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন না। টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য কোনও ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা একটি চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, ‘আমি কোনও ভুল করিনি।’ এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের উপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বলেছেন, টিউলিপকে তার পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত তালিকা নিয়ে যে খবর চাউর হয়েছে তা ‘সম্পূর্ণ অসত্য’।  আরটিভি/এসএইচএম/এআর
লন্ডনের পার্লি রাজা ও রানিরা
লন্ডনে পার্লি রাজা ও রানিদের ঐতিহ্য ১৮৭৫ সাল থেকে। তারা লন্ডনের বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন। ভালো কাজের জন্য তারা তহবিল সংগ্রহ করেন। তাদের মধ্যে উত্তরসূরি নির্বাচনেরও চল আছে। বছরে একটি দিন ফসল কাটার উৎসব হিসেবে পালন করেন পার্লিরা। সেদিন তারা পার্লি নকশার পোশাক পরে গান, নাচ করেন। পার্লি রানি ক্যাটি বার্নস বলেন, অনেক মানুষ আছেন যারা জানেন না, পার্লিরা আছেন। তারা আমাদের এখানে দেখতে পান এবং আমাদের সম্পর্কে জানতে পেরে তারা খুব আনন্দিত হন। লন্ডনের শ্রমিক শ্রেণির আইকন হলেন পার্লিরা। উনিশ শতকে নকশা করা স্যুট পরে তারা দরিদ্রদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন। আজও তারা স্থানীয় দাতব্য সংস্থার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। পার্লিরা লন্ডনের বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন। রাজপরিবারের মতো তারাও উত্তরসূরি ঠিক করতে পারেন। অনেকদিন ধরে অর্থ তোলার রেকর্ড আছে ক্লাইভ বেনেটের। তিনি পার্লি সংস্কৃতি খুব ভালোভাবে তুলে ধরেন। পুরনো লন্ডনের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পারেন তিনি। ক্লাইভ বলেন, অনেকে বলেন এটা গোপন ভাষা। পুলিশ যদি আপনাকে ধরতে আসে তাহলে তাদের ফাঁকি দেওয়ার জন্য এটা বলা হয়। যেমন- কেইন অ্যান্ড এইবল, মানে হচ্ছে টেবিল, জ্যাক দ্য রিপারবলতে বোঝায় স্ট্রিপার। আর কাপ্পা অফ রোজি লি মানে হচ্ছে চা। ফসল কাটার উৎসবে ফেরা যাক। পার্লিরা অর্থ সংগ্রহ করছেন। এভাবে তারা তহবিল সংগ্রহের আরো একটি সফল বছর পার করছেন। উৎসবের এক দর্শক বলেন, সবচেয়ে ভালো বিষয় হচ্ছে, তরুণরা ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছে। তারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে প্রস্তুত হচ্ছে। সেটা না হলে এসব পুরনো রীতি ও গান, এবং আজ আমরা যা শুনছি সব একদিন হারিয়ে যাবে। বিষয়টা লজ্জার হবে। পার্লিদের সংখ্যা কমে গেছে। আগে লন্ডনে তাদের সংখ্যা কয়েকশ ছিল। এখন আছে কয়েক ডজন। পার্লি রাজা জন ডাওয়েল বলেন, লন্ডনের ছেলে হিসেবে এটা আমার ঐতিহ্যের একটি অংশ- ককনি বয়। লন্ডনের বাস, লন্ডনের ট্যাক্সি, লন্ডনের একজন পুলিশ কর্মকর্তার মতো আইকনিক একটা বিষয় হচ্ছে পার্লি রাজা ও রানি। আমাদের এই ঐতিহ্যটা ধরে রাখতে হবে। তা না হলে আমরা এটা হারিয়ে ফেলবো। পার্লিদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তাদের তরুণ সদস্যদের উপর। যেমন পার্লি রানি হতে এভি ওয়ালড্রেন দুই বছরের প্রশিক্ষণ শুরু করেছে। সামাজিক মাধ্যমে তিনি তার প্রশিক্ষণের বিষয় তুলে ধরছেন। এভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছানোর আশা করছেন তিনি। এভি বলেন, পার্লিরা বিলুপ্ত হলে আমার হৃদয় ভেঙে যাবে। আমার মনে হয় পার্লিরা এখন যেমন আছে সেভাবে এগিয়ে যাবে। তবে কিছু জিনিস আধুনিক করতে হবে। যেমন ইনস্টাগ্রাম ও সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় হতে হবে। সেই সঙ্গে পুরনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। পার্লি রাজা ও রানিরা পার্লি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক৷ তারা এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। আরটিভি/এএইচ
দ্য টেলিগ্রাফ / টিউলিপের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিককে হুমকির অভিযোগ
শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন করায় এক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে। ওই সময় সেই সাংবাদিক অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করতে ছাড়েননি তিনি। শেখ পরিবারের দুর্নীতির সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকির নাম উঠে আসার পর আবারও ২০১৭ সালের সেই ভিডিওটি সামনে চলে আসছে। ভিডিওটি পোস্ট করে শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সংবাদ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির একজন সদস্য ও বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। তিনি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। ভিডিওতে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে নিখোঁজ হওয়া ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আইনজীবী ব্যারিস্টার আরমানের মামলা সম্পর্কে টিউলিপকে জিজ্ঞাসা করেন ওই সাংবাদিক। জবাবে সাংবাদিকের উদ্দেশে টিউলিপকে বলতে শোনা যায়, ‘খুব সতর্ক থাকুন।’ টিউলিপ হুমকির সুরে বলেন, আমি হ্যাম্পস্টেড এবং কিলবার্নের একজন লেবার এমপি। আমি একজন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য। খুব সাবধান থাকবেন। আমি বাংলাদেশি নই এবং আপনি যার কথা বলছেন, তাদের মামলা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। আমার বক্তব্য এখানেই শেষ। শেষের দিকে টিউলিপ অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিক ও প্রডিউসার ডেইজি আইলিফকে বলেন, এখানে আসার জন্য ধন্যবাদ ডেইজি। আশা করি, তোমার সন্তান ভালোভাবে হবে। কারণ, প্রসব খুবই কঠিন। দেখা হবে। এরপরই তার একজন সহকারী ক্যামেরার সামনে হাত দেন এবং সাংবাদিকদের ভিডিও ধারণ বন্ধ করতে বলেন। ওই সহকারী সাংবাদিকদের প্রশ্নগুলোকে অপ্রাসঙ্গিক ও বেপরোয়া মন্তব্য করে সাংবাদিকদের টিউলিপের কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। চ্যানেল-৪ নিউজের প্রধান সংবাদদাতা অ্যালেক্স থমসন টিউলিপ সিদ্দিকের মন্তব্যকে আপাতদৃষ্টিতে হুমকিস্বরূপ বলে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে এমপি পরে স্বীকার করেছেন যে তার কথা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক আইলিফ গত সপ্তাহে এক্সে একটি পোস্টে তার অভিজ্ঞতা পুনরায় শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, যখন আমি ২০১৭ সালে টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশের সঙ্গে তার রাজনৈতিক যোগসূত্র সম্পর্কে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি, তখন তিনি আমাকে ‘সতর্ক থাকতে’ বলেন। এ ঘটনার পর অফকম, পুলিশ এবং আমার বসদের কাছে অভিযোগ করেন এমপি। যদিও কোনো অভিযোগ টিকেনি। কারণ, সৌভাগ্যবশত আসলে যা ঘটেছিল তা ক্যামেরায় রেকর্ড করা হয়েছে। যদি তা না হতো তাহলে তিনি আমার চাকরি খোয়াতেন। এখানেই শেষ নয়। সাংবাদিকের চাকরি খোয়াতে না পেরে বসে থাকেননি টিউলিপ। তিনি পরবর্তীতে তার ক্ষমতা ও প্রশাসন ব্যবহার করে আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করান বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, নিখোঁজ আরমানের ব্যাপারে ২০১৭ সালে শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপকে প্রশ্ন করেছিলেন ব্রিটিশ গণমাধ্যম চ্যানেল-৪ এর এক সাংবাদিক। টিউলিপ যেহেতু ব্রিটেনের নাগরিক ও এমপি ছিলেন; তাই ওই সাংবাদিক মনে করেছিলেন, হাসিনার কাছে একটি ফোন করলে আরমান হয়তো মুক্তি পেতে পারেন। তবে ওই সাংবাদিকের প্রশ্নে ক্ষিপ্ত হন টিউলিপ। অন্য এক প্রতিবেদনে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে ব্যারিস্টার আরমান বলেন, ইন্টারভিউর পর চ্যানেল-৪ প্রতিবেদনটি প্রচার করার কয়েক ঘণ্টা আগেই আইনশৃঙ্খলাবাহিনী আমার বাড়িতে যায়। আমার স্ত্রীকে চুপ থাকতে বলে। বাইরের দেশের কার কার সঙ্গে আমার স্ত্রীর যোগাযোগ আছে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করে। তাকে এমনভাবে হেনস্তা করে যেন কোনো সন্ত্রাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ব্যারিস্টার আরমান আরও বলেন, আমার ব্যাপারে টিউলিপকে জিজ্ঞেস করার বিষয়টি কোনোভাবে যেন শেখ পরিবারকে আঘাত করেছিল। এ কারণে প্রশাসন থেকে এমন আচরণ করা হয়েছিল। আরটিভি/এএইচ/এস
যুক্তরাজ্য সরকারে বিকল্প খোঁজা হচ্ছে টিউলিপের, দাবি দ্য টাইমসের
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মিত্রদের কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে দাবি করেছে দ্য টাইমস। এমনকি সরকারে তার বিকল্প খোঁজা হচ্ছে বলেও দাবি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির।   শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সূত্রদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এমন দাবি করেছে সংবাদমাধ্যমটি। এমনকি টিউলিপের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে কয়েকজন প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত তালিকাও তৈরি হয়ে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে এতে।  কিয়ার স্টারমার অবশ্য জানিয়েছেন, টিউলিপের প্রতি তার সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। সেইসঙ্গে ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্রও জানিয়েছেন, টিউলিপের বিকল্প প্রার্থীদের তালিকা তৈরির বিষয়টি ‘একেবারেই সত্য নয়।’ এ ছাড়া সম্প্রতি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক নিজেও। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অব মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লউরি ম্যাগনাসকে চিঠি লিখেছেন টিউলিপ। চিঠিতে মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন তিনি।  তবে দ্য টাইমস দাবি করছে, আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে টিউলিপের বিকল্প কে হতে পারেন, তা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সূত্র।  টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া একাধিক সম্পত্তিতে বসবাস করেছেন। এদিকে ইতোমধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সাত সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। পাশাপাশি, রুশ অর্থায়নে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দ্য টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিউলিপের বিকল্প হিসেবে যাদের নাম এসেছে তারা হলেন অর্থমন্ত্রী র‍্যাচেল রিভসের দুই সহযোগী অ্যালিস্টেয়ার স্ট্র্যাথার্ন ও ইমোজেন ওয়াকার। আরও বিবেচনা করা হচ্ছে মন্ত্রিসভার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ব্যক্তিগত সচিব (পিপিএস) ক্যালাম অ্যান্ডারসন, কনিষ্ক নারায়ণ, পরিবেশ বিভাগের পিপিএস জশ সায়মন্স ও র‍্যাচেল ব্লেককেও। শোনা গেছে অ্যাটর্নি জেনারেল লুসি রিগবি, মন্ত্রিসভার সহযোগী ও অর্থনীতিবিদ টরস্টেন বেলের নামও। লেবার পার্টির এক সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য টাইমস আরও দাবি করেছে, টিউলিপ তার নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে এটাই ইঙ্গিত করছেন যে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে সম্মানজনক বিদায়ের পথ খুঁজছেন। সম্প্রতি ব্রিটেনের সানডে টাইমসের এক অনুসন্ধানে জানা যায়, টিউলিপকে লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় সাত লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক আবাসন ব্যবসায়ী। একইভাবে তার বোন আজমিনা সাড়ে ছয় লাখ পাউন্ডের একটি ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন। টিউলিপ নিজেও ওই ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন। এসব ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় এখন চাপের মুখে পড়েছেন টিউলিপ। অবশ্য লন্ডনে ফ্ল্যাট উপহার নিয়ে টিউলিপ কোনো অন্যায় করেনি বলে দাবি করেছেন তার একজন মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, টিউলিপের ওই ফ্ল্যাট পাওয়া বা অন্য কোনো সম্পত্তি অর্জনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতার খবরটি ভুল। লউরি ম্যাগনাসকে দেওয়া টিউলিপ সিদ্দিকও লিখেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে আমি গণমাধ্যমে খবরের বিষয়বস্তু হয়েছি। আমার আর্থিক বিষয় ও বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের যোগসূত্র নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, যার বেশিরভাগই ভুল। তিনি আরও লিখেছেন, আমি স্পষ্টভাবে বলছি, কোনো ভুল করিনি। তবে সন্দেহ এড়ানোর জন্য আমি চাই, আপনি স্বাধীনভাবে এগুলো তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করুন। আরটিভি/এসএইচএম/এস  
স্টারমারের নির্বাচনী প্রচারণায়ও অংশ নিয়েছিল আওয়ামী লীগ
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের খালা তথা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দলের সদস্যরা। বুধবার (৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার প্রতিনিধিত্বকারী কর্মীরা ছায়া মন্ত্রিসভায় থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রীর জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন। বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি সাবেক প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০২৪ সালের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। তার শাসনামলে, বিরোধীদের আক্রমণ, গ্রেপ্তার এবং গোপনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের একটি যুক্তরাজ্য শাখা রয়েছে, যার সদস্যরা অতীতে টিউলিপ সিদ্দিকের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। এতে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আহাদ চৌধুরীসহ বিশিষ্ট কর্মীরা স্যার কিয়ের স্টারমারের জন্য তার হলবর্ন এবং সেন্ট প্যানক্রাস নির্বাচনী এলাকায় প্রচার করেছিলেন, যেটি আবার টিউলিপ সিদ্দিকের হ্যাম্পস্টেড আসনের পার্শ্ববর্তী এলাকা। আওয়ামী লীগের কর্মীরা দরজায় দরজায় স্টারমারের নাম সম্বলিত লেবার লিফলেট বিলি করেছিলেন এবং তার পার্টিকে সমর্থন করে প্ল্যাকার্ড বহন করেছিলেন। তারা একই দিনে টিউলিপ সিদ্দিকের হয়েও প্রচারণা চালিয়েছেন। প্রচারণা দলের মধ্যে এমন কর্মীও অন্তর্ভুক্ত ছিল যারা প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে নিজেদের দাবি করে এসেছে। দলটির সদস্যরা জানিয়েছেন, তহবিল সংগ্রহ অভিযানের সময় একটি রেস্তোরাঁয় আবদুল আহাদ চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন স্টারমার। গত বছরের জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের দিন তিনি স্টারমারের সাথে করমর্দনের একটি ছবিও পোস্ট করেছিলেন, যার ক্যাপশন ছিল- ‘ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার।’ দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, ছবিটি কখন তোলা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। ২০১৯ সালের ইলফোর্ডে লেবার প্রার্থী স্যাম টেরির পক্ষে প্রচারের সময় কিয়ের স্টারমার আব্দুল শহীদ শেখের সঙ্গেও পোজ দিয়েছেন, যিনি নিজেকে আবার আওয়ামী লীগের জনসংযোগ কর্মী বলে বর্ণনা করেছেন। সেই একই কর্মী এখন উপপ্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনারের সঙ্গেও দেখা করেছেন। আওয়ামী লীগের সদস্যরা একাধিকবার সিদ্দিকের পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন। আবদুল আহাদ চৌধুরী, শাহ শামীম আহমেদ, যিনি নিজেকে অফিস সেক্রেটারি হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক ২০১৯ সালে হ্যাম্পস্টেড এবং কিলবার্ন -এর এমপির পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সদস্যরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টিউলিপ সিদ্দিকের প্রতি জনসমর্থন প্রকাশ করলেও, তারপর থেকে তার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। আওয়ামী লীগের সাথে লেবারের সম্পর্ক নিয়ে নতুন প্রশ্ন সামনে এসেছে যখন বাংলাদেশের তদন্তকারীরা টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাংকের বিশদ তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছেন। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা আর্থিক অভিযোগে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপের ওপর চাপ বাড়াতে পারে।  এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং এজেন্সি দেশের প্রধান ব্যাংকগুলোকে তার অ্যাকাউন্ট ও লেনদেনের তথ্য সরবরাহ করতে বলেছে। দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন একটি তদন্ত শুরু করেছে। টিউলিপ সিদ্দিক অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পর্যন্ত তার পরিবারকে আত্মসাৎ করতে সহায়তা করেছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও টিউলিপ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি লন্ডনে তার খালার সমর্থকদের সঙ্গে যুক্ত সম্পত্তি ব্যবহার করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের নীতি উপদেষ্টাদের কাছেও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।বাংলাদেশ সফরের সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে তার একান্ত বৈঠক নিয়েও তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছেন স্টারমার। ২০১৬ সালে ঢাকা ও সিলেটে সাত দিনের সফরটি, যার জন্য খরচ হয়েছিল ১২০০ পাউন্ড, আয়োজন করেছিল সিদ্দিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত একটি গ্রুপ ‘লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’। দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, বাংলাদেশের মিডিয়ার ছবি মোতাবেক স্টারমারকে আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সাথে দেখা গেছে, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালে শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিপরিষদের তিন মন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন। যদিও এ বিষয়ে লেবার পার্টির তরফে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। আরটিভি/এসএপি
ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারির পর প্রথম প্রকাশ্যে টিউলিপ
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) টিউলিপ সিদ্দিককে লন্ডনে একটি ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক আবাসন ব্যবসায়ী। অথচ দুই বছর আগে টিউলিপ দাবি করেছিলেন তার বাবা-মা তাকে এই ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন। এমন সংবাদ প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেছে টিউলিপকে। সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিসে যেতে দেখা গেছে। যুক্তরাজ্যের সাপ্তাহিক পত্রিকা দ্য মেইল অন সানডের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপকে দুই বছর আগে একাধিকবার প্রশ্ন করা হয় যে তিনি কীভাবে দুই বেডরুমের ওই ফ্ল্যাট পেয়েছেন। জবাবে ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছিলেন তিনি। এই প্রশ্ন তোলায় পত্রিকাটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। এরপর আর এটি প্রকাশ করা হয়নি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ‘মিনিস্ট্রিয়াল কোড’ উপদেষ্টা এখন তদন্ত করবেন, টিউলিপ ফ্ল্যাট নিয়ে ডেইলি মেইলের সঙ্গে মিথ্যাচার করেছিলেন কি না। ব্যাপক চাপে পড়ার পর টিউলিপ ফ্ল্যাট নিয়ে ডেইলি মেইলকে যে তথ্য দিয়েছিলেন সে অবস্থান থেকে সরে এসেছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। টিউলিপের রাজনৈতিক দল লেবার পার্টির একটি সূত্রও নিশ্চিত করেছে, টিউলিপের বাবা-মা তাকে ফ্ল্যাটটি কিনে দেননি। এটি আসলে ‘কৃতজ্ঞতার’ অংশ তার স্বৈরাচার খালার সহযোগীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছেন। লন্ডনের বিতর্কিত ওই ফ্ল্যাটটি নিয়ে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের এমপি টিউলিপ যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থার (এনসিএ) তদন্তের মুখেও পড়তে পারেন বলে জানিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। গত ৫ জানুয়ারি ব্রিটেনের বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা টিউলিপের উদ্দেশে বলেছেন, গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তিনি যেন পদত্যাগ করেন। গ্রেটার লন্ডনের হ্যারো ইস্টের এমপি বব ব্ল্যাকমান বলেন, ওই সম্পত্তির ব্যাপারে টিউলিপ আগে যা বলেছিলেন সে ব্যাপারে অবস্থান পরিস্কার করা উচিত। এটা না করলে তিনি মন্ত্রী থাকতে পারেন না। গত শনিবার ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ আবাসন ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিবের দুর্দিনে তাকে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন টিউলিপের মা-বাবা। তাই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নিজের মালিকানায় থাকা ‘একটি সম্পত্তি’ তিনি টিউলিপকে দিয়েছিলেন। আরটিভি/একে-টি