• ঢাকা সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা আজহার গ্রেপ্তার 
টাঙ্গাইলে হত্যা মামলায় চাচি-ভাতিজার যাবজ্জীবন 
টাঙ্গাইলের বাসাইলে ঝর্না রানী দাস নামে এক নারীকে হত্যা করে মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখার দায়ে চাচি-ভাতিজাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া দণ্ডিত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক আফরোজা বেগম এ রায় দেন।   দণ্ডিতরা হচ্ছেন- উপজেলার বাসাইল পূর্বপাড়া গ্রামের শাহাদত বেপারীর স্ত্রী মনোনয়ারা আক্তার (৩০) এবং মজিবর বেপারীর ছেলে উজ্জ্বল ইসলাম (২৭)। তারা সম্পর্কে চাচি-ভাতিজা।   আদালতের নাজির লিটন মজুমদার জানান, ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর নিহত ঝর্না রানী পাওয়া টাকা চাওয়ার জন্য একই এলাকার মনোয়ারা আক্তারের বাড়িতে যান। এতে মনোয়ারার সঙ্গে ঝর্না রানী দাসের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় মনোয়ারার ভাতিজা উজ্জ্বল এসে ঝর্না রানীকে মনোয়ারার ঘরের ভেতরে নিয়ে দুজনে মিলে গলায় ফিতা পেঁচিয়ে এবং বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ গুম করার জন্য মনোয়ারার ঘরের ভেতর মাটি খুঁড়ে গর্ত করে পুঁতে রাখে। পরদিন ২৯ অক্টোবর নিহতের স্বামী সুনীল কুমার দাস বাদী হয়ে বাসাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ মনোয়ারা ও তার ভাতিজা উজ্জলকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃতরা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আর মরদেহ গুম করার জন্য মাটিতে পুঁতে রাখার কথা স্বীকার করেন। পরে পুলিশ মনোয়ারার ঘরের ভেতর মাটিতে পুঁতে রাখা ঝর্ণা রানী দাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রায় ঘোষণার পর বিচারক দণ্ডিত চাচি-ভাতিজাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আরটিভি/এমকে
সরকারকে বিএনপি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে: শামসুজ্জামান দুদু 
আওয়ামী লীগের মধ্যে ভদ্রলোকের সংখ্যা খুবই কম: টুকু
টাঙ্গাইলে যৌথবাহিনীর অভিযান, ১০৪ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার
সাবেক কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাকের ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
প্রাকৃতিক বনায়নে আর কোন সামাজিক বনায়ন হবে না: সৈয়দা রিজওয়ানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রাকৃতিক বনে সামাজিক বনায়ন থাকবেনা, প্রাকৃতিক বনে বন থাকবে। আপনি যদি সামাজিক বনায়ন করেন, তাহলে চুক্তি স্বাক্ষর করেন উপকারভোগীদের সঙ্গে। এরপর সামাজিক বনায়নের গাছগুলো কেটে উপকারভোগীদের মাঝে পয়সা বিতরণ করে দেন। বনবিভাগের প্রাথমিক দায়িত্ব পয়সা বিতরণ করা না। তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে প্রাকৃতিক বনকে রক্ষা করা। প্রাকৃতিক বনায়নে আর কোন সামাজিক বনায়ন হবে না।  বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলে বুরো বাংলাদেশ মিলনাতনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক পরিবেশ সন্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। এ সময় বিদ্যুৎ অপচয় রোধের বিষয়ে তিনি বলেন, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন দিনের বেলায় সকল লাইট বন্ধ করে দিয়েছি। এই বিদ্যুৎ কোথা থেকে উৎপাদন হয়, কিভাবে হয় তা জানতে হবে। আমরা কেন দিনের বেলায় বিদ্যুৎ অপচয় করবো। প্রাকৃতিক আলো থাকার পরেও কেন দিনের বেলায় লাইট জ্বালিয়ে প্রগ্রাম করব। তিনি বলেন, ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদী উদ্ধার করা যাচ্ছে না। নদীর নিচে তিন থেকে চার আস্তরের পলিথিন পড়ে আছে। এ কারণে সেখানে ড্রেজিং করা সম্ভব না। তাই আমাদের সকলের উচিৎ পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করা। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদুল হক, আসপাড়া পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক লায়ন এম এ রশীদ, রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন। সভাপতিত্ব করেন বুরো বাংলাদেশের এইচআরডি অ্যান্ড আইসিটি ডিরেক্টর অপারেশন্স ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ফারমিনা হোসেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সবুজ পৃথিবীর সবুজ পৃথিবীর নির্বাহী পরিচালক সহিদ মাহমুদ। আরটিভি/এমকে
টাঙ্গাইলে বাসচাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত 
টাঙ্গাইলে বাসচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।  সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আশেপুর বাইপাস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।  প্রাথমিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের পুলিশ বক্সে দায়িত্বরত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, বিকেলে দুই মোটরসাইকেল আরোহী আশেকপুর বাইপাস এলাকায় মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উত্তরবঙ্গগামী একতা পরিবহনের একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন ও ঢাকায় নেওয়ার পথে আরেকজনের মৃত্যু হয়। বাসটি আটক করা গেলেও চালক ও সহকারী পলাতক রয়েছেন। আরটিভি/এমকে
টাঙ্গাইলে পুলিশ সুপারের মোবাইল ছিনতাই
টাঙ্গাইলে বাসার সামনে থেকে ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার মোহা. ইমামুর রশীদের মুঠোফোন ছিনতাই হয়েছে।  শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে শহরের ক্লাব রোডের সরকারি বাসার সামনে থেকে তার মুঠোফোনটি ছিনতাই করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।  বেলা পৌনে ১২টার দিকে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।  পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সকালে পুলিশ সুপার কবুতরের খোঁজে তার বাসার সামনে বের হন। পরে এক ছিনতাইকারী তার হাত থেকে মুঠোফোন নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।  তারা আরও জানান, ইতোপূর্বেও কয়েক দিন পরপর শহরের ক্লাব রোড, জেলা সদর রোড ও বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পাস থেকে ছিনতাই এর ঘটনা ঘটছে। সেসব ছিনতাই এর ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহাম্মেদ বলেন, যেহেতু অস্ত্র ঠেকিয়ে মুঠোফোন নেওয়া হয়নি তাই এটাকে ছিনতাই বলা যাবে না। এ বিষয়ে ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার মোহা. ইমামুর রশীদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। আরটিভি/এমকে
বৈষম্যের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: প্রধান বিচারপতি
সমাজে বিরাজমান অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সবাইকে সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। রোববার (১৩ অক্টোবর) টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কমপ্লেক্সের পূজা উদযাপন কমিটির কাছে পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তায় এ কথা বলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, আইন পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে ন্যায়ের পথে থেকে যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিরতিহীনভাবে কাজ করার মাধ্যমে সমাজে মানবাধিকার, শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সৈয়দ রেফাত আহমেদ আরও বলেন, আবহমানকাল থেকে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণে শারদোৎসব উদযাপনের সংস্কৃতি আমাদেরকে ভ্রাতৃত্ববোধ, বহুত্ববাদ, সহিষ্ণুতা ও একত্রে পথচলার শিক্ষা দেয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই উদাহরণ একদিকে যেমন আমাদেরকে ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার জন্য লড়াই করতে শেখায়। সামাজিক দায়িত্ববোধ তথা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অধিকারের সুরক্ষায় আমাদের যে প্রতিশ্রুতি তা নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের প্রয়াত রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির ঐতিহ্যবাহী পুজামণ্ডপসহ কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোমসসহ কুমুদিনী কমপ্লেক্সের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন তিনি। প্রধান বিচারপতি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইলের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ নাজিমুদ্দৌলা, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার খান, জেলা প্রশাসক শরীফা হক, পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব শরীফুল আলম ভূঁঞা ও স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন। আরটিভি/এমকে/এআর
নারী সেজে অভিনয় করতেন আইয়ুব, মরদেহ মিলল পরিত্যক্ত ঘরে
টাঙ্গাইলে গলায় পরনের কাপড় পেঁচানো অবস্থায় একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে আইয়ুব (৪৭) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  নিহত আইয়ুব আলী সদর উপজেলার ভবানীপুর পাতুলী এলাকার মৃত নছিম মিয়ার ছেলে। তিনি বিভিন্ন স্থানে নারী সেজে যাত্রাপালায় অভিনয় করতেন বলে পরিবারের সদস্য জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, রোববার সকালে নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার পেছনের পরিত্যক্ত ঘর থেকে গলায় পরনের কাপড় পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা৷ খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করে৷ রাতে কোনো এক সময় তাকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রাখা হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ।  নিহতের ছেলে অনিক মিয়া বলেন, ‘আমার বাবা শনিবার সন্ধ্যায় কাজের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। আজ সকালে আমার বাবার মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে হাসপাতালে আসি৷’  এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানবীর আহম্মেদ বলেন, ‘নিহতের মুখে আঙুলের ছাপ ও গলায় পরনের কাপড় পেঁচানো অবস্থায় রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যা করে পরিত্যক্ত ঘরে মরদেহ ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা।’ আরটিভি/এমকে
উপকরণের দাম বাড়লেও পারিশ্রমিক বাড়েনি
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী ৯ অক্টোবর মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। রোববার (১৩ অক্টোবর) বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গাপূজা।  বুধবার (২ অক্টোবর) মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের আগমন শুরু হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের মৃৎশিল্পীরা। হাতের নিপুণ ছোঁয়া ও রং-তুলির আঁচড়ে মনের মাধুরি দিয়ে গড়ে তুলছেন দেবী দুর্গাকে। এ ছাড়া কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করছেন শিল্পীরা। সরেজমিনে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের তারটিয়া পাল পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমাশিল্পীদের কেউ প্রতিমা তৈরিতে আবার কেউবা রং করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। দিনরাত এর পেছনে সময় ব্যয় করছেন তারা। প্রতিমাশিল্পীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, আগের চেয়ে কাজ বেড়েছে। তবে সেই তুলনায় বাড়েনি পারিশ্রমিক। এছাড়াও  প্রতিমা তৈরির উপকরণের দামও চড়া। উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এঁটেল মাটি, বাঁশ, কাঠ, খড়, পাটের আঁশ, যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ দাম গুণতে হচ্ছে। প্রতিমা শিল্পী সুমন পাল বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার ভিন্ন রকম পরিবেশ চলছে। এ কারণে আমরা সেভাবে কাজ করতে পারছি না। প্রথমে কাজ ছিল না। এখন কিছু কাজ আসছে। গতবছর ১০টা মণ্ডপের কাজ করেছি। এবার ছয়টি বানিয়েছি। মজুরি অর্ধেকে নেমেছে। বাপ-দাদার পেশা টিকিয়ে রাখতেই আমরা এ কাজ করে যাচ্ছি।  প্রতিমাশিল্পী গোবিন্দ পাল বলেন, আমি দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসছি। মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছি। রঙের কাজও  শেষ পর্যায়ে। এখন প্রতিমাগুলোকে অলংকার দিয়ে সাজিয়ে পূজারিদের বুঝিয়ে দিয়ে দিব। তিনি আরও বলেন, আমরা আগে যে বাঁশ ২০০-২৫০ টাকায় কিনতাম, এখন তা ৫০- ৬৫০ টাকায় কিনতে হয়। আগে তিন হাজার টাকার খড় দিয়ে একটা মণ্ডবের প্রতিমা হয়ে যেত, আর এখন পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার খড় লাগে। খড়ের পরিমাণ একই কিন্তু দাম দ্বিগুণ। আগে যে প্রতিমা তৈরিতে খরচ হতো ৪০-৫০ হাজার টাকা। তা এখন খরচ হয় এক লাখ টাকার উপরে।  প্রতিমাশিল্পী সন্তোষ পাল বলেন, বংশপরম্পরায় আমি এই মৃৎশিল্পের কারিগর। আমার বাপ-দাদারা এই কাজ করে গেছেন। এই কাজ ছাড়া অন্য কোনও কাজও তেমন পারি না। বছরের এই সময়ে আমাদের খুব ব্যস্ততা বেড়ে যায়। আর বাকি সময় টুকটাক কাজ করি।   তিনি আরও বলেন, গতবছর প্রতিমা ১২টি তৈরি করেছিলাম। এবার পরিস্থিতি তেমন ভালো না দেখে ছয়টি প্রতিমা তৈরি করেছি। আমরা ভয়ে ছিলাম এবার পূজা হবে কি না। যে উপকরণ গত বছর ১২ হাজার টাকায় কিনেছি, সেটা এবার ২৫ হাজার। যে রঙ ১৫০ টাকায় কিনতাম, সেটা এখন ২০০-২৫০ টাকা। সেই হারে পারিশ্রমিক যদি বাড়তো, তাহলে পরিবার নিয়ে কষ্টে জীবন যাপন করতে হতো না। কারিগর সজীব পাল বলেন, প্রতিমার কাজ শেষ করেছি চারদিন হলো। এখন চলছে রঙ ও সাজসজ্জার কাজ। অনেকে তাদের পছন্দের শাড়ি দিয়ে দেবী দুর্গাকে সাজাতে নামিদামি রং-বেরঙের শাড়ি, অলংকার ও মাথার মুকুট দিয়ে গিয়েছে। আমরা এখন আস্তে আস্তে সেগুলোর কাজ করতেছি। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম বেড়েছে। প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত এক বস্তা মাটির ৫০ কেজির দাম দুই হাজার টাকার সঙ্গে পরিবহন খরচ আছে। কিন্তু আমাদের পারিশ্রমিক বাড়েনি। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ গুণ ঝন্টু বলেন, ইতিমধ্যে পূজা উদযাপন কমিটি ও সর্বদলীয় লোকদের সাথে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের মিটিং হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে আমাদের দূর্গা উৎসব সুন্দর ও সার্থক হবে আশা করি। এর মধ্যে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতেছে সারাদেশে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য। কিছু কতিপয় দুষ্কৃতিকারী আমাদের কিছুটা ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। আমরা সমাজের সব লোক নিয়ে সঙ্গবদ্ধভাবে পাহাড়ার মাধ্যমে আমাদের দূর্গা পূজা যাতে সুন্দর ও সার্থক হয় সেটা আমরা করব।  টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, পূজা উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। পুলিশ সুপারের অফিসে কন্ট্রোল রুম করতে যাচ্ছি। ১২৫ জনের মতো স্ট্রাইকিং পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। মোটরসাইকেলে প্রায় ৪৬৩ জন বিভিন্ন ডিউটিতে থাকবে। পুলিশের ২৮টি পিকআপ গাড়িতে ১১২ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়াও পুলিশের একটি টিম সাদা পোশাকে নজরদারি করবে। তিনি আরও বলেন, আমরা সিসিক্যামেরা স্থাপন করবো। ডোনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছি। প্রত্যেকটা জায়গায় ছোট ছোট কন্ট্রোল রুম থাকবে। ধর্মীয় উৎসবে নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে যত ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন আমরা সর্বোচ্চ পরিমাণ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা আশা করি, জেলায় শান্তিপূর্ণ ও সুন্দরভাবে পূজা উদযাপন করতে পারবো। আরটিভি/এমকে